ঢাকা-ওয়াশিংটন : রোহিঙ্গা, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা

আগের সংবাদ

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি : শিক্ষার্থী পায়নি ২০০ প্রতিষ্ঠান

পরের সংবাদ

আলোচিত ওয়ান ইলেভেন আজ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আজ ১১ জানুয়ারি। ১৬ বছর আগে, ২০০৭ সালের এই দিনে আবির্ভাব ঘটেছিল কথিত ওয়ান ইলেভেন’র। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের একতরফা সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি দেশে জারি হয় জরুরি অবস্থা। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আবরণে গঠিত হয় সেনা নিয়ন্ত্রিত ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার’। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে পরবর্তীতে এটিকে ‘ওয়ান ইলেভেন’ হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়। দিনভরই চারদিকে ছিল নানা গুজব, গুঞ্জন। সার্বিক পরিস্থিতি ছিল থমথমে। ওইদিন কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক হয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির। তার আগে প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ দুপুর ১২টায় বৈঠক করেন আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সঙ্গে। এতে কমিটির সদস্যরা ছাড়াও সব আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকের পরপরই রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ বঙ্গভবনে তিন বাহিনী প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন। অন্যদিকে বিকাল সাড়ে ৪টায় উপদেষ্টা পরিষদের পূর্বনির্ধারিত বৈঠক বাতিল করা হয়। দু-একজন ছাড়া উপদেষ্টাদের প্রায় সবাই বঙ্গভবনে গিয়ে বৈঠক বাতিলের খবরে ফিরে আসেন।
বঙ্গভবনের বৈঠক শেষে বিমান বাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, পুলিশের মহাপরিদর্শক, র‌্যাব, বিডিআরসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানদের নিয়ে সেনাসদরে বৈঠক করেন সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ। রাত সাড়ে ৮টায় বঙ্গভবনে পুনরায় ডাকা হয় উপদেষ্টাদের। কোনো বৈঠক ছাড়াই উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে উপদেষ্টাদের অবহিত করা হয়। এসময় উপদেষ্টাদের সবাইকে পদত্যাগের অনুরোধ জানানো হয়। এরপর প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে সরে দাঁড়ান রাষ্ট্রপতি। একইসঙ্গে উপদেষ্টারাও পদত্যাগ করেন। পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফখরুদ্দীন আহমদকে। তিনি নতুন উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেন।
এসব নাটকীয় ঘটনা ও টানটান উত্তেজনা-উদ্বেগের মধ্যেই সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয় ‘অভ্যন্তরীণ গোলযোগে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক জীবন বিপন্ন এবং বিপদের সম্মুখীন হওয়ায় রাষ্ট্রপতি ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন’। প্রজ্ঞাপনে বলা হয় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে জরুরি অবস্থা কার্যকর হবে। একইসঙ্গে রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত ঢাকাসহ সব মহানগর এবং জেলা শহরে কারফিউ বলবৎ থাকার ঘোষণাও দেয়া হয়। এরপর নানা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রাত সাড়ে ১১টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ। ভাষণে তিনি বলেন, একইসঙ্গে দু’টি দায়িত্ব নেয়ার পর তাকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়। এই অবস্থায় সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথকে সুগম করতে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রাতে সরকারের তথ্য অধিদপ্তর থেকে মৌখিক নির্দেশনা দিয়ে সংবাদ মাধ্যমগুলোকে রাজনৈতিক সংবাদ ও সরকারের সমালোচনামূলক সংবাদ প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য বলা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ হয়ে যায় টিভি চ্যানেলের খবর ও টকশো।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়