ঢাকা-ওয়াশিংটন : রোহিঙ্গা, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা

আগের সংবাদ

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি : শিক্ষার্থী পায়নি ২০০ প্রতিষ্ঠান

পরের সংবাদ

আখের অভাবে বন্ধ নাটোর চিনিকল

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, নাটোর : ৫৬ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে নাটোর চিনি কলে চলতি মৌসুমের আখ মাড়াই কার্যক্রম শুরু হয়। তবে মাত্র ৩৭ দিনের মাথায় আখের অভাব দেখা দেয়। এর ফলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হতেই নাটোর চিনিকলটি বন্ধ হয়ে গেছে।
মূলত নাটোরের বড় বড় কলকারখানার মধ্যে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল ও নাটোর চিনিকল অন্যতম। নাটোর শহরতলীর হুগোলবাড়ীয়া এলাকায় অবস্থিত নাটোর চিনিকল। গত ২ ডিসেম্বর মিলটিতে এবারের আখ মাড়াই মৌসুম শুরু হয়। তবে আখের অভাবে গত শনিবার দুপুরে আখ মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
নাটোর চিনিকল সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৫৪ দিন কার্যদিবসে ৮০ হাজার টন আখ মাড়াই করে ৪ হাজার ৯৬০ টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। চিনি আহরণের হার ধরা হয় ৬ দশমিক ২০ ভাগ। গত ৩৭ দিনে এ চিনিকলে মাত্র ৫০ হাজার ৭৩৮ টন আখ মাড়াই করা হয়।
জানা গেছে, আখ সংকট ও চিনি উৎপাদনে অতিরিক্ত খরচ হওয়ায় নাটোর চিনিকলটি প্রায় প্রতিবছরই লোকসানের মুখে পড়ে। আগে প্রতি মণ আখের মূল্য ছিল ১৪০ টাকা। এ বছর ৪০ টাকা বৃদ্ধি করে প্রতি মণ ১৮০ টাকা নির্ধরণ করা হয়। কিন্তু এরপরেও চাষিরা তাদের আখ নাটোর চিনিকলে সরবরাহ করছে না। কারণ সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্য পাওয়ায় পাওয়ার ক্রাশার মালিকদের কাছে আখ বিক্রি করছেন চাষিরা। নাটোর চিনিকলে আখ না দেয়ার ব্যাপারে স্থানীয় শহিদুল ইসলাম, ফরহাদ হোসেন, আয়নাল হক, নাসির উদ্দিনসহ কয়েকজন চাষি জানান, লেবার খরচ, গাড়িভাড়া বাদ দিয়ে এক বিঘা জমির আখ বিক্রি করে পাওয়া যায় ৩০ হাজার টাকা। সে টাকা সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যায় না। আবার পুঁজি পেতেও দেরি হয়। ফলে অন্য আবাদ করা যায় না। এছাড়া অনেক সময় মিলের কর্মকর্তাদের দুর্ব্যবহারের শিকার হতে হয়।
অপরদিকে পাওয়ার ক্রাশার মালিক বা গুড় তৈরির মাড়াই কলে আখ দিলে এক বিঘা জমির আখ বিক্রি করে ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা পাওয়া যায়। কোনো লেবার খরচ ও গাড়ি ভাড়া লাগে না এবং নগদ মূল্য পাওয়া যায়। আখ কেটে অন্য আবাদ করা যায়। এসব কারণেই নাটোর চিনি কলে আখ সরবরাহ করেন না চাষিরা। নাটোর চিনিকলের মৌসুমী শ্রমিক দবির উদ্দিন জানান, চাষিরা মিলে পর্যাপ্ত আখ সরবরাহ করেনি। তাই ৩৭ দিন চলার পর আখ মাড়াই বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এখন পরিবার পরিজন নিয়ে তারা কষ্টে দিন কাটাবেন।
নাটোর চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) মো. ফেরদৌসুল আলম জানান, এই চিনিকল এলাকার বাইরে প্রচুর পরিমাণ অবৈধ পাওয়ার ক্রাশার রয়েছে। সেখানে নাটোর চিনিকল এলাকার আখগুলো যাচ্ছে। এসব আখ চাষিরা সরকারি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে গুড় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন। এতে আখ সংকটে পড়ে নাটোর চিনিকল। ফলে চাষিরা আখ সরবারহ না করায় এবার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়নি। অথচ আখ সরবরাহ থাকলে আরো তিন মাস মিল চালু থাকত এবং লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হতো।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়