সিলেট ব্যুরো : সিলেট জেলা দলের সাবেক ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় (শাটলার) ফারজানা হক মিলির (২৪) রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে গতকাল রবিবার সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলাটি দায়ের করেন মিলির বড় বোন রুমানা হক সোহেলী। মিলির স্বামী নূর আলমকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার বাদী রুমানা হক সিলেট নগরীর তেলিহাওড়ের সিলভ্যালি টাওয়ারের বাসিন্দা রিপন খানের স্ত্রী। গৃহবধূ মিলির স্বামী নূর আলম ওই একই টাওয়ারের বাসিন্দা।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, গত প্রায় চার বছর আগে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার কালিয়ারকাপন গ্রামের মো. আশকর আলীর ছেলে নূর আলমের সঙ্গে মিলির বিয়ে হয়। নূর আলম জুয়া ও নেশায় আসক্ত ছিল। নেশা ও জুয়ার টাকার জন্য প্রায়ই সে মিলিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। এমনি মারধর করে মিলির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিয়ে যায় নূর আলম। নগরীর জিন্দাবাজারের একটি জুয়েলার্সের দোকানে মিলির স্বর্ণালংকার বন্ধক রেখেও ঋণ নেয়। গত ৪ জানুয়ারি পাঁচ হাজার টাকা দিতে বললে মিলি অপরাগতা জানায়। তখন মিলিকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে তাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয় নূর আলম। নির্যাতন সইতে না পেরে গত ৫ জানুয়ারি বিকাল ৪টায় মিলি তার রুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দেয়। খবর পেয়ে রুমানা হক দরজা খোলার চেষ্টা করতে নূর আলমকে অনুরোধ করে। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেনি সে। একপর্যায়ে রুমানা হক তার স্বামী রিপন খানকে দিয়ে দরজা খোলার উদ্যোগ নেয়। এ সময় বাধা দেয় নূর আলম। এই অবস্থায় ৭ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে মিলির ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাওয়া যায়।
সিলেট কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবুল কাহের জানান, মিলির লাশ উদ্ধারের ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করেছেন রোমানা হক। মামলার একমাত্র আসামি মিলির স্বামী নূর আলমকে গত শনিবার লাশ উদ্ধারের দিনই আটক করা হয়। রবিবার ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।