প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য চাকরি মেলা

আগের সংবাদ

গুচ্ছের ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হয়নি : অনিশ্চয়তায় ২১ হাজার শিক্ষার্থী

পরের সংবাদ

চট্টগ্রামে বেড়েছে শীতের তীব্রতা : ঠাণ্ডাজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত শিশুরা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : বন্দরনগরীতে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। সকাল গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেলেও গত দুই দিন ধরে দেখা মেলেনি সূর্যের। অন্যদিকে বইছে ঠাণ্ডা বাতাস- সব মিলিয়ে শীতে জবুথবু নগরের মানুষ। শীতের তীব্রতায় বিপাকে পড়েছেন কর্মজীবীসহ সাধরাণ মানুষ। বিশেষ করে দৈনন্দিন খেটে খাওয়া মানুষের ভোগান্তি চরমে। তাপমাত্রা আরো কমবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। 
এদিকে শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগও। আক্রান্ত হচ্ছেন সব বয়সি মানুষ। বিশেষ করে শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশি। সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসা শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতের প্রকোপে বেড়েছে শিশু রোগীর সংখ্যা। 
চমেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ঘুরে দেখা যায়, গত দুই সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে শিশু রোগী ভর্তির সংখ্যা শয্যার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। যাদের বেশির ভাগেরই বয়স একদিন থেকে চার বছর পর্যন্ত। চলতি বছর শীতের আগে থেকে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। এছাড়া শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নবজাতকদের শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়াও দেখা দেয়।  এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. একেএম রেজাউল করিম বলেন, গরমের সময় তেমন সমস্যা না হলেও শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় নবজাতকদের শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়াসহ অন্যান্য শীতজনিত রোগ বেশি দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে শিশু রোগীরা জ¦র, সর্দি-কাশি, ডেঙ্গু আর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভর্তি হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, অভিভাবকদের অসচেতনতার কারণে নিউমোনিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। শিশুদের যাতে ঠাণ্ডা না লাগে সে ব্যাপারে অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে। নিউমোনিয়া ছাড়াও এ সময় শিশুদের হাঁপানি থেকে বাঁচাতে পর্যাপ্ত গরম কাপড়সহ হাতমোজা, পা মোজা পরিয়ে রাখতে হবে।
চট্টগ্রামের আবহাওয়া কার্যালয় জানিয়েছে, চট্টগ্রামে সপ্তাহজুড়ে সর্বনি¤œ গড় তাপমাত্রা ছিল ১৪ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চট্টগ্রামে তাপমাত্রা কম না থাকলেও বাতাসের তীব্রতা থাকায় শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি। আগামী দুই তিন দিনে তাপমাত্রা আরো ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে তাপমাত্রা ছিল ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সে সময় শীতের তীব্রতা তেমন ছিল না। এরপর থেকেই তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। ধীরে ধীরে তাপমাত্রা নেমে আসে ১৪ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। একই সঙ্গে দিনের স্বাভাবিক সর্বোচ্চ যে তাপমাত্রা থাকার কথা তা থাকছে গড়ে ৪ থেকে ৫ ডিগ্রি কম। শনিবার (৭ জানুয়ারি) ছিল চট্টগ্রামের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত নদী অববাহিকা এলাকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এ সময় দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা বিশ্বজিত চৌধুরী বলেন, জানুয়ারি মাসে এখন যে তাপমাত্রা আছে তা স্বাভাবিক তাপমাত্রা। তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকার পরেও চট্টগ্রামে শীত অনুভূত হচ্ছে। তার প্রধান কারণ হলো বাতাস ও বায়ুর আদ্রতার পরিমাণ বেশি থাকা। হিমালয়ের পূর্বদিক থেকে বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় শীত বেশি মনে হয়। আদতে শীত তেমন নেই। সেইসঙ্গে মাঝারি কুয়াশা পড়ছে। আগামী কয়েকদিন এমন অবস্থা বিরাজ করবে।
চট্টগ্রামে শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপাতত চট্টগ্রামে শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা নেই। কারণ সমুদ্র উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় তাপমাত্রা সাধারণত ১০ ডিগ্রির নিচে নামে না। আবার নামলেও তা পরপর তিন দিন স্থায়ী থাকতে হবে। টানা তিন দিন একই রকম পরিস্থিতি হলে তখন চট্টগ্রামে শৈত্যপ্রবাহ বলা যাবে। আর চট্টগ্রামে সে সম্ভাবনা কম। যদিও দেশের অন্যান্য অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়