সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল : শান্তিপূর্ণ গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে ৩৫ শতাংশ

আগের সংবাদ

জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী : নির্বাচনের আগে দেশে ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে > উদ্ভট ধারণা প্রশ্রয় দেবেন না

পরের সংবাদ

ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা : বিনিয়োগের ৫০ শতাংশ আসতে হবে পুঁজিবাজার থেকে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বর্তমানে শিল্প-বাণিজ্যের অর্থায়নে পুঁজিবাজারের অংশগ্রহণ খুবই কম। বিনিয়োগের বড় অংশ যোগান দিচ্ছে ব্যাংকিং খাত। ব্যাংকগুলো স্বল্প মেয়াদে আমানত নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন করছে বলে নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। তাই উন্নত দেশের লক্ষ্য অর্জন করতে হলে পুঁজিবাজারকে কাজে লাগাতে হবে। পুঁজিবাজার থেকে ৫০ শতাংশ অর্থায়ন করা প্রয়োজন। এখান থেকে বেশি অর্থের যোগান আসলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য স¤প্রসারিত হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
ক্রাইসিসের মধ্যেও আমাদের রপ্তানি বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবেই। বর্তমানে মানুষ অনেক গুজব ছড়ায়। তাই গুজবে কান দেয়া ঠিক হবে না।
গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থসূচক ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো-২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এক্সপোতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী-রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। এছাড়া অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম, বাংলাদেশ পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ এসোসিয়েশনের (বিএপিএলসি) প্রেসিডেন্ট আনিস উদ দৌলা, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান এবং ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও। সভাপতিত্ব করেন অর্থসূচক সম্পাদক ও ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) সভাপতি জিয়াউর রহমান।
এ সময় বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, গত ১২ বছরে বাংলাদেশ দেখিয়েছে আমরাও সামনে এগিয়ে যেতে পারি। পুঁজিবাজার শিক্ষার গুরুত্ব অনেক। একটি পূর্ণাঙ্গ বাজার গড়তে কাজ করতে চায়। এই খাতের পত্রিকাগুলো আমাদের কাজ করতে অনেক সহযোগিতা করছে। অর্থসূচক সবসময় নতুন দিকনির্দেশনা দিয়ে পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের পাশে ছিলো। গুজব ছড়ানোয় অনেকে কাজ করছে। তাই জেনে শুনে বিনিয়োগ করতে হবে। গুজবে কান দেয়া যাবে না। সিএসই চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম বলেন, দেশের নিবন্ধিত কোম্পানির সংখ্যা অনেক। তবে পুঁজিবাজারে কোম্পানিগুলোর উপস্থিতি একেবারে কম। পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাজারে আসা উচিত। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ পুঁজিবাজার থেকে আসতে হবে। এছাড়া এসডিজি অর্থায়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। বর্তমান কমিশন আইনগত সংস্কার সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছে।
এদিন ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, অর্থসূচক ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো সবাইকে এক ছাদের নিচে নিয়ে আসছে। এতে বিনিয়োগকারীসহ সবাই উপকৃত হবেন। ৩ দিনব্যাপী এই আয়োজনে অনেককিছু শেখার আছে। সবাইকে ভালো একটি স্টক মার্কেটের প্রত্যাশা নিয়ে কাজ করতে হবে। বাজেট ও ইকোনমিক আকার অনেক বড় হয়েছে। বিশ্বে ব্যবসা বাণিজ্যের খারাপ প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়ে। বিএমবিএ প্রেসিডেন্ট ছায়েদুর রহমান বলেন, অর্থসূচকের এই আয়োজন সাহসী পদক্ষেপ। এতে পুঁজিবাজার ভালো হবে। এই বাজারের ইতিহাস অনেক লম্বা। তবে আমরা সেই তুলনায় এগিয়ে যেতে পারি নি। চিন্তা ভাবনা করে বিনিয়োগ করতে পারলে ঝুঁকি কমে। পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করতে অর্থের প্রবাহ বাড়াতে হবে। সমন্বিত প্রচেষ্টা না থাকলে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব না।
আনিস উদ দৌলা বলেন, করোনার পরবর্তীতে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়। এতে মূল্যস্ফীতি ও ডলারের দাম বেড়ে যায়। সবকিছুতেই এসবের প্রভাব পড়েছে। বর্তমান কমিশন প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীসহ অন্যান্যদের বিনিয়োগ আকর্ষণে কাজ করছে। এছাড়া বন্ড মার্কেট নিয়ে সা¤প্রতিক সময়ের বিভিন্ন পদক্ষেপে এর চাহিদা বাড়ছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান বলেন, করোনাসহ অন্যান্য সংকট কেটে যাচ্ছে। দেশের পুঁজিবাজারও সংকট কাটিয়ে সামনে এগিয়ে যাবে। করোনার মধ্যে সঠিক ব্যবস্থাপনার কারণে আমাদের ক্ষতি অনেক কম হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা অনেক বেশি সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হয়েছি। সাপ্লাই চেইন ঠিক হয়েছে। কৃষি খাতেও উৎপাদন বাড়ছে। একইসঙ্গে বাড়ছে রপ্তানির পরিমাণ। এভাবে অন্যান্য খাতের মতো দেশের পুঁজিবাজারও এগিয়ে যাবে।
জিয়াউর রহমান বলেন, বিনিয়োগকারীদের সচেতন বাড়াতে আমরা এই এক্সপো শুরু করেছিলাম। ২০১০ সালের ধসের পর বাজারের প্রতি মানুষের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। তাদের সেই চিন্তাভাবনা দূর করতে এই আয়োজন করা হয়। বর্তমানে অনেকে গুজব ছড়ায়। এতে কান দেয়া উচিত না। একটু ধাক্কা খেলেও বাংলাদেশ সব সংকট কাটিয়ে ভালো দিকে যাচ্ছে। তাই কোনো গুজবে কান দেয়া উচিত না।
আগামী শনিবার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় এক্সপোর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বিশেষ অতিথি থাকবেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। এবারের এক্সপোতে সিডিবিএল, বিআইসিএম, বিএএসএম, ব্রোকারহাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক, লিস্টেড কোম্পানিসহ ৩৪টির বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।
৩ দিনের এক্সপোতে উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানের বাইরে বিভিন্ন বিষয়ের উপর চারটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এসব সেমিনারে বিএসইসি, ডিএসই ও সিএসইর শীর্ষ কর্মকর্তা, খ্যাতনামা স্টক ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংকার, অ্যাসেট ম্যানেজার, শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ, চার্টার্ড একাউন্টেন্ট, কস্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট, চার্টার্ড ফিন্যান্সিয়াল এনালিস্ট প্রমুখ অংশ নিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়