সিলেট ব্যুরো : বাংলাদেশের মতো গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অন্য কোথাও নেই বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। গতকাল বুধবার সিলেটের ইপিআই ভবনে আয়োজিত কমিউনিটি ক্লিনিকবিষয়ক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের এখানে সাড়ে ১২ হাজার পত্রিকা ও ৪৫টি টেলিভিশন চ্যানেল আছে। মাসে এক হাজারের বেশি সাময়িকী বের হয়। আর কোথায় এমন আছে?
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশিদের জ্ঞান খুব সীমিত, তারা আমাদের মাঝেমধ্যে যে সুপারিশ দেয়, সেগুলো খুব আহাম্মকের মতো মনে হয়; অলীক মনে হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে সবচেয়ে ভালো জানে এ দেশের মানুষ। মন্ত্রী বলেন, আমরা পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম দেশ, যেখানে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য ৩০ লাখ লোক রক্ত দিয়েছে। গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকারের জন্য এত মানুষ পৃথিবীর আর কোথাও রক্ত দেয়নি। এখানে প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে গণতন্ত্র রয়েছে। অথচ তারা আসছে আমাদের মানবাধিকার আর গণতন্ত্র বোঝাতে।
এ দেশে নির্বাচনে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষ ভোট দেয় উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অনেক দেশে ২৫-৩০ শতাংশ মানুষও ভোট দেয় না। সেসব দেশে নির্বাচনে প্রার্থী খুঁজে পাওয়া যায় না, অথচ এ দেশে একেকটি পদে বিপুলসংখ্যক প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন। এরপর তারা নিজের দিকে তাকায় না কেন? বিদেশিদের নিয়ে মিডিয়াকে হইচই না করার পরামর্শ দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিডিয়ার কারণে বিদেশিরা পাত্তা পাচ্ছে। আপনারা বিদেশিদের কাভারেজ করা বন্ধ করেন। আপনারা কাভারেজ বন্ধ করলে তারা ঘরে বসে থাকবে। আপনাদের কারণে তারা মজা পায়। তারা নিজেদের এই দেশের রাজা মনে করে।
কমিউনিটি ক্লিনিক প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের কারণে দেশে যে কত উন্নয়ন হচ্ছে তা আমরা টের পাচ্ছি না। কমিউনিটি ক্লিনিক হওয়ার ফলে দেশে মাতৃমৃত্যু-শিশুমৃত্যু অনেক কমে গেছে। আগে তা প্রায় ৮৬ শতাংশ ছিল। এর মধ্যে সিলেটে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি ছিল। এগুলো অনেক কমে এসেছে। মতবিনিময় সভায় সিলেটে আরো ৭টি নতুন কমিউনিটি ক্লিনিক চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের মোট ২৪টি নতুন কমিউনিটি ক্লিনিক প্রয়োজন। আশা করছি দ্রুতই এগুলো পেয়ে যাব।
গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ সর্বক্ষেত্রে অভাবনীয় উন্নতি করেছে উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, আমরা দারিদ্র অর্ধেকে নামিয়ে দিয়েছি। যেহেতু আমরা উন্নতি করছি তাই অনেকের চোখে পড়ছে। অনেকে ফায়দাও লুটতে চাচ্ছেন। এখানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। কিন্তু আমাদেরই কিছু লোকজন চায় না শান্তি হোক। কারণ অশান্তি হলে তাদের ব্যক্তিগত ফায়দা হয়।
এজন্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে তারা অশান্তি সৃষ্টি করতে চায়।
মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেটের পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়, সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. এসএম শাহরিয়ারসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন। এ সময় সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।