বোটানিক্যাল গার্ডেনে স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় স্বামীর স্বীকারোক্তি

আগের সংবাদ

বিদেশে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা : কী করছেন কূটনীতিকরা

পরের সংবাদ

নিশ্চুপ বনবিভাগ : কোদালা বিটে থামছেই না সেগুন গাছ পাচার

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জের কোদালা সংরক্ষিত বনবিভাগ থেকে মূল্যবান সেগুন গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে সংঘবদ্ধ চোরাই কাঠ পাচারকারী সিন্ডিকেট। চট্টগ্রামের অন্যতম সেগুন বাগান নামে পরিচিত কোদালা বনবিটে গাছ কাটা অব্যাহত থাকলেও সংশ্লিষ্ট বন কর্মকর্তারা প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের ভয়ে প্রতিরোধ করতে এগিয়ে আসতে পারছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে বনবিভাগ দাবি করছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ গাছ কাটার পরপরই তদন্ত কমিটি গঠন করে নিয়মিত তদন্ত রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন মহলে পাঠানো হয়।
স্থানীয় বনবিভাগ সূত্রে জানায়, গাছ কাটার সঙ্গে জড়িতদের সনাক্ত ও আইনের আওতায় আনতে না পারায় কিছুতেই গাছ কাটা থামানো যাচ্ছে না। রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ সূত্র জানায়, ৩ হাজার ৩৮৪ একর সংরক্ষিত জায়গা নিয়ে বিশাল কোদালা বনবিট। এত বিশাল বাগানের জন্য ২ জন বন প্রহরী ও ১ জন বনবিট কর্মকর্তা রয়েছে। বনবিটের অফিসে ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। ২ জন বনপ্রহরী ও ১ জন ফরেস্টার দিয়ে বিটের পুরো বাগান দেখভাল করা কিছুতেই সম্ভব নয়।
এ প্রসঙ্গে রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মাসুম কবির জানান, জনবল সংকটের অভাবে আশপাশে দীর্ঘদিনের গড়ে ওঠা গাছগুলো গাছ কাটা সিন্ডিকেট রাতে ও দিনে প্রায় সময় মূল্যবান সেগুন গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সংকটের মুখে গাছ কাটা থামাতে বন বিভাগের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কাঠ চোরদের বিরুদ্ধে নিয়মিত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
সরজমিন দেখা গেছে নিশ্চিন্তাপুর, রেশম বাগান, শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্ক, ছাদেকের ঘোনা, সেগুন বাগান এমনকি বিট অফিসের সঙ্গে সংযোগ অংশেও কাঠ কাটছে প্রতিনিয়ত। গাছগুলো কারা কাটছে তাদের সনাক্ত করতে না পারায় কাঠগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে জানান বন কর্মকর্তারা।
স্থানীয়রা জানান, অসাধু বন কর্মকর্তা, কর্মচারীদের যোগসাজসে চোরাই কাঠ ব্যবসায়ীরা সরকারের সংরক্ষিত সেগুন বাগান থেকে প্রতিমাসে অন্তত লক্ষাধিক ঘণফুট সেগুন গাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ পাচার করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোদালা বনবিটের কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান পলাশ বাগান থেকে গাছ কাটার কথা স্বীকার করে বলেন, বিটের বিশাল বাগানে ২ জন বন প্রহরী দিয়ে রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। অফিসে সংরক্ষিত আগ্নেয়াস্ত্র পাহারা দিব, নাকি বাগানের গাছ পাহারা দিব, তা নিয়ে দুঃচিন্তায় আছি। তারপরেও আমরা দায়িত্ব পালন করছি যথাযথভাবে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাছ কাটা চোরাই সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুদ্ধ করে বাগান রক্ষার চেষ্টা করছি। বিভাগীয়ভাবে এ বিটে বন প্রহরী নিযুক্ত করার জন্য লিখিতভাবে আবেদন করলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিটের পাশে শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্ক থেকে আউট সোসিং এর কয়েকজন লোক দিয়েছে। তাদের দিয়ে বাগান পাহারা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জের দায়িত্বে থাকা সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শীতল মন্ডল জানান, কোদালা বন বিটে গাছকাটা বন্ধে নানা পদক্ষেপ নিয়েছি। বন প্রহরী বাড়ানোর জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গাছ কাটার বিষয়ে আমরা তদন্ত করে মামলা দায়ের করেছি। বাগান থেকে কাটা গাছ উদ্ধার করেছি। লোকবল বাড়ানো হবে অচিরেই।
শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্কে দায়িত্বরত কর্মকর্তা হাসিবুর রহমান জানান, পার্কের কোনো গাছ চুরি করার সুযোগ নাই। পার্কের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ আউট সোর্সিংসহ প্রকল্প কর্মকর্তা, কর্মচারীরা নিরাপত্তার দায়িত্বে জোরালো ভূমিকা রাখছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়