ঢাবিতে পর্দা নামল নন-ফিকশন বইমেলার

আগের সংবাদ

কালো মানিকের জন্য শোকার্ত বিশ্ব

পরের সংবাদ

সারাবিশ্বে দুর্বল চাহিদা : টানা নিম্নমুখী জাপানের শিল্পোৎপাদন

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : জাপানের শিল্পোৎপাদনে নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। নভেম্বরে দেশটির কারখানাগুলোর উৎপাদন টানা তৃতীয় মাসের মতো সংকুচিত হয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কার মধ্যে দেশ ও দেশের বাইরে দুর্বল চাহিদা জাপানের শিল্প খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আবার মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় কর্মীদের বেতন বাড়ানোর জন্য চাপের মুখোমুখি হয়েছে উৎপাদন খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির মহামারি-পরবর্তী পুনরুদ্ধারের জন্যও মজুরি বাড়ানোর পদক্ষেপকে অপরিহার্য হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
জাপানভিত্তিক থিংক ট্যাংক সোমপো ইনস্টিটিউট প্লাসের অর্থনীতিবিদ মাসাতো কোইকে বলেন, বিশ্বজুড়ে সুদের হার বৃদ্ধি, অর্থনীতিতে ধীরগতি ও মূলধন ব্যয়ের নিম্নমুখী প্রবণতার প্রভাব বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পৌঁছেছে। বছরের শেষ তিন মাসে জাপানের উৎপাদন ব্যাপকভাবে দুর্বল রয়ে গিয়েছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের (এমইটিআই) তথ্য অনুসারে, নভেম্বরে শিল্পোৎপাদন আগের মাসের তুলনায় দশমিক ১ শতাংশ কমেছে। যদিও এ হার অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাস দশমিক ৩ শতাংশ পতনের চেয়ে অনেক কম। এর আগে অক্টোবরে সংশোধিত ৩ দশমিক ২ এবং সেপ্টেম্বরে ১ দশমিক ৭ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল। গত মাসে সাধারণ যন্ত্রপাতির উৎপাদন ৭ দশমিক ৯ শতাংশ এবং উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশের উৎপাদন ৫ দশমিক ৭ শতাংশ কমে গেছে। এ দুই বিভাগের উৎপাদন হ্রাস পুরো খাতটিকে নেতিবাচক অবস্থানে ঠেলে দিয়েছে। গত মাসে গাড়ি উৎপাদন দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে। অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা একটি ব্রিফিংয়ে বলেন, সেমিকন্ডাক্টর বা ফ্ল্যাট-প্যানেল ডিসপ্লে তৈরির মেশিনগুলোর চাহিদা অনেক কমে গেছে। এগুলো মূলত চীন, ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার বাজারে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়।
এমইটিআই শিল্প উৎপাদনের মূল্যায়ন টানা দ্বিতীয় মাসের জন্য কাটছাঁট করেছে। মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, উৎপাদন খাত দুর্বল হচ্ছে। এমইটিআইয়ের জরিপে অংশ নেয়া নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, ডিসেম্বরে উৎপাদন ২ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়বে এবং জানুয়ারিতে পুনরায় দশমিক ৬ শতাংশ কমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উৎপাদন খাতে এমন নিম্নমুখী প্রবণতা দীর্ঘসময় অব্যাহত থাকতে পারে।

এদিকে রয়টার্সের জরিপে উঠে এসেছে, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে আশ্চর্যজনক সংকোচনের পর অর্থনীতিবিদরা আশা করছেন, অক্টোবর-ডিসেম্বর সময়ে বছরওয়ারি উৎপাদন ৩ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়বে। কিন্তু ৪১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি জাপানি ভোক্তাদের ব্যয়ের স্থিতিস্থাপকতাকে পরীক্ষায় ফেলে দিয়েছে। গত মাসে দেশটির খুচরা বিক্রি মাসভিত্তিক হিসাবে পাঁচ মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো সংকুচিত হয়েছে। ফলে ব্যবসাগুলো অনেক চাপের মধ্যে রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে চীনে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরবরাহ ব্যবস্থায় চাপ পড়তে পারে। এতে জাপানের উৎপাদন খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় সংকটের মুখোমুখি হতে পারে। আগামী বছরের শুরুতে কর্মীদের বেতন বাড়ানো নিয়েও শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলো। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় মজুরি বৃদ্ধিকে প্রয়োজনীয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদ মাসাতো কোইকে বলেন, ২০২৩ সালে মজুরি বৃদ্ধি খুব বেশি বা খুব কম নয়, এমন একটি চুক্তি হতে পারে। নতুন বছরে জাপানে মজুরি বাড়ার শক্তিশালী সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি নিয়ে অন্ধকার দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তা অনিশ্চয়তায় পড়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়