ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : কলা অনুষদ ডিনস অ্যাওয়ার্ড পেলেন ১৮৬ শিক্ষার্থী

আগের সংবাদ

উৎসবে মিলবে না সব বই

পরের সংবাদ

দুনিয়া কাঁপানো ঘটনার সাক্ষী-২০২২

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : বিদায়ের পথে ঘটনাবহুল ২০২২। স্বাভাবিক নিয়মেই পাল্টে যাবে বর্ষপুঞ্জি, কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে আরেকটি বছর। কিন্তু বিদায়ী বছরে সৃষ্ট কিছু ক্ষত ইতিহাসের সাক্ষি হয়ে থাকবে অকেদিন- যে ক্ষতগুলো সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। দুনিয়া কাঁপানো এসব ঘটনার মধ্যে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথের মহাপ্রয়াণ, আইনি অনুশাসনে ঘেরা ইরানে তারুণ্যের জাগরণ অন্যতম।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ : কিয়েভ ও তার পশ্চিমা মিত্রদের আশঙ্কাকে ‘অমূলক’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিল মস্কো। তবে শেষ পর্যন্ত আশঙ্কাই সত্যি হয়। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের নির্দেশে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তার দেশের সশস্ত্র বাহিনী তিন দিক থেকে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে। পরবর্তী সময় পশ্চিমা সাহায্য-সমর্থনে বলিয়ান হয়ে ইউক্রেন প্রতিরোধ গড়ে তোলে। পাল্টা হামলা শুরু করে। চলমান যুদ্ধ ১১ মাসে গড়িয়েছে। এই যুদ্ধ কবে, কীভাবে শেষ হবে, তা অনিশ্চিত।
যুদ্ধে রাশিয়ার পাশে রয়েছে ইরান ও বেলারুশ। রুশ বাহিনীকে ড্রোন সরবরাহ করছে তেহরান। ইউক্রেনে হামলায় এই ড্রোন ব্যবহার করছে রাশিয়া।
অপরদিকে, কিয়েভের পাশে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, জাপানসহ অনেক দেশ ইউক্রেনকে অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে রাশিয়াকে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করতে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চলেছে পশ্চিমারা। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্বের সব দেশকে ইতিমধ্যে ছাড়িয়ে গেছে রাশিয়া। নিষেধাজ্ঞার নিশানায় পড়েছে রাশিয়ার তেল, গ্যাস, ব্যাংক, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন খাত। আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনের ব্যবস্থা সুইফট থেকে রাশিয়ার কয়েকটি ব্যাংককে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন ও তার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন। নিষেধাজ্ঞা আর পাল্টা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়ছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সারা বিশ্ব। দেশে দেশে বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। টালমাটাল হয়ে পড়ছে দেশের অর্থনীতি। জনগণের রোষানলে পড়ছে সরকারগুলো।
ইউক্রেনে একের পর এক বোমা হামলায় হাজার হাজার প্রাণ ঝরছে। যুদ্ধে অংশ নেয়া সামরিক বাহিনীর পাশাপাশি নির্বিচারে মরছে সাধারণ মানুষ। যার মধ্যে নারীও শিশুরাও রয়েছে। লাখ লাখ মানুষ এরই মধ্যে নিজ মাতৃভূমি ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছে ঠিকানাবিহীন এক বিশ্বে। অন্যদিকে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করা লক্ষাধিক সেনাকেও প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়েছে অসম এ যুদ্ধে।
রানি এলিজাবেথের বিদায় : যুক্তরাজ্যে ২০২২ সালটি শুরু হয়েছিল আনন্দ, উচ্ছ¡াস আর উদযাপনের মধ্য দিয়ে। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সিংহাসনে অভিষেকের ৭০ বছর পূর্তি হয়। যুক্তরাজ্যের রাজতন্ত্রের ইতিহাসে তিনিই সবচেয়ে দীর্ঘ সময় সিংহাসনে অধিষ্ঠিত থেকেছেন।
এ উপলক্ষে গত জুনে ব্রিটেনে এবং কমনওয়েলথভুক্ত বিভিন্ন দেশে চার দিন নানা রাজকীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল। তবে গত ৮ সেপ্টেম্বর সে আনন্দের মাঝে বেজে ওঠে বিষাদের সুর। এদিন স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্যালেসে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। আর এর মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ রাজশাসনের একটি বর্ণাঢ্য অধ্যায়ের ইতি ঘটে। তার মৃত্যুতে শোকে পাথর হয়ে যায় পুরো যুক্তরাজ্য। দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে তার কফিনে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে দেখা গেছে ব্রিটেনবাসীকে যা নজিরবিহীন।
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের পুরো নাম এলিজাবেথ আলেকজান্দ্রা মেরি উইন্ডসর। তিনি ১৯২৬ সালের ২১ এপ্রিল লন্ডনের বার্কলে স্কয়ারের কাছে একটি বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ব্রিটিশ রাজা জর্জ ও রানি এলিজাবেথের প্রথম সন্তান। তার বাবা ১৯৩৬ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন। সেই সময় থেকেই এলিজাবেথ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ছিলেন। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাবা রাজা জর্জ মারা গেলে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ সিংহাসনে বসেন এবং কমনওয়েলথের প্রধান হন।
ইরানে তারুণ্যের উত্থান : ইরানে স¤প্রতি তারুণ্যের উত্থানের পেছনের ঘটনাটি মোটামুটি সবারই জানা। গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানী তেহরানে কুর্দিস্তান অঞ্চলের তরুণী মাসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযোগ, তার বেশভূষা আইন অনুসারে সঠিক ছিল না। নীতি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর ১৬ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যু হয়। পরদিন তার দাফনের সময় থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়।
কুর্দিস্তানের সাকেজ শহরে প্রথম এই বিক্ষোভ হয়। সেখানে মাসা আমিনির বাড়ি। এই বিক্ষোভ প্রথমে তেহরানসহ ইরানের সব প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। পরে সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ইরানি নারীদের স্বাধীনতার দাবিতে কর্মসূচি ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীর নানা শহরে। বিক্ষোভে শামিল হন ইরানের শিল্পী, খেলোয়াড়সহ সর্বস্তরের মানুষ। শামিল হন বিভিন্ন দেশের শিল্পীরাও। সাধারণ মানুষের বিক্ষোভের জবাব ইরান সরকার দিয়েছে বুট ও বুলেটে। নভেম্বরের শেষ দিকে মানবাধিকার সংস্থা ইরানিয়ান হিউম্যান রাইটস জানিয়েছিল, তখন পর্যন্ত বিক্ষোভে প্রাণ গেছে প্রায় ৫০০ জনের। এর মধ্যে ৬০টি শিশু রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়