মৃত্যুবার্ষিকী আজ : সাবেক মেয়র হানিফ স্মরণে নানা কর্মসূচি

আগের সংবাদ

সমাবেশ ঘিরে দুপক্ষের হুঙ্কার : বিএনপি নেতাদের বক্তৃতায় প্রচ্ছন্ন হুমকি > ছাড় না দেয়ার ঘোষণা আওয়ামী লীগ নেতাদের

পরের সংবাদ

জাতীয় কনভেনশনে বক্তারা : নারী নির্যাতন বন্ধে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : নারী ও কন্যা নির্যাতন বন্ধে পরিবার, সমাজ ও সংসারকে শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই। নির্যাতন বন্ধে এগিয়ে আসতে হবে তরুণ প্রজন্মকেও। নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত এক কনভেনশনে এই আহ্বান জানান বক্তারা।
আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ উপলক্ষে পক্ষকালব্যাপী বহুমুখী কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার এই কনভেনশনের আয়োজন করা হয়। বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘নারী ও কন্যা নির্যাতন বন্ধ করি, নতুন সমাজ নির্মাণ করি’-প্রতিপাদ্যের আলোকে এই কনভেনশনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় কনভেনশনে নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির চেয়ারপারসন ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম। লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এ. কে. রাশেদুল হক। কনভেনশনে বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাতীয় কমিটির সদস্য প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক আবুল মোমেন, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. কাবেরী গায়েন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসলিমা ইয়াসমীন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মালেকা বানু।
ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম বলেন, নারীরা সামষ্টিকভাবে সমাজের জন্য কাজ করছেন। তাদের বৈষম্য থেকে মুক্ত করতে হবে। জাতিগঠনের জন্য পরিবারের মাধ্যমে, পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে মূল্যবোধ কিভাবে তৈরি করা যায় এ বিষয়ে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের শেকড় পরিবার, সমাজ ও সংসারকে শক্তিশালী করতে এর বিকল্প নেই।
ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা নির্মূলে নানা পদক্ষেপ থাকলেও সহিংসতার কারণ, উৎস বিভিন্ন দেশের প্রেক্ষাপটে আলাদা। এর মূলে আছে সমাজে নারী ও পুরুষের মধ্যে থাকা অসম ক্ষমতা। দেশে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এই কনভেনশনের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট করণীয় নির্ধারণ করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নারীর প্রতি হয়রানি কখন নির্যাতনে পরিণত হয় তা এখন তরুণদের আলোচনায় আসছে। বিভিন্ন ধরনের বৈষম্যের কারণে নারীর প্রতি নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। করোনায় বাল্যবিয়ে বেড়েছে, ১০-২০ শতাংশ শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। তারপর বাল্যবিয়ের পর বিচ্ছেদের কারণে শিশুশ্রম বেড়েছে। অন্যদিকে অর্থনৈতিক বিপর্যয় বাড়লে নারীর প্রতি অভিঘাত বাড়বে।
আবুল মোমেন বলেন, দেশের প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে নারীরা থাকলেও তার বিপরীতে নারীর প্রতি সহিংসতার ক্রমবর্ধমান চিত্র সমাজের নারী বিদ্বেষী মনোভাবকে প্রকাশ করছে। সা¤প্রতিক সময়ে ধর্মীয় আলোচনায় বিজ্ঞানভিত্তিক যা আলোচনা হয়, তার চেয়ে বেশি থাকে নারী বিদ্বেষী বক্তব্য। সমাজে একটা সহনশীল অবস্থা চলছে, যেখানে ধর্মকে ব্যবহার করা হচ্ছে রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারে, নারী পুরুষের বিভাজনে। এই পরিস্থিতি উত্তরণে সবাইকে সমাজ, মানস পরিবর্তনে কাজ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ড. কাবেরী গায়েন বলেন, প্রতি ১০ জনে একজন নারী সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন। সাইবার অপরাধ ঠেকাতে আইনি প্রয়োগের উপর জোর দেন তিনি।
তাসলিমা ইয়াসমীন বলেন, নতুন সমাজ নির্মাণে একটি বৈষম্যমুক্ত ও পিতৃতন্ত্রমুক্ত আইনকাঠামো তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। প্রচলিত নারীবান্ধব আইনগুলোতে এখনো পিতৃতন্ত্রের ধারণা প্রবলভাবে রয়ে গেছে।
প্রচলিত ধর্ষণের আইনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আইন কাঠামো পরিবর্তন না করে ধর্ষণের সঠিক বিচার সম্ভব না। নারী ও কন্যা নির্যাতনের বিষয়টি জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্ব দিতে হবে। এজন্য মনিটরিং মেকানিজম নির্ধারণ এবং অর্থনৈতিক বরাদ্দ বাড়াতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়