মোজাম্মেল-প্রণয় সাক্ষাৎ : কলকাতার থিয়েটার রোডের সেই বাড়িটি চেয়েছে বাংলাদেশ

আগের সংবাদ

কাদের সঙ্গে ডায়লগ করব? মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন

পরের সংবাদ

বুক বিল্ডিং পদ্ধতি : উচ্চ প্রিমিয়াম নেয়া কোম্পানিগুলোর ডিভিডেন্ডে লভ্যাংশে বেহাল দশা

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বুক বিল্ডিংয়ে আসা কোম্পানিগুলো কাট-অফ প্রাইস অতিমূল্যায়িত করার জন্য ইস্যু ম্যানেজারের সহযোগিতায় কারসাজি করেছে, সে অভিযোগ অনেক আছে। এছাড়া পুঁজিবাজারে আসার আগে কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অতিরঞ্জিত করে মুনাফা দেখানোর অভিযোগ আরো পুরনো। এর মাধ্যমে অনেক কোম্পানি উচ্চ দরে শেয়ার ইস্যু করে টাকা তুলে নিয়েছে। যাতে করে তালিকাভুক্তির পরে শেয়ারহোল্ডারদের দিতে পারছে না সঠিক লভ্যাংশ। এছাড়া কমে এসেছে মুনাফার পরিমাণ। একই সঙ্গে অর্ধেক কোম্পানির শেয়ার দর কাট-অফ প্রাইসের নিচে চলে এসেছে।
ডিএসইর তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১৫ সালে সংশোধিত পাবলিক ইস্যু রুলস চালুর পরে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত ১৫টি কোম্পানি বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রিমিয়ামে অর্থ সংগ্রহ করেছে। ওই কোম্পানিগুলো কাট-অফ প্রাইসের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরের ব্যবসায় ৫.৬৬ শতাংশ করে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। তবে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন ও ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজকে বাদ দিলে, এই লভ্যাংশের হার মাত্র ২.৫১ শতাংশ। বুক বিল্ডিংয়ের ১৫টি কোম্পানির মধ্যে ১২টি কোম্পানি কাট-অফ প্রাইস বিবেচনায় ৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারেনি। তারপরেও কোম্পানিগুলো ‘এ’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করবে। কিন্তু একই সময়ের অভিহিত মূল্যের দুই-একটি কোম্পানি ৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েও ‘বি’ ক্যটাগরিতে নেমে যাবে। নিয়ম অনুযায়ী, ১০ শতাংশ বা তার বেশি লভ্যাংশ দেয়া কোম্পানি ‘এ’ ক্যাটাগরিতে স্থান পায়। আর ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেয়া কোম্পানি ঠাঁই পায় ‘বি’ ক্যাটাগরিতে।
এছাড়া লভ্যাংশ না দেয়া কোম্পানি ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত হয়। এই হিসাব গণনায় সব ধরনের কোম্পানির জন্য লভ্যাংশ ঘোষণার ক্ষেত্রে অভিহিত মূল্যেকে (১০ টাকা) বিবেচনা করা হয়। অর্থাৎ প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা দরে ইস্যু করা কোম্পানি এবং ৮০ টাকা করে ইস্যু করা কোম্পানিকে একইভাবে বিবেচনা করা হয়।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রিমিয়াম নেয়া কোম্পানি থেকেও যদি বিনিয়োগকারীরা অভিহিত মূল্যের কোম্পানির মতো লভ্যাংশ পায়, তাহলে বুক বিল্ডিংয়ে শেয়ারবাজারে আসার দরকার কি? যদি প্রিমিয়ামের বিপরীতে রিটার্ন না-ই আসে, তাহলে শুধু অভিহিত মূল্যের কোম্পানির আইপিও অনুমোদন দেয়াই শ্রেয়। তবে ইস্যু মূল্যের লভ্যাংশের ওপরে ক্যাটাগরি নির্ধারণে সুফল আসতে পারে বলে মনে করেন তারা। ব্যবসায়িক পারফরম্যান্স ভালো দেখিয়ে গত ৮ বছরে বুক বিল্ডিংয়ে ১৫টি কোম্পানি প্রিমিয়াম নিয়ে তালিকাভুক্ত হয়েছে। ওই কোম্পানিগুলো গড়ে ৬৮.৩৩ টাকা করে প্রতিটি শেয়ার ইস্যু করেছে। এর বিপরীতে কোম্পানিগুলো গড়ে শেয়ারপ্রতি ৩.৮৭ টাকা বা ৫.৬৬ শতাংশ হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। তবে ইউনাইটেড পাওয়ার ও ওয়ালটন হাই-টেক ছাড়া বাকি ১৩ কোম্পানির গড় ইস্যু মূল্য ৪৯.০৭ টাকা। যে কোম্পানিগুলোর পর্ষদ গড় শেয়ারপ্রতি ১.২৩ টাকা করে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। যা ইস্যু মূল্য বিবেচনায় ২.৫১ শতাংশ।
এ বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, সব ধরনের কোম্পানির লভ্যাংশে অভিহিত মূল্য বিবেচনায় নেয়ায়, প্রিমিয়াম নেয়া কোম্পানিগুলোর প্রকৃত চিত্র প্রকাশ পাচ্ছে না। ইস্যু মূল্য বিবেচনায় ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হলে, প্রিমিয়াম নেয়া কোম্পানিগুলোর জন্য ‘এ’ ক্যাটাগরি ধরে রাখা কঠিন হবে। তবে প্রিমিয়াম নেয়া কিছু কোম্পানির মধ্যে ক্যাটাগরি ধরে রাখার জন্য লভ্যাংশের পরিমাণ বাড়বে। পুঁজিবাজারে আসার আগের সঙ্গে পরের ব্যবসায়িক পার্থক্য ও লভ্যাংশে নাজুক অবস্থার কারণে ওই ১৫টির মধ্যে ৭টির শেয়ার দর কাট-অফ প্রাইসের নিচে চলে এসেছে। এ তালিকায় রয়েছে রানার অটোমোবাইলস, এস্কয়ার নিট কম্পোজিট, মীর আখতার হোসাইন, আমান কটন ফাইব্রাস, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার ও একমি ল্যাবরেটরিজ। এদিকে কোম্পানিগুলো উচ্চ প্রিমিয়ামে অর্থ সংগ্রহের পরে মুনাফা নিম্নমুখী। ওই ১৫টি কোম্পানির মধ্যে ১০টি কোম্পানিরই শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) আইপিওকালীন সময়ের তুলনায় কমে এসেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় এনার্জিপ্যাক পাওয়ার। এই কোম্পানিটির আইপিওকালীন ৩.১৩ টাকার ইপিএস ২০২১-২২ অর্থবছরে নেমে এসেছে মাত্র ০.৩৮ টাকায়। অর্থাৎ ইপিএস কমেছে ৮৮ শতাংশ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়