ঢাবি ছাত্রলীগের সম্মেলন ৩ ডিসেম্বর : ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলন ২ ডিসেম্বর

আগের সংবাদ

ভিত্তিহীন গুজবে ব্যাংকিং খাত > ব্যাংকে জনগণের আমানত সম্পূর্ণ নিরাপদ রয়েছে : বাংলাদেশ ব্যাংক

পরের সংবাদ

সেবাপ্রত্যাশী নারীকে হেনস্তার অভিযোগ : সিলেট পাসপোর্ট অফিসের পরিচালকের বিরুদ্ধে জিডি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জাহিদুল ইসলাম, সিলেট ব্যুরো : সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালকের বিরুদ্ধে এক সেবাপ্রত্যাশীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে মোগলাবাজার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং-১০৩৭) দাখিল করেছেন ওই ভুক্তভোগী নারী। তবে এমন অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করছেন পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মাজহারুল ইসলাম।
থানায় দাখিলকৃত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, সিলেট মহানগরের পাঠানপাড়া এলাকার সাহারা খানম গত ১০ নভেম্বর পাসপোর্টের জন্য আবেদন জমা দিলেও তার আঙুলের ছাপ নেয়া হয়নি। সিলেট পাসপোর্ট অফিসের ২০৭ নম্বর কক্ষে কর্তব্যরত কর্মকর্তা তাকে ৩ দিন পরে ১৩ নভেম্বর যেতে বলেন। কথামতো ৩ দিন পরে গেলেও তার আঙুলের ছাপ না নিয়ে তাকে পুনরায় পরের দিন যেতে বলেন। এতে অনেকটা নিরুপায় হয়ে পরদিন সাহারা খানম ব্যাপারটি অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে জানান এবং তার কাছে সাহায্য চান। তবে সেই সুপারিশেও কাজ হয়নি। বরং কর্তব্যরত কর্মকর্তার কাছে হেনস্তা হতে হয়। এই ঘটনার পর সাহারা খানম পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক উম্মে সালমা তানজিয়াকে সম্পূর্ণ ঘটনা জানান। তিনি সাহারা খানমকে সিলেট পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মাজহারুল ইসলামের কাছে গিয়ে সমস্যার প্রতিকার চাইতে বলেন। সেই অনুযায়ী সাহারা খানম পরিচালক মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করেন। প্রায় ২ ঘণ্টা অপেক্ষার পর মাজহারুল ইসলাম জনৈক ‘ছয়েফ খান পাসপোর্টের জন্য ৮ হাজার টাকা নিয়েছেন’ মর্মে লিখিত অভিযোগ দাখিলের জন্য তাকে চাপ দেন এবং দুজন কর্মকর্তা ডেকে কক্ষের দরজা আটকে তাকে হুমকি দেন। এ সময় তিনি ভয়ে একটি সাদা কাগজে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে সাহারা খানম ভোরের কাগজকে বলেন, আবেদনের ৩ দিন পরে আঙুলের ছাপ দেয়ার জন্য গেলেও আমার আবেদন অনলাইনে আসেনি বলে পরের দিন যেতে বলেন। এজন্য আমি পাশেই বিভাগীয় কমিশনার অফিস থাকায় সেখানে যাই এবং অতিরিক্তি বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে দেখা করি। এর দুদিন পর আবারো পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে পরিচালকের সঙ্গে দেখা করি। পরিচালক আমাকে অনেকক্ষণ বকাঝকা করেন। তবে জোর করে অভিযোগ নেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি অসুস্থ আছেন, আর বেশি কথা বলতে পারবেন না বলে ফোন কেটে দেন।
থানায় সাধারণ ডায়েরির ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের মোগলাবাজার থানার ওসি মো. শামসুদ্দোহা।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে সিলেট পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটি একটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং সাজানো ঘটনা। ভদ্রমহিলা আমার কক্ষে আসেন এবং কাছে এসে বলেন তার জরুরি পাসপোর্টের জন্য ৮ হাজার টাকা নেয়া হলেও এখনো আঙুলের ছাপ দিতে পারেননি। এ সময় তার কাগজ পরীক্ষা করে দেখা যায় তিনি জরুরি নয় বরং সাধারণ পাসপোর্টের জন্য ৫,৭৫০ টাকা জমা দিয়েছেন। এ সময় আমি তার কাছে অতিরিক্ত টাকা নেয়া ব্যক্তির নাম জানতে চাইলে তিনি জনৈক ছয়েফ খানের নাম জানান। ভদ্রমহিলার পাসপোর্ট আবেদনের ওপরও ‘ছয়েফ খান’ নাম লেখা রয়েছে, তাই আমি তাকে অতিরিক্ত অর্থ নেয়া দালালের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে অভিযোগ দিতে পারবেন বলে জানাই এবং আমার অফিসের একজন লোক সঙ্গে দিয়ে তার আঙুলের ছাপ গ্রহণ করা হয়। ভদ্রমহিলা নিজের ইচ্ছাতেই লিখিত অভিযোগ দিয়ে চলে যান। এখানে কেউ কোনো জোর করার প্রশ্নই ওঠে না।
তিনি আরো বলেন, আমার পুরো অফিস সিসিটিভি নিয়ন্ত্রিত, চাইলে যে কেউ এসে দেখে যেতে পারেন। এর আগে ৩ দিন সেবাপ্রত্যাশীকে ঘোরানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১০ নভেম্বর ছিল বৃহস্পতিবার, কারিগরি ত্রæটির কারণে সেদিন আঙুলের ছাপ নেয়া যায়নি, তাই রবিবারে আসতে বলা হয়।
অভিযুক্ত ছয়েফ খান সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি সিলেট মহানগরের ২৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাহারা খানমের আত্মীয় হন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়