রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য : শিশুবক্তা রফিকুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য পেছাল

আগের সংবাদ

ঢাবি সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি : বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে স্বচ্ছতা থাকতে হবে

পরের সংবাদ

চট্টগ্রামে নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন ক্ষুব্ধ ভোক্তা : টিসিবির ট্রাকের সামনে দীর্ঘ লাইন

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামে সপ্তাহের ব্যবধানে নিত্য প্রয়োজনীয় বেশিরভাগ পণ্যের দাম বেড়েছে। বাজারে চাল, ডাল, আটা, ময়দা, তেল, চিনি ও ছোলার দাম বেড়েছে। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে ভোগান্তি বেড়েছে নি¤œ-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির। চরম সংকটে বস্তিবাসী ও নি¤œ আয়ের মানুষ। নিত্যপণ্যের এমন মূল্যবৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। আয়ের চেয়ে ব্যয় বাড়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকেই।
এদিকে নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রির সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবির ট্রাকের সামনে মানুষের লাইন ক্রমশ দীর্ঘতর হচ্ছে। সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কিনতে প্রতিদিন মানুষের ভিড় বাড়ছে। দাঁড়াচ্ছেন অনেক সক্ষম ক্রেতাও। নি¤œবিত্ত, দরিদ্র, দিনমজুর বা ভাসমান ক্রেতারা সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন কম দামে সরবরাহ করা টিসিবির পণ্য কিনতে। কিন্তু দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্যের মজুত শেষ হওয়ায় অনেকে ফিরেছেন খালি হাতে। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে একসময় সিরিয়াল এলেও দেখা গেছে, ডাল আছে তো তেল নেই। আবার মানুষের দীর্ঘ সারি শেষ হওয়ার আগেই বিক্রি শেষ হয়ে যায় টিসিবির দৈনিক সরবরাহকৃত পণ্য। এছাড়া স্বল্পমূল্যে টিসিবির ভোগ্যপণ্য বিক্রি কার্যক্রমে নানা অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। টিসিবির পণ্য ক্রেতাদের কাছে বিক্রি না করে গুদামে মজুত করা, ফ্যামিলি কার্ড ছাড়া একাই ৫ জনের টিসিবি পণ্য নেয়াসহ নানা অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
বাজার করতে আসা ক্রেতা মোমিনুর রহমান বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় সবকিছুরই দাম বাড়ছে। বিক্রেতারা সুযোগ বুঝে ইচ্ছেমতো দাম হাঁকিয়ে পকেট ফাঁকা হচ্ছে সাধারণ মানুষের। আগে ১০০০ টাকার বাজার করলে এক সপ্তাহ চলে যেত। এখন সেটা দুই-তিন দিনেও চলে না। কোনোভাবেই হিসাব মেলাতে পারছি না। সারা বছর বাজার মনিটরিং করতে হবে প্রশাসনকে। বাজার মনিটরিং জোরদার করলে ন্যায্যমূল্য দিয়ে পণ্য কিনতে পারবেন ক্রেতারা।
বাজারে মোটা চাল কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে। মাঝারি মানের চাল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা এবং ভালো মানের সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকার ওপরে। সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে প্রতিবস্তা (৫০ কেজি) চালে ১৫০ থেকে ৪শ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এতে করে রীতিমতো নাজেহাল সাধারণ ক্রেতারা। পাইকারী ব্যবসায়ীরা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবহন খরচ বেড়েছে। তার উপর শিল্প গ্রুপগুলো বিপুল পরিমাণে নতুন চাল মজুত করে ফেলেছে। ধানের দাম বেশি এমন অজুহাতে মিলাররা বাড়তি দরে চাল বিক্রি করছেন। তাই সব মিলিয়ে পাইকারিতেও বাধ্য হয়ে বাড়তি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। চট্টগ্রামের পাইকারি চালের বাজার পাহাড়তলীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতিবস্তা (৫০ কেজি) মোটা সিদ্ধ চালে ৩শ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৩শ, সিদ্ধ মিনিকেট ২ হাজার ৯শ, ইরি চাল ২ হাজার ২শ, বেতি আতপ ২ হাজার ৮শ ও মিনিকেট ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বস্তায় ২শ টাকা বেড়ে গুটিস্বর্ণা ২ হাজার ৪শ ও পারি সিদ্ধ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬৫০ টাকায়। বস্তাপ্রতি ১৫০ টাকা বেড়ে ইন্ডিয়ান স্বর্ণার দাম ঠেকেছে ২ হাজার ৫৫০ টাকায়। তাছাড়া চিনিগুঁড়া চাল সাড়ে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খুচরা বাজারে আটা-ময়দার দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। প্যাকেট আটায় ৫ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেট ময়দায় দাম ১০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকায়, খোলা আটা ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়। লিটারপ্রতি ১২ টাকা বেড়ে বোতল সয়াবিন তেল ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এতদিন ১৫৮ টাকা ছিল। এছাড়া ১৩ টাকা বাড়িয়ে প্রতি কেজি প্যাকেটজাত চিনির দাম ১০৮ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। যদিও বাজারে প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দামে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়