রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য : শিশুবক্তা রফিকুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য পেছাল

আগের সংবাদ

ঢাবি সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি : বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে স্বচ্ছতা থাকতে হবে

পরের সংবাদ

‘একটা সার্সিং ব্যাপার কাজ করত’

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

হাছন রাজার গান নিয়ে কাজ করছেন দীর্ঘ বছর ধরে। গান করেছেন নন্দিত লেখক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের সিনেমাতেও। তার গানে মুগ্ধ শ্রোতারা। তিনি সেলিম চৌধুরী। ভোরের কাগজের কার্যালয়ে আড্ডায় উঠে এলো সব কথাই। সঙ্গে ছিলেন
শ্রাবণী হালদার

আপনার জনপ্রিয় গানগুলোর বেশিরভাগই হাছন রাজার গান। তার গান বেছে নেয়ার পেছনে বিশেষ কোনো কারণ আছে কি?
সুনামগঞ্জ শহরে আমার পড়াশুনা শুরু। তখন হাছন রাজার গান আমি বেশি বেশি শুনেছি। তার গানের সঙ্গে নিবিড়ভাবে পরিচয়টা তখন থেকেই। এছাড়াও হাছন রাজার পরিবারের সঙ্গেও আমাদের আত্মীয়তা হয়। তার গানের ফিলোসফিক্যাল সাইডটাও আমাকে আকর্ষণ করে। হুমায়ূন আহমেদ স্যার নিজেও হাছনের গানের ভক্ত ছিলেন…

এবার এ প্রসঙ্গেই কথা বলতে চাচ্ছিলাম…
হুমায়ূন স্যার হাছনের গান গাওয়ার জন্য আমাকে খুব ইনসপায়ার করেছেন। আমার প্রথম যে অ্যালবামটা হাছন রাজার, সেই একক অ্যালবামটা তিনি প্রডিউস করেন।

হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে আপনার যোগসূত্রটা কীভাবে?
আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলে থাকতাম। তিনি ছিলেন এ হলের হাউস টিউটর। তখন থেকেই তার সঙ্গে আমার আলাপ।

তার সঙ্গে ‘চন্দ্রকথা’, দুই দুয়ারী, শ্যামলছায়া সিনেমাগুলোতে কাজ করেছেন। এই সিনেমার গানগুলো করার পেছনের গল্পটা শুনতে চাই। বিশেষ করে ‘চাঁদনী পসরে কে আমায় স্মরণ করে’ গানটি তৈরির গল্প…
তিনি আমাকে বলেছিলেন, ফিল্মে হুটহাট করে বড় ধরনের ঘটনা ঘটানো যায় না। ফিল্মের দর্শককে কোনো গান শোনাতে হলে তার আগে দৃশ্য সম্পর্কে একটা ধারণা দিতে হয়। তিনি আমায় বললেন, ‘সিনেমার শেষের দিকে যে ঘটনাটা ঘটে মানে নূর ভাইকে যে আমি মেরে ফেলব, এই হিন্সটা দর্শককে দিতে হবে। মৃত্যুর একটা বার্তা থাকবে।’ তারপর তিনি গানটি লিখলেন। গানে ‘কে আইস্যা দাঁড়াইছে গো আমার দুয়ারে..’- এটা আসলে মৃত্যুদূত। এভাবেই এই গানটি করা।

এ প্রজন্মের যে শিল্পীরা লালন, হাছন কিংবা রাধারমন গাইছেন। তাদের গান নিশ্চয় শোনা হয়। তাদের গায়কী কেমন, উচ্চারণ কেমন, লিরিক ঠিক আছে কিনা- এসব বিষয় খেয়াল করেছেন?
কিছু কিছু লিরিকে ভুল থাকে। যেটা শুরুতে আমরাও করতাম। ভুল করে করেই তো আসলে এক সময় একটা সিরিয়াসনেস আসে। যদিও আমি এ ব্যাপারে খুঁতখুঁতে ছিলাম। আমি আসলে বায়োলজির ছাত্র ছিলাম। সাইন্স ব্যাকগাউন্ডের জন্য আমার মধ্যে একটা সার্সিং ব্যাপার কাজ করত। গানের ক্ষেত্রে আমার এমনটি ঘটেছে। চেষ্টা করেছি, গানের গীতিকার কে, লিরিক ঠিক আসে কিনা এসব খেয়াল করে তবেই গাইতে।
কিছু কিছু সিঙ্গার তো অসম্ভব ভালো গাইছেন। তবে কেউ যে উল্টা-পাল্টা, বাজে গাইছে না তা কিন্তু নয়!

‘ইত্যাদি’তে গাওয়া আপনার অসম্ভব জনপ্রিয় ‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর’ গানটি তৈরি হলো কীভাবে, জানতে চাই…
গানটি মূলত ক্যাসেটে বের করার জন্য আমরা তৈরি করছিলাম। যে স্টুডিওতে গানটি নিয়ে কাজ করছিলাম, সৌভাগ্যবশত সে স্টুডিওতেই সংকেত দা’র (হানিফ সংকেত) শিফট ছিল। উনি গিয়ে আমাকে ভয়েস দেয়ারত অবস্থাতে পান। শুনেই তিনি পছন্দ করে ফেলেন। পরদিন ফোন দিয়ে জানালেন, গানটি ইত্যাদির জন্য নিতে চান! অসম্ভব সুন্দর করে তিনি মিউজিক্যাল ভিডিওটা করেছিলেন।

তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে গানের সঙ্গে আপনার পথচলা। দীর্ঘ এই ক্যারিয়ারে গানের সঙ্গে থেকে আপনি কি সন্তুষ্ট?
আসলে একজন শিল্পীর সম্পূর্ণ সেটিসফ্যাকশন কখনোই আসে না। আর আমি মনে করি, এই সন্তুষ্টি না আসাটাই আর্টিস্টের ক্ষেত্রে ভালো। তাতে হয় কী, ক্ষুধাটা থাকার কারণে সে আরো কাজ করতে চায়। আমি নিজেও মিউজিক সেক্টরে আরো কাজ করতে চাই।

নতুন কোনো গানের খবর আছে কি?
কয়েকদিন আগেও একটা গানের মিউজিক ভিডিওর শুটিং করলাম। গানটি ইউটিউবে রিলিজ করবে।
এছাড়াও মাওলানা ইয়াছিন নামে একজন গীতিকার আছেন, তিনি বেশকিছু অর্থবহ গান লিখে গেছেন। তার কিছু গান নিয়ে কাজ করছি।

গানের পাশাপাশি আর কী করছেন?
আমি টুকটাক ব্যবসা করি। আর কোয়ালিফিকেশনের দিক দিয়ে আমি রেজিস্ট্রেড মাইক্রো বায়োলজিস্ট।

ভোরের কাগজকে সময় দেয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ…
ধন্যবাদ, ভোরের কাগজ পরিবারকেও।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়