কাগজ ডেস্ক : ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর সাত মাসে গড়িয়েছে। দেশটিতে নিজেদের দখলে থাকা কিছু এলাকায় রুশ সেনারা নাস্তানাবুদ হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন হুমকি দিয়েছেন, প্রয়োজন হলে হাতে থাকা সব অস্ত্র দিয়ে আঘাত হানবেন। সম্প্রতি জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে পুতিন বলেছেন, ‘আমাদের দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা হুমকির মুখে পড়লে এবং রাশিয়া ও আমাদের মানুষকে রক্ষা করার জন্য আমরা অবশ্যই হাতে থাকা সব অস্ত্র কাজে লাগাব। আর এটা কোনো ধাপ্পাবাজি নয়।’ ভাষণে পারমাণবিক অস্ত্রের বিষয়টিও তুলে ধরেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তার ভাষা ছিল এমন, ‘যারা পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে আমাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে, তাদের এটা জেনে রাখা উচিত, নিশানা ঘুরে তাদের দিকেও যেতে পারে।’ পুতিনের বক্তব্যের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন ষাট বছরের মধ্যে বিশ্ব এবার পারমাণবিক যুদ্ধের সবচেয়ে বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। বাইডেন বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন যখন বলেন যে ভূখণ্ড রক্ষায় ‘আমাদের হাতে যা আছে’ মস্কো তার সব ব্যবহার করবে-সেটি নিছক মজা নয়।
পুতিনের এই হুমকিকে ঘিরে পরিস্থিতি যখন উত্তপ্ত, তখন রাশিয়াসহ বিশ্বে সামরিক শক্তিতে এগিয়ে থাকা দেশগুলোর পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্ট চলতি বছরের শুরুর দিকে এ নিয়ে তথ্য প্রকাশ করেছিল। তাদের হিসাব বলছে, বিশ্বের মাত্র ৯টি দেশের হাতে প্রায় ১২ হাজার ৭০০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। দেশগুলো হলো রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, পাকিস্তান, ভারত, ইসরায়েল ও উত্তর কোরিয়া।
এই দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া হাজার হাজার পারমাণবিক অস্ত্র আগেই ধ্বংস করেছে। তারপরও বর্তমানে দেশ দুটির হাতে রয়েছে বিশ্বের মোট পারমাণবিক অস্ত্রের ৯০ শতাংশ।
পারমাণবিক অস্ত্রে যুক্তরাষ্ট্র না রাশিয়া, কার পাল্লা ভারি : ১৯৮৬ সালে প্রতিদ্ব›দ্বী এই দুই দেশের কাছে সর্বোচ্চ পরিমাণ পারমাণবিক অস্ত্র ছিল। সম্মিলিতভাবে সংখ্যাটা ৬৫ হাজারের কাছাকাছি। সে সময় স্নায়ুযুদ্ধ চলছিল। এমন পরিস্থিতিতে পারমাণবিক অস্ত্রের ওই প্রতিযোগিতা সবচেয়ে বড় হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পরের বছর তাদের ছয়টি পারমাণবিক অস্ত্র ধ্বংস করা হয়। আরো দুই বছর পর পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার ঠেকাতে একটি চুক্তিতে (এনপিটি) নাম লেখায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এর মধ্য দিয়ে পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন দেশ হিসেবে পরিচিতি পায় আফ্রিকার দেশটি। রাশিয়ার হাতে আনুমানিক ৫ হাজার ৯৭৭টি পারমাণবিক অস্ত্র আছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৮৮টি বর্তমানে মোতায়েন করা আছে। এর মানে, এই অস্ত্রগুলো হয় আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রে (আইসিবিএম) যুক্ত রয়েছে অথবা ভারী বোমারু বিমানের ঘাঁটিগুলোতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।