হাছান মাহমুদ : সেই নৈরাজ্যের পথেই হাঁটছে বিএনপি

আগের সংবাদ

ভূরাজনীতির ফাঁদে প্রত্যাবাসন! রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে এডিটরস গিল্ডের গোলটেবিল বৈঠক : ৫ বছরে সংকট আরো বেড়েছে

পরের সংবাদ

‘আমি ফিল্ম ওয়ার্কার’

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

স্বপ্নবাজ নির্মাতা যুবরাজ শামীম। গণঅর্থায়নে নির্মিত ‘আদিম’ তার পরিচালিত
প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র মস্কো চলচ্চিত্র উৎসব জয় করে ফিরেছে।
এ নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন রাশেদ রায়হান
‘আদিম’ দুটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে, কেমন লাগছে?
একই সঙ্গে আনন্দও লাগছে আবার দুঃখও আছে। আনন্দ হচ্ছে কারণ ‘আদিম’ নিয়ে মানুষ কথা বলছে। নিউজ হচ্ছে। যেখানেই যাই মানুষ ‘আদিম’ সম্পর্কে জানে। ‘আদিম’ নিয়ে মানুষ উদপযাপন করছে। তাদের উচ্ছ¡াস দেখে মনে হচ্ছে এই অর্জন তাদের। এটা আমার কাছে খুব ভালো লাগছে। আর দুঃখের বিষয় হচ্ছে, প্রত্যেকটি মানুষের নিজের সঙ্গে আত্মসংযোগ দরকার হয়। এটা থাকলে আমি গল্প লিখতে পারব। যা কিছু চিন্তা আসে তা প্রয়োগ করতে পারব। সেই মস্কো থেকে এখন পর্যন্ত মানুষের উচ্ছ¡াস আর প্রশংসায় ভাসছি। কিন্তু নিজের সঙ্গে কোনো সংযোগ খুঁজে পাচ্ছি না। এখন অপেক্ষা করছি আবার আগের অনুভূতিতে ফিরে যাওয়ার। যাতে আগের মতো কাজ করতে পারি, লিখতে পারি।

‘আদিম’র শিল্পীরা পুরস্কার প্রাপ্তি কীভাবে নিয়েছে?
ওনারা খুবই উত্তেজিত। কাজ করার সময় অনেকেই তাদের নিয়ে হাসাহাসি করেছে। এখন সেই মানুষগুলোই ওনারদের প্রশংসা করছে। নিউজ দেখে তাদের কথা বলছে। সবকিছু মিলিয়ে তারা খুব খুশি। ওনাদের মধ্যে দুজন টিভি নাটকে অভিনয়ও করেছে। ওনাদের সঙ্গে সাংবাদিকরা কথা বলেছেন। সবমিলিয়ে তারা অনেক উচ্ছ¡সিত।

কাজ করতে গিয়ে কোনো প্রতিকূলতায় পড়েছেন?
স্বাধীন নির্মাতাদের নানান প্রতিকূলতার মধ্যে পড়তে হয়। একসময় টাকা শেষ হয়ে গেলে শুটিং বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৭ সাল পুরোটা বস্তিতে ছিলাম। ২০১৮ এর শীতে শুটিং শুরু করি। মার্চ মাসে শীত চলে গেলে আমাকে পরের বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় শীতের জন্য। তারপর আবার শুটিং করি। সুজন মাহমুদ সাউন্ডের কাজ করার জন্য এগিয়ে আসে । সবকিছু মিলিয়ে মানুষের সহযোগিতায় আদিম নির্মাণ হয়েছে।

অভিনয়শিল্পীরা কেউ
পেশাদার নন…
আমরা তো প্রত্যেকেই অভিনয় শিল্পী। পৃথিবী একটা মঞ্চ, আমরা সবাই এখানে অভিনয় করি। এখন সেই অভিনয়টাকে ক্যামেরার সামনে নিয়ে আসা চ্যালেঞ্জ ছিল। আমি চেয়েছি এই গল্পটা যাদের সঙ্গে মিলে যায় তাদের জীবনটাই দেখাতে। তারা যেরকম সেভাবেই ক্যামেরার সামনে এনেছি। তবে অভিনয়েরর জন্য যাকেই নির্বাচন করেছি সেটা সেই করেছে তেমন হয়নি। দেখা গেছে, একটি চরিত্রের জন্য আমাকে বিশের অধিক মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হয়েছে। তারপরে তাদের রাজি করিয়ে, রিহার্সাল করিয়েছি। অনেকে রিহার্সালে শেষ পর্যন্ত থেকেছে আবার কেউ চলে গেছে।

‘আদিম’ দেশে মুক্তির
কথা ভাবছেন?
জ্বী আমি ভাবছি এটা। নানান জায়গা থেকে মানুষ আদিম দেখার আগ্রহ প্রকাশ করছে। তবে এটার সদুত্তর দিতে পারছি না কবে দেশে মুক্তি দিতে পারব। কারণ সিনেমা মুক্তি দিতে গেলে যে প্রক্রিয়ায় মধ্য দিয়ে যেতে হবে। ওগুলো করার মতো টাকা এখন নেই। আগামী বছরের শুরুর দিকে মুক্তি দেয়ার চেষ্টা করব।
‘আদিম’ নিয়ে আর কী প্রত্যাশা?
‘আদিম’ নিয়ে যতটুকু পেয়েছি এটাই আশা করিনি।
সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ইরানের ফজর ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে যাব। আমি আসলে এগুলো নিয়ে ভাবছি না। কাজ করে যেতে চাই। যা পেয়েছি এটাই প্রত্যাশার বাইরে।

মূল ধারার বাইরে…
আমি নিজেকে ফিল্ম মেকার ভাবিনা। আমি ফিল্ম ওয়ার্কার। সিনেমা আমার মানসিক প্রশান্তির জায়গা। আমার সিনেমার সঙ্গে থাকতে ভালো লাগে। টাকা-পয়সা লাগবে এটা ভাবি না। যেমন আমার অনেক প্রযোজকের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা একটা গল্প ধরিয়ে দিবে। তারা আমাকে যন্ত্রণা দিবে। শুটিং শেষ করার তাড়া দিবে। এটা আমার ভালোলাগে না। তথাকথিত প্রযোজক ছিল না বলেই আমার আদিম নির্মাণে পাঁচ বছর সময় লাগছে কেউ এসে জিজ্ঞেস করেনি সিনেমা রিলিজ দাওনি কেন। শেয়ার হোল্ডাররাও জিজ্ঞেস করেনি। বরং টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছে। সবকিছু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হয়। কিন্তু যখন প্রযোজক থাকবে তখন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারব না। আর এই পরাধীনতার জন্যই কমার্শিয়াল কাজ আমার ভালোলাগে না।

সিনেমা নিয়ে ভবিষ্যৎ
পরিকল্পনা কী?
ভবিষ্যৎ কোনো পরিকল্পনা নেই। সিনেমার সঙ্গে থাকতে চাই। আর সুস্থ থাকতে চাই। যাতে সবসময় কাজের মধ্যে থাকতে পারি। যদি কোনো প্রযোজকের সঙ্গে যুক্ত হতে পারি। তাদের কাছ থেকে পূর্ণ স্বাধীনতা পাই। তাহলে কাজ করব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়