২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু : হাসপাতালে ভর্তি ৩৫৩

আগের সংবাদ

সমান সুযোগের রূপরেখা নেই : ইসির রোডম্যাপ

পরের সংবাদ

টাকার রেকর্ড দরপতনের ধাক্কা পুঁজিবাজারে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জুলাইয়ের শেষ দিন থেকে ঊর্ধ্বমুখী পুঁজিবাজার চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে এমনিতেই নানামুখী চাপে। নানা গুজব, গুঞ্জন, পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে দ্ব›দ্বসহ নানা ইস্যুতে শতাধিক কোম্পানির শেয়ারের দর কমতে কমতে ফ্লোর প্রাইস ছুঁয়ে গেছে। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমিয়ে দেয় ১০ টাকা ১৫ পয়সা। তার আগের দিন এটি ছিল ৯৬ টাকা। সেটি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৬ টাকা ১৫ পয়সা। আর গতকাল বুধবার শুরু থেকেই সূচকের ওঠানামা করতে করতে চলতে থাকা লেনদেনের শেষ সময়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিক্রয়ের চাপ দেখা দেয়। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ সূচক আগের দিনের চেয়ে ৩ পয়েন্ট বেশি ছিল। বেলা ১টায় তা কমে যায় ২৪ পয়েন্ট। এর পরের ৫০ মিনিটে পতন হয় আরো ২৬ পয়েন্টের বেশি। শেষ পর্যন্ত আগের দিনের চেয়ে ৫০ পয়েন্ট হারিয়ে সূচকের অবস্থান নেমে যায় সাড়ে ৬ হাজারের নিচে, তবে লেনদেন শেষ হওয়ার দুই মিনিট আগে সূচক পড়ে যায় ৬৫ পয়েন্ট। শেষ মুহূর্তের সমন্বয়ের কারণে আসলে সেখান থেকে ১৫ পয়েন্ট যোগ হয়েছে। এতে বেড়েছে ৭২ কোম্পানির দর, কমেছে ১৭৫টির। আর ১২৪টি লেনদেন হয়েছে আগের দিনের দরে, যেগুলোর সিংহভাগই আসলে ফ্লোর প্রাইসে। ফলে কমার সুযোগ নেই। লেনদেন নেমে এসেছে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে সর্বনি¤œ অবস্থানে। গত ২৪ আগস্ট হাতবদল হয় ১ হাজার ১৩৩ কোটি ৭১ লাখ ৬২ হাজার টাকা। আর গতকাল বুধবার হাতবদল হয়েছে ১ হাজার ৩০৭ কোটি ৭৮ লাখ ১৪ হাজার টাকা।
সূচকের পতনের এই দিনে লোকসানি ও স্বল্প মূলধনী বেশ কিছু কোম্পানির রমরমা অবস্থা দেখা গেছে। অদূর ভবিষ্যতেও লভ্যাংশ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই, এমন বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ারদর দিনের সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে লেনদেন হতে দেখা গেছে। অন্যদিকে শক্তিশালী মৌল ভিত্তির অনেক কোম্পানির শেয়ার হাতবদল হচ্ছে ফ্লোর প্রাইসে। যেগুলো ফ্লোরের চেয়ে বেশি ছিল, তার মধ্যে অনেকগুলো দর হারিয়েছে এদিন।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টাকার এত বড় দরপতনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে উৎপাদন খাত। আমদানি করা কাঁচামালের দাম বেড়ে যাবে ১০ শতাংশ, কিন্তু মূল্যস্ফীতির চাপে থাকা দেশে পণ্যমূল্য আরও বাড়ালে চাহিদা কমে গিয়ে বিক্রিতে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এতে কোম্পানির মুনাফা কমে যাবে। এই আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার ছেড়ে দিতে চাইছেন। পুঁজিবাজারের এই পরিস্থিতি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে দীর্ঘ দর সংশোধন শুরু হওয়ার স্মৃতি মনে করিয়ে দিচ্ছে।
সোয়া এক বছরের উত্থান শেষে ওই বছরের ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ সূচক ৭৮ পয়েন্ট বেড়ে গিয়েও পরে সেখান থেকে অবিশ্বাস্যভাবে ১২৪ পয়েন্ট হারিয়ে শেষ পর্যন্ত ৫৬ পয়েন্টে নেমেছিল। সে সময় চাপে পড়েছিল পুঁজিবাজার। সেখান থেকে আর বের হয়ে আসা হয়নি। এরপরও কয়েক দিন সূচক বেড়েছিল বড় মূলধনী অল্প কিছু কোম্পানির শেয়ারদর তরতর করে বাড়ার কারণে। দীর্ঘ সংশোধন এবং এরপর ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতনের ধাক্কা কাটিয়ে এবারও পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ানোর মধ্যে ৪ সেপ্টেম্বর ঘটে একই ধরনের ঘটনা।
৩১ জুলাই থেকে টানা ঊর্ধ্বমুখী বাজারে সেদিনও সূচক একপর্যায়ে ৭৮ পয়েন্ট বেড়ে শেষ পর্যন্ত ১৮ পয়েন্ট পতনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় লেনদেন। সেদিন থেকে পুঁজিবাজারে আবার বিভ্রান্তি শুরু হয়, তবে আগের বছরের মতোই বড় মূলধনী কয়েক কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির পাশাপাশি দর হারাচ্ছে বিপুলসংখ্যক কোম্পানি। ফলে কোনো কোনো দিন সূচক বাড়লেও বিনিয়োগকারীদের হতাশা কাটছে না। ৪ সেপ্টেম্বর এবং তারও আগে থেকে দেখা যাচ্ছে, যেদিন সূচক লাফ দিয়েছে, সেদিনও কমেছে সিংহভাগ কোম্পানির দর। আর যেদিন সূচকের পতন হয়, সেদিন তো কথাই নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়