বাম গণতান্ত্রিক জোটের হুঁশিয়ারি : দমন-পীড়ন করে গদি রক্ষা করা যাবে না

আগের সংবাদ

চার কারণে ভ্যাট আদায়ে বিপর্যয়

পরের সংবাদ

কবিতা মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও জীবনকে ধারণ করে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কবিতা মানুষের আত্মাকে সুন্দর ও পরিশুদ্ধ করে; তাই কবিতা একটি মহান শিল্পকলা। তাই আমি বিশ্বাস করি, কবিতা শুধু তাদের জন্য; যারা নিজের হৃদয় ও মস্তিষ্কে ধারণ করেন সৌন্দর্য ও জ্ঞান। যারা গভীরভাবে চিন্তাশীল, সৌন্দর্যপিপাসু ও জ্ঞানান্বেষক এবং সৃজনশীল; কবিতা তাদের জন্য।
পৃথিবীতে সৃজনশীলতার যত উদাহরণ রয়েছে, তার মধ্যে কবিতাই বোধ করি সবচেয়ে অধিকতর সমাদৃত এবং সৃজনশীলতায় ভরপুর এক নান্দনিক শিল্পকলা। তাই তো হাজার বছর ধরে সৃজনশীলতার সবচেয়ে নান্দনিক শাখার অভিজ্ঞান হিসেবে কবিতাই অগ্রগামী শিল্পমাধ্যমের মর্যাদা অর্জন করেছে।
শিল্পোত্তীর্ণ কবিতা রচনার অভিপ্রায়ে এই গ্রন্থভুক্ত ৩৩টি কবিতাই প্রায় তিন দশকের দীর্ঘ বিরতিতে রচিত হয়েছে (২০১৮-২০২১)। এর কারণ সম্ভবত এই যে আজ থেকে ৩০ বছর আগে কৈশোর থেকে যৌবনে পদার্পণ করার সেই হিরণ¥য় সময়ে; যে সময়টাতে কবিতা সাইক্লোনের মতো আপাদমস্তক লণ্ডভণ্ড করে দিতো মস্তিষ্ক ও হৃদয়; রক্তে এক দুর্নিবার আলোড়ন তুলত কবিতা; প্রতিমুহূর্তে হৃদয়ে অনুরণন তুলত প্রথম প্রেমের মাদকতা ও দ্রোহ; প্রতিনিয়তই কলম প্রসব করে চলত একেকটি প্রিয় কবিতা, তখনো আসলে আমি বুঝতে পারিনি কবিতা কী! আর যখন বুঝতে পেরেছি কবিতা কি; তখন কলম থেমে গেছে আচমকা। বোধ করতে শুরু করেছি যে একটি কবিতা রচনা করার জন্য আসলে প্রথম কাজ হলো কবিতা কী, সেটা বোঝার জন্য কবিতা অধ্যয়ন করা এবং তারপর নিজেকে কবিতা রচনার জন্য যোগ্য করে তোলা।
তাই বলা চলে, দীর্ঘ প্রায় তিন দশকের পুরোটাই আমি কবিতা বোঝার চেষ্টা করেছি; অধ্যয়ন করেছি; সর্বোপরি একটি কবিতা রচনা করার জন্য নিজেকে যোগ্য করে তুলতে চেষ্টা করেছি। কোনো কোনো কবিতা রচনা করতে এমনকি আমাকে এক যুগের অধিককাল পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ ও চিন্তা করতে হয়েছে।
তারপরও এ কথা সত্য যে এ গ্রন্থে গ্রন্থিত আমার কোনো কোনো কবিতা; এমনকি সব কবিতাই হতে পারে অকবিতার জঞ্জাল; কোনো কোনোটি অথবা সবই কবিতার মানের বিচারে উত্তীর্ণ না-ও হতে পারে; তবু এই কবিতাগুলোই আমার সুদীর্ঘ নান্দনিক চিন্তা ও পর্যবেক্ষণের সোনালি ফসল। এই কবিতাগুলো আমার কাছে যতটুকু প্রিয় হয়ে উঠেছে; তার চেয়েও অধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এই কারণে যে এগুলোর প্রায় প্রতিটিই তার বিষয়-বৈচিত্র্য এবং বক্তব্যের দিক দিয়ে একেকটি নিরীক্ষার ভেতর দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে আজ ছাপার অক্ষরে নিজের রূপ পরিগ্রহ করেছে। বলা যায়, মানুষ প্রকৃতি রাষ্ট্র, রাজনীতি, সমাজ, ধর্ম, প্রেম, কাম, শরীর ইত্যাদি বিষয়ে আমার চিন্তা ও পর্যবেক্ষণ; আমার দর্শন মূর্ত হয়ে উঠেছে এই কবিতাগুলোতে।
আধুনিক বাংলা কবিতার রেনেসাঁর সময়; বিশেষ করে বাংলা সাহিত্যের সমসাময়িক ও প্রধান পাঁচজন কবি যারা বাংলা কবিতাকে তাদের চিন্তা, দর্শন ও নিরীক্ষার আলোকে সমৃদ্ধ করেছেন; তাদের মাধ্যমে বর্জিত হয়েছে বহুল ব্যবহৃত আমার অনেক প্রিয় কিছু শব্দ; আর আমার দৃষ্টিতে বাংলা কবিতা অনেকটাই তার শ্রী হারিয়েছে সেখানেই; কেননা, আমি মনে করি সেই বর্জিত শব্দগুলো আজো সমসাময়িক সামাজিক ও রাজনৈতিক এবং সাহিত্যের প্রেক্ষাপটে সমান গুরুত্ব ও সমান অর্থই প্রকাশ করে। এমনও মনে হয়, কোনো কোনো শব্দ বরং আগের চেয়েও অধিক অর্থবোধক এবং আগের চেয়েও অধিক বেদনা বহন করতে সক্ষম। তাই আমি আমার গানে ও কবিতায় এই বর্জিত শব্দগুলোর প্রতি ভালোবাসা ও মায়ার কারণে তাদের ব্যবহার করতে প্রয়াসী হয়েছি এবং আমার মনে হয় পাঠক ও সময়, এই দুই-ই এদের ভাগ্যবিধাতা; কয়েকজন কবিমাত্র এর ভাগ্যবিধাতা হতে পারে না।
হাজার বছরের পুরনো সভ্যতা যেমন ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে আজকের অবস্থানে এসে পৌঁছেছে; তেমনি কবিতাও ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমেই আজকের অবস্থানে এসে পৌঁছেছে।
বাংলা ভাষায় রচিত প্রাচীন সাহিত্যের নিদর্শন হিসেবে কবিতার যতটুকু আজ পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে; তন্মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন বাংলা কবিতার মর্যাদায় রয়েছে ‘চর্যাপদ’, যা মূলত একটি গীতিপদাবলি। ধারণা করা হয় যে, ‘চর্যাপদ’ রচিত হয়েছে খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দী থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যে। কিন্তু অন্যান্য ভাষায় কবিতার ইতিহাস আরো অনেক প্রাচীন। এমনকি পাশ্চাত্য সাহিত্যধারার সূচনাকারী প্রাচীন গ্রিক মহাকবি হোমারের কাব্য রচনার কালও মতান্তরে খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দীর দিকে।
সুতরাং কবিতাকে আজকের পর্যায়ে আসতে অনেক দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হয়েছে এবং তাকে যেতে হয়েছে বিভিন্ন সময়ের বহু বিবর্তন এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার ভেতর দিয়ে। এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং বিবর্তনের মাধ্যমেই কবিতা পরিশীলিত, সমৃদ্ধ এবং উন্নত হয়েছে এবং বর্তমান আধুনিক কবিতার রূপ পরিগ্রহ করেছে। কবিতার এই বিবর্তন কালে কালে চলমান ছিল; আছে এবং থাকবে। বাংলা ভাষায় রচিত কবিতা শুধু নয়; বিশ্বের সব ভাষার কবিতার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
কবিতা শুধু সমকালকে ধারণ করে; এমন নয়। কবিতা অতীত ইতিহাস, বর্তমান, এমনকি ভবিষ্যতের সমাজ, দর্শন, রাজনীতি, ধর্ম, প্রেম, দ্রোহ, সৌন্দর্যসহ পৃথিবী এবং মহাপৃথিবীর তাবৎ বিষয়কে ধারণ করে। এমন কোনো বিষয় নেই, কবিতা যাকে ধারণ করে না। কবিতা তাই শুধু বর্তমানেরই নয়; কবিতা চিরকালীন এবং পূর্ণাঙ্গ এক শিল্প। শিল্পকলার কোনো ধারাই সম্ভবত কবিতার অসংখ্য লেখক ও পাঠকের মতো এত বিপুল মানুষের অংশগ্রহণে সমৃদ্ধ হয়নি। কারণ কবিতা মানুষের সৌন্দর্যবোধ ও জ্ঞানের প্রতি অভীপ্সাকে প্রবল করে তোলে এবং মানুষ এর প্রতিমুহূর্তেই মোহগ্রস্ত হয়ে পড়ে। সেই দিক থেকে কবিতা এক ঐন্দ্রজালিক শক্তির অধিকারী। কবিতা মানুষের হৃদয়ের অনুক্ত অনুভূতির কথা বলে; তাই তো মানুষ সুখে এবং দুঃখে একান্তভাবে কবিতার কাছেই আশ্রয় গ্রহণ করে।
সব কবিই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কবিতা রচনা করেন এবং কেউ কেউ বিশেষ কোনো বিষয় নিয়ে লিখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। সেজন্যই কেউ পরিচিত হন প্রেমের কবি নামে আর কেউ বা পরিচিত হন দ্রোহের কবি কিংবা প্রকৃতির কবি নামে।
বাংলা এবং পৃথিবীর বেশির ভাগ ভাষার কবিতার আদি পুস্তকে অন্যান্য অনেক বিষয়ের মধ্যে প্রাধান্য পেয়েছে প্রেম ও শরীর এবং প্রকৃতি। এ কয়েকটি বিষয়ই এখন পর্যন্ত কবিদের লেখার এবং চিন্তার প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং এ বিষয়গুলোকে কবিতায় অত্যন্ত সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা ও বিন্যাস করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে বাংলা কবিতায় প্রকৃতি ও প্রেমকে যতটা মাধুর্যময় ও মহান এবং পবিত্রভাবে বর্ণিত এবং চিত্রিত করা হয়েছে; শরীরকে ততটাই পাশ কাটিয়ে নীরব রাখা হয়েছে।
আধুনিক বাংলা কবিতায় গুটি কয়েক কবি ব্যতীত কবিতায় শরীরকে বিশেষভাবে প্রাধান্য দিয়েছেন এমনটা দেখা যায় না। আর শরীরকে প্রাধান্য দিলেও কামকে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। যদিও আমার দৃষ্টিতে, প্রেম এবং কাম পারস্পরিকভাবে অবিচ্ছেদ্য এবং নর-নারীর প্রেমে শরীর এবং কামকে উপেক্ষা করার কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। বরং কাম এক মহান সৌন্দর্য; যাকে সচরাচর ভোগের চোখে দেখে থাকেন অনেকেই এবং উপভোগের অনুভূতি ক্রিয়াশীল থাকলেও সেই অনুভূতিকে নির্মমভাবে গোপনীয়তার বেড়াজালে আটকে রাখেন। প্রেম যতটা মহান ও সুন্দর; কাম তার চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়; বরং এটি চিরন্তনভাবে অবিচ্ছেদ্য একটি বিষয়।
পাশ্চাত্য জীবনধারা ও সাহিত্য-সংস্কৃতির কথা দূরে রাখলেও আমাদের পাক-ভারত উপমহাদেশে কিন্তু মানুষের জীবনধারা ও সংস্কৃতিতে কামের গুরুত্ব, মাহাত্ম্য ও সৌন্দর্য গোপনীয়তার বেড়াজালে আটকে থাকেনি। আমরা যতটুকু গোপন রেখেছি কবিতায়; গুহাচিত্র ও মন্দিরের দেয়ালচিত্রে তা প্রকাশিত হয়েছে তার চেয়ে ঢের বেশি। ভারতের অজন্তা, কোনারক, ইলোরা এবং বিশেষ করে খাজুরাহোর মন্দিরের দেয়ালে দেয়ালে তার নির্বাক প্রমাণ বিদ্যমান।
তাহলে আদিপুস্তকে কামের সৌন্দর্য, গুরুত্ব এবং মাহাত্ম্য উদ্ধৃত থাকলে আধুনিক কবিতায় কাম উপেক্ষিত থাকছে কেন, এ বিষয়টি একটি বিরাট প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আমার সামনে। তাহলে কি আমাদের ব্যক্তি ও সমাজজীবনে কামের কোনোই অস্তিত্ব নেই! এ কথার তো কোনো যুক্তি থাকতে পারে না! নর-নারীর মধ্যে প্রেমের অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকা অবস্থায় কামকে কোনোভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই; কেননা, এ দুটি পারস্পরিকভাবে অবিচ্ছেদ্য বিষয়। তাই কবিতা যেহেতু ব্যক্তি, সমাজ এবং সময়কে ধারণ করে; মানুষের সমগ্র অনুক্ত চিন্তা ও ভাবনাকে ধারণ করে; সেহেতু কবিতায় কামের অনুপস্থিতি থাকার কথা নয়। কেন এ বিষয়টি আধুনিক বাংলা কবিতায় উপেক্ষিত থাকছে, সেটি নিয়ে গবেষণা হতে পারে; তবে আমি মনে করি আধুনিক কবিতার বিষয় হিসেবে কামকেও প্রেমের মতোই গুরুত্ব দিয়ে মূল্যায়ন করা অত্যাবশ্যক এবং আধুনিক কবিদের কবিতা রচনায় রিরংসার গোপন সৌন্দর্যের বর্ণনা প্রয়োগের মাধ্যমে আরো অনেক সাহসী ভূমিকা রাখা উচিত।
দীর্ঘ সময় ধরে উপেক্ষিত এই শরীর ও কামই প্রেমের পাশাপাশি অধিকতর গুরুত্ব পেয়েছে আমার কবিতায়। নর-নারীর প্রেম ও শরীর এবং তার গোপন সৌন্দর্য এবং আমাদের জীবনযাপন ও মনোজগতে তার আবেদনই আমার কবিতার মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। প্রেম ও শরীরবিষয়ক আমার কবিতাগুলোর মাধ্যমে আমি একটি নিরীক্ষা করতে চেয়েছি যে বাস্তবিক অর্থেই আমাদের মধ্যে কবিতায় কামের প্রতি আকর্ষণ রয়েছে কি না; এই কবিতাগুলোকে পাঠক গ্রহণ করে কি না! দেখতে চেয়েছি কামকে অস্বীকার করে আমাদের জীবনে এবং কবিতায় কোনো পূর্ণতা আসতে পারে কি না!
ওপরে উল্লেখিত নবম শতাব্দীতে ভারতবর্ষে কামকে যেভাবে মহিমান্বিত ও প্রকাশিত করা হয়েছিল, তা এখনো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বর্তমান আছে কিন্তু কবিতায় অত্যন্ত আশ্চর্য ও রহস্যজনকভাবে তার কোনো প্রতিফলন খুঁজে পাওয়া যায় না! জীবন ও কবিতা থেকে কাম উধাও হয়ে গেছে; যা মোটেই বিশ্বাসযোগ্য নয়! তাই আমার মনে হয় আধুনিক বাংলা কবিতায় কামের বর্জনের মাধ্যমে মূলত মানুষের জীবনের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে অযৌক্তিকভাবে বর্জন করা হয়েছে; যা বাংলা কবিতাকে একরকম অসম্পূর্ণতা দান করেছে এবং সময়ের বিচারে ভবিষ্যতে তা ইতিহাস সচেতনতাকেও হয়তোবা প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলবে।
কবিতায় কামের প্রয়োগকে অনেকে অশ্লীল বলে মনে করেন। যদিও-বা অশ্লীলতাকে মোটামুটিভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়, তথাপি অশ্লীলতার কোনো পরিধি নেই; আর অশ্লীলতাকে পরিধি বা সীমায় আবদ্ধ করাও সম্ভব নয়। রিরংসা কখনোই অশ্লীল হতে পারে না। যদি তা-ই হতো, তবে আমরা এই রিরংসাকে আমাদের শরীরে ও হৃদয়ে লালন করছি কেন; আর আমাদের প্রতিদিনকার জীবনে এর প্রয়োগই-বা করছি কেন?
একটি কবিতায় একজনের কাছে রিরংসা কিংবা যৌনতার বর্ণনা অশ্লীল হিসেবে মনে হতে পারে, আবার অপরজনের কাছে তা অশ্লীল বলে মনে না-ও হতে পারে। তাই কবিতায় আমি কোনো অশ্লীলতায় বিশ্বাস করি না। অশ্লীলতা একটি দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়। কবিতায় অশ্লীলতা বলতে যদি কিছু থেকেই থাকে, তবে তা কবিতার সৌন্দর্যের জন্য আবশ্যক কিংবা অনিবার্য বলেই তা প্রয়োগ করা হয়েছে বলেই ধরে নিতে হবে; আর একজন কবিতা নির্মাতাই জানেন তিনি তার কবিতাকে কীভাবে পাঠকের সামনে উপস্থাপন করবেন; আর সেখানে কতটা যৌনতার সৌন্দর্য মেশাবেন। পাঠক এর কতটা গ্রহণ কিংবা কতটা বর্জন করবেন, সে সিদ্ধান্ত পাঠকই নেবেন। পাঠকের কাছে গ্রহণীয় হয়ে ওঠাই কবিতা ও কবির সার্থকতা।
আমার বক্তব্য হলো, একটি কবিতা কোনো কোনো পাঠকের বিচারে অশ্লীল হলেও সাহিত্য কিংবা অপরাপর পাঠকের ভালো লাগার মানদণ্ডে তা উত্তীর্ণ ও গ্রহণযোগ্য হতে পারে; কেননা, অশ্লীলতা মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও জীবনেরই অংশ; আর কবিতা মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও জীবনকেই ধারণ করে। তাহলে কবিতায় তথাকথিত অশ্লীলতার কতটুকু প্রয়োজন কিংবা ভূমিকা রয়েছে? হয়তো পাঠক ও সময়ই এর উত্তর দেবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়