৪ বোন চুরি করেই পালাত অন্য জেলায়

আগের সংবাদ

সফরে প্রাপ্তির পাল্লাই ভারী

পরের সংবাদ

লিজ ট্রাসের নতুন মন্ত্রিসভা : শীর্ষ ৪ পদে এই প্রথম নেই শ্বেতাঙ্গ পুরুষ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস গত মঙ্গলবার দায়িত্ব গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মন্ত্রিসভা গঠন করেন। তার মন্ত্রিসভায় রয়েছে বেশ কিছু চমক। এই প্রথম দেশটির কোনো সরকারের গুরুত্বপূর্ণ চার পদে নেই কোনো শ্বেতাঙ্গ পুরুষ। খবর রয়টার্সের।
নতুন সরকারের প্রধান লিজ ট্রাস শ্বেতাঙ্গ হলেও তিনি একজন নারী। স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ডে বেড়ে উঠেছেন তিনি। ব্রিটেনের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ অর্থমন্ত্রী হিসেবে কোয়াসি কোয়ার্টেংকে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাস। তার মা-বাবা ১৯৬০-এর দশকে ঘানা থেকে এই দেশে এসেছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন জেমস ক্লিভারলি। তার মা সিয়েরা লিওন বংশোদ্ভূত আর বাবা একজন শ্বেতাঙ্গ। মিশ্রবর্ণের শিশু হওয়ায় তাকে নিগৃহীত হতে হয়েছিল বলে অতীতে অভিযোগ করেছেন তিনি। কৃষ্ণাঙ্গ ভোট পেতে তার দল কনজারভেটিভ পার্টির আরো বেশি কিছু করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন ক্লিভারলি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ দেয়া হয়েছে সুয়েলা ব্রাভারম্যানকে। ছয় দশক আগে তার মা-বাবা কেনিয়া ও মরিশাস থেকে ব্রিটেনে পাড়ি জমান। জাতিগত সংখ্যালঘু স¤প্রদায় থেকে দ্বিতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রীতি প্যাটেলের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তিনি। সুয়েলা পুলিশ ও অভিবাসন বিভাগের দেখভালের দায়িত্বে থাকবেন।
মাত্র কয়েক দশক আগেও ব্রিটেনের সরকারগুলোর অধিকাংশ সদস্যই ছিলেন শ্বেতাঙ্গ। জাতিগত সংখ্যালঘু থেকে মন্ত্রী নিয়োগ দিতে ২০০২ সাল পর্যন্ত সময় লেগেছিল দেশটির। ওই বছর পল বোয়েটেং অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
নতুন অর্থমন্ত্রী কোয়ার্টেংয়ের পূর্বসূরি ছিলেন ঋষি সুনাক। তার মা-বাবা ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তিনি কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব ও প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে চূড়ান্ত ধাপে এসে ট্রাসের কাছে হেরে যান।
নির্দলীয় চিন্তক প্রতিষ্ঠান ‘ব্রিটিশ ফিউচারের’ পরিচালক সুন্দর কাটওয়ালা বলেন, ‘রাজনীতিই এই গতি ঠিক করে দেয়। আমরা এখন এই বৈচিত্র্যকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখছি। পরিবর্তনের এই গতি অসাধারণ।’
অবশ্য এখনো বাণিজ্য, বিচার বিভাগ, সিভিল সার্ভিস ও সামরিক বাহিনীর শীর্ষ স্থানীয় পদগুলোতে শ্বেতাঙ্গদেরই প্রাধান্য রয়েছে।
বৈচিত্র্যের বিষয়টি সামনে এনে প্রচারণা চালালেও কনজারভেটিভ পার্টির আইন প্রণেতাদের (এমপি) মাত্র একচতুর্থাংশ নারী আর জাতিগত সংখ্যালঘু সদস্য মাত্র ৬ শতাংশ।
সদ্যঘোষিত মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মন্ত্রিসভার অনেকে। তাদের একজন সাবেক বিচার বিষয়কমন্ত্রী ডোমিনিক রাব। নতুন মন্ত্রীদের তালিকায় নেই সাবেক পরিবহনমন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপস ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্টিভ বার্কলে।
সাবেক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়কমন্ত্রী পেনি মরডান্টকে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নি¤œকক্ষ হাউস অব কমন্সের নেতার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। নতুন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়কমন্ত্রী হয়েছেন কেমি ব্যাডেনচ। কর্ম ও পেনশন বিষয়কমন্ত্রী হয়েছেন ক্লো স্মিথ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন কিট মাল্টহাউস।
ট্রাসকে দীর্ঘ সময় ধরে সমর্থন দিয়ে আসা জ্যাকব রিস-মগ ব্যবসা, জ্বালানি ও শিল্পকৌশল বিষয়কমন্ত্রী হয়েছেন। লেভেলিং আপ মন্ত্রণালয়ের হাল ধরছেন সিমন ক্লার্ক। আর অ্যানি-ম্যারি ট্রেভেলিয়ানকে পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে নতুন মন্ত্রিসভায় পরিবেশ বিষয়কমন্ত্রী হয়েছেন রনিল জয়াবর্দেনা। ব্রান্ডন লুইসকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বিচারবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের। অর্থমন্ত্রীর পদ ছেড়ে আন্তঃসরকার সম্পর্ক ও সমতা বিষয়কমন্ত্রী হয়েছেন নাদিম জাহাবি। গতবারের মতোই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিজের দখলে রেখেছেন বেন ওয়ালেস।
মন্ত্রিসভার অন্যদের মধ্যে ক্রিস হিটন-হ্যারিস নর্দান আয়ারল্যান্ড বিষয়কমন্ত্রী হয়েছেন। আলিস্টার জ্যাক ও রবার্ট বাকল্যান্ড যথাক্রমে স্কটল্যান্ড বিষয়কমন্ত্রী ও ওয়েলস বিষয়কমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন। ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির (টরি) চেয়ারম্যান ও দপ্তরবিহীনমন্ত্রী হয়েছেন জেক বেরি। অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন লর্ড ট্রু। মন্ত্রিসভায় কপ-২৬-এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের পদ ধরে রেখেছেন অলোক শর্মা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়