ভূমির কুতুবকে দেয়া হাইকোর্টের জামিন আপিলে বাতিল

আগের সংবাদ

তৃণমূলে সহিংসতা বাড়ছেই : দুই সপ্তাহে অন্তত ২০টি স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে, দলগুলোকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ বিশ্লেষকদের

পরের সংবাদ

সূচক বেড়েছে ৫১ পয়েন্ট : টানা উত্থানেও ঝিমিয়ে পড়েছে ব্যাংক খাত

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশের পুঁজিবাজারে উত্থান এক মাস ছাড়িয়েছে। এ সময়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫২৮ পয়েন্ট। তবে এই সুসময়েও ঝিমিয়ে পড়েছে ব্যাংক খাত। যদিও এই খাতের সার্বিক চিত্র আশা জাগানিয়া। এই খাতে না বাড়ছে শেয়ারদর, না আগ্রহ দেখা যাচ্ছে শেয়ার কেনায়।
গতকাল বৃহস্পতিবার ৫১ পয়েন্ট সূচক বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে গত ১৩ কর্মদিবসের মধ্যে বাড়ল ১২ দিন। গত ২৯ জুলাই থেকে শুরু হওয়া উত্থান পর্বে ২২ কর্মদিবসের মধ্যে সব মিলিয়ে বাড়ল ১৭ দিন। সূচকের অবস্থান এখন ৬ হাজার ৫০৮ পয়েন্ট, যা গত ১২ মের পর সর্বোচ্চ। সেদিন সূচকের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৫৬৫ পয়েন্ট।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ইউক্রেন যুদ্ধ, শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব, ডলারে বিপরীতে টাকার দরপতনসহ নানা ইস্যুতে পুঁজিবাজার গত ২৮ জুলাই ছয় হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে যাওয়ার পর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর দিন থেকে শুরু হয় উত্থান। এই উত্থানের পেছনে প্রধান ভূমিকায় ছিল ওষুধ ও রসায়ন, প্রকৌশল, সাধারণ ও জীবন বিমা, বস্ত্র আর্থিক প্রতিষ্ঠান, খাদ্য এবং বিবিধি খাতের কোম্পানিগুলো।
তবে শেয়ারদরের বিবেচনায় প্রতি বছর দারুণ লভ্যাংশ এবং কোম্পানিগুলোর মূল্য আয় অনুপাত আকর্ষণীয় অবস্থানে থাকলেও বিনিয়োগকারীরা এসব শেয়ারে ঝুঁকছেনই না।
গতকাল তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৭টির, কমেছে ৪টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১২টির। তবে যেসব কোম্পানির দর বেড়েছে তার মধ্যে ১২টিরই দর বেড়েছে কেবল ১০ পয়সা। অথচ এদিন একটি কোম্পানির দর ১০ শতাংশ, ৪টির ৯ শতাংশ, ৭টির ৮ শতাংশ, ৫টির ৬ ও ৫ শতাংশ করে, ৮টির ৪ শতাংশ, ৯টির দর বেড়েছে ৩ শতাংশ। এদিন সব মিলিয়ে বেড়েছে ১৭২টির দর, কমেছে ১৩১টির আর আগের দিনের দরে লেনদেন হয়েছে ৭৮টি।
সূচক বাড়লেও লেনদেন আগের দিনের চেয়ে কিছুটা কমেছে। দিন শেষে হাতবদল হওয়া শেয়ারের মূল্য দাঁড়ায় এক হাজার ৮৮৯ কোটি ৫২ লাখ ৪ হাজার টাকা, যা আগের দিন ছাড়িয়েছিল দুই হাজার কোটি টাকার ঘর। এ নিয়ে টানা ৫ দিন লেনদেন হলো পৌঁনে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি। খাতভিত্তিক লেনদেনের দিক দিয়ে এদিন সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। টানা শীর্ষে থাকা বস্ত্র থাকে লেনদেন একদিনই কমেছে ১০০ কোটি টাকার বেশি। তারপরও আড়াই শ কোটি টাকার বেশি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। দুই শ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে বিবিধ এবং প্রকৌশল খাতেও।
জানা গেছে- ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত আছে মোট ৩৩টি ব্যাংক। এর মধ্যে গত বছর দুটি ছাড়া বাকি সবগুলো লভ্যাংশ দিয়েছে। চলতি বছর অর্ধবার্ষিকের প্রকাশিত হিসাব অনুযায়ী ৩২টি কোম্পানিই মুনাফায় আছে। গত কয়েক বছর ধরেই মুনাফা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে ব্যাংক খাতে। এর মধ্যে চলতি বছর অর্ধবার্ষিকে ১৮টি ব্যাংক মুনাফা আরো বাড়াতে পেরেছে। দুটি ব্যাংকের মুনাফা একই আছে। আর কমেছে বাকি ১৩টির।
মূল্য আয়ের অনুপাত বা পিই রেশিও বিবেচনায় নিলে বোঝা যায় ব্যাংকের শেয়ারদর অন্যগুলোর তুলনায় কতটা কম। পুঁজিবাজারে কোনো কোম্পানির শেয়ারদরকে তার আয় দিয়ে ভাগ করলে এই অনুপাত পাওয়া যায়। অর্থাৎ যে হারে আয় করছে, সেটি বজায় থাকলে বর্তমান শেয়ারদর উঠে আসতে কত সময় লাগবে। পুঁজিবাজারে পিইরেশিও সাধারণত ১০ থেকে ১৫ কে আকর্ষণীয় বিবেচনা করা হয়। তবে ব্যাংক খাতে তা অনেকটাই কম।
কেবল চলতি বছরের হিসাব নয়, গত কয়েক বছরে ব্যাংকগুলোর শেয়ারদরের বিবেচনায় লভ্যাংশ এত ভালো ছিল যে, ব্যাংকে টাকা রাখার চেয়ে শেয়ার কিনে রেখেই বেশি লাভবান হয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এত কিছুর পরও উত্থানের এক মাসে সর্বাধিক লেনদেন হওয়া ২০টি কোম্পানির মধ্যে ব্যাংক খাতের কোনো কোম্পানিকে দেখা যায়নি বললেই চলে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়