করোনার ভুয়া রিপোর্ট : সাবরিনা-আরিফসহ আটজনের মামলার রায় ১৯ জুলাই

আগের সংবাদ

মসলার বাজারে ঈদের আঁচ : খুচরা বাজারে দামের উল্লম্ফন, ডলার সংকট ও এলসি জটিলতার অজুহাত

পরের সংবাদ

দরবার-ই-জহুরের অসামান্য স্রষ্টার জন্মশতবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা

প্রকাশিত: জুলাই ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঊনবিংশ শতকে ব্রিটিশ ভারতের কলকাতায় বাঙালি মুসলমানদের সাংবাদিকতার সূচনাপর্ব। সাংবাদিকতা ক্ষেত্রে সেই কালের পথিকৃৎদের অন্যতম একজন হচ্ছেন বরেণ্য ব্যক্তিত্ব জহুর হোসেন চৌধুরী। গত ২৭ জুন ২০২২ ছিল তার শততম জন্মদিন। প্রজ্ঞাসমৃদ্ধ ক্ষুরধার লেখনী, শাণিত ব্যঙ্গবিদ্রুপ, রসস্নিগ্ধতা, প্রখর রাজনীতিসচেতনতার ছাপ তার প্রতিটি লেখায় সুস্পষ্ট। সর্বদা শোষিত-বঞ্চিতের পক্ষে কলম ধরেছেন তিনি। তার লেখায় স্বদেশই শুধু নয়, আঞ্চলিক ও বিশ্বরাজনীতির ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ, পর্যালোচনা আমরা প্রত্যক্ষ করি এবং পাঠ করে উপকৃত, আলোকিত হই। ব্যক্তিজীবনে যেমন মজলিসী, তুখোড় আড্ডাবাজ ছিলেন, তার লেখাও ছিল তেমনি উপভোগ্য, তির্যক, রসে শ্লেষে শিল্পোত্তীর্ণ। সে এক অনন্য সম্মোহনী স্টাইল।
দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে তিনি কাজ করেছেন ১৯৪৭ পূর্ববর্তী কলকাতা ও সাতচল্লিশোত্তর পূর্ব বাংলার রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সংবাদপত্রে। সাংবাদিকতায় জহুর হোসেন চৌধুরীর সম্পৃক্ততা শুরু হয় কলকাতার ‘বুলবুল’ পত্রিকায়, যার সম্পাদক ছিলেন তার খালাতো ভাই কবি নজরুলের ঘনিষ্ঠ সুহৃদ হবীবুল্লাহ বাহার। পর্যায়ক্রমে তিনি কাজ করেন দ্য স্টেটসম্যান, কমরেড, স্টার অব ইন্ডিয়া, ঢাকায় স্থায়ী হওয়ার পর এখানকার উপাত্ত, পাকিস্তান অবজার্ভার, দৈনিক সংবাদ এবং কাউন্টার পয়েন্ট নামের সাময়িকীতে। দীর্ঘ ১৭ বছর সংবাদের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এই সাহসী কলমসৈনিক। আমৃত্যু ছিলেন সংবাদের অন্যতম পরিচালক। কিছুকাল সরকারি চাকরিও করেছেন তিনি। দৈনিক সংবাদে দীর্ঘদিন ধরে তিনি লিখেছেন অসামান্য জনপ্রিয় কলাম ‘দরবার-ই-জহুর’।
জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ‘দরবার-ই-জহুর কলাম’ নামে ২৪০ পৃষ্ঠার একটি মূল্যবান বই প্রকাশ করেছে আবিষ্কার প্রকাশনী। গত ২৭ জুন ২০২২ বইটির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে। প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। উল্লেখ্য, ৬৮ বছরের ঐতিহ্যগর্বী এই জাতীয় প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম তিনি। ছিলেন প্রথম অবৈতনিক সম্পাদক (১৯৫৪-১৯৫৬)।
এক সময় সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব জহুর হোসেন চৌধুরী। তিনি যুক্ত ছিলেন মুসলিম ছাত্রলীগ, র‌্যাডিক্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি, ন্যাপের রাজনীতির সঙ্গে। পাক-চীন মৈত্রী সমিতি এবং পাক-সোভিয়েত মৈত্রী প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও সদস্য ছিলেন। সাবেক পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের (ইপিইউজে) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। পূর্ব পাকিস্তানের অধিকারবঞ্চিত, শোষিত-নির্যাতিত মানুষের পক্ষে, বৈষম্য-অনাচারের বিরুদ্ধে সতত সোচ্চার ছিলেন। তার লেখায়ও ছিল প্রতিবাদের আগুন ও ঝঞ্ঝা।
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সাংবাদিক সমাজের সফল, সাহসী নেতৃত্বও তিনি দিয়েছেন। তিনি নেপথ্যে থেকে আওয়ামী লীগ ও বামপন্থিদের মধ্যে পাকিস্তানি স্বৈরশাসক আইয়ুব খানবিরোধী আন্দোলনের লক্ষে ঐক্যমোর্চা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার জন্ম ১৯২২ সালের ২৭ জুন। পৈতৃকবাস ছিল ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলার রামনগর গ্রাম। মৃত্যু ১৯৮০ সালের ১১ ডিসেম্বর। ১৯৮১ সালে তাকে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। পড়াশোনা করেছেন সিরাজগঞ্জের হাইস্কুল, কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে। ১৯৪২ সালে ইতিহাসে অনার্সসহ বিএ পাস করেন। গুরুতর অসুস্থতার কারণে এমএ পরীক্ষা দিতে পারেননি।
জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খানকে আহ্বায়ক করে গঠিত হয়েছে জন্মশতবর্ষ উদযাপন কমিটি ২০২২। সদ্য প্রকাশিত বইটিতে ‘শ্রদ্ধার্ঘ্য : জহুর হোসেন চৌধুরী’ শীর্ষক ভূমিকা লিখেছেন জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান। তিনি লিখেছেন :
“প্রথিতযশা সাংবাদিক ব্যক্তিত্ব জহুর হোসেন চৌধুরী বাঙালি মুসলমানদের সাংবাদিকতা চর্চার উন্মেষকালের অগ্রপথিকদের একজন। গভীর পাণ্ডিত্য, অসামান্য রসবোধ, সুললিত বাকভঙ্গি, অনবদ্য রচনাশৈলীর জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন। তাঁর লেখাগুলোতে রয়েছে স্বদেশের সমকালীন রাজনীতি ও সমাজ-ঘটনার নির্মোহ নির্লিপ্ত বিশ্লেষণ ও বিশদ পর্যালোচনা। এর পাশাপাশি বৈশ্বিক পটভূমির নিরিখে ঘটনাবলীর সূ² নিবিড় তাৎপর্য ও সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া তিনি তুলে ধরেছেন।
ছাত্রাবস্থায় আমি বাম ঘরানার রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলাম। প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার ফলে এই দিকে আমার ঝোঁক ও সংলগ্নতা ছিল। আমার আত্মীয় তৎকালীন দৈনিক পাকিস্তানের প্রথম বার্তা সম্পাদক মরহুম মোজাম্মেল হকের সুবাদে তৎকালীন প্রগতিচর্চার সার্কেলের সঙ্গে আমার মেলামেশার পথ প্রশস্ত হয়। এ কারণে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। ছাত্র থাকাকালীনই শ্রদ্ধেয় জহুর হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে আমার আলাপ পরিচয় হয়। তাঁর স্নেহধন্য হওয়ার বিরল সুযোগ ঘটে।
জহুর ভাই মানুষের সাম্যে বিশ্বাস করতেন। তাঁর লেখালেখিতে সেই দৃঢ় বিশ্বাসের অনিবার্য ও সুস্পষ্ট প্রতিফলন রয়েছে। অন্যায়, বৈষম্য, শোষণ, নিপীড়ন, অত্যাচারের বিরুদ্ধে তাঁর তীক্ষè লেখনী ছিল সর্বদা সোচ্চার। মানুষ হিসেবেও তিনি ছিলেন চমৎকার। কখনো কারো ওপর তাঁকে রাগ করতে দেখিনি। উন্নত রুচির শরিফ মানুষ ছিলেন। দৈনিক সংবাদে তাঁর জননন্দিত কলাম ‘দরবার-ই-জহুর’ আমাদের কাছে ছিল অত্যন্ত সুখপাঠ্য ও আকর্ষণীয়। ওই কলামের সাহিত্যমূল্যও অপরিসীম। তাঁর ব্যাপক পঠন-পাঠন, সমাজতান্ত্রিক চিন্তা-আদর্শ, মানবিক চেতনা, ব্যঙ্গনৈপুণ্য, সর্বোপরি লেখার যে মুন্সিয়ানা ছিল, এক কথা সেটাকে বলতে পারি অতুলনীয়।
দীর্ঘকাল তিনি ‘দৈনিক সংবাদ’ পত্রিকার সম্পাদকের গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন। অসম্ভব মজলিসী মানুষ ছিলেন জহুর ভাই। তুখোড় আড্ডাবাজ, স্পষ্টবাদী এই সাংবাদিক ব্যক্তিত্বকে আমরা যত স্মরণ করব, তাঁর লেখাগুলো পাঠ করব, তত আমরা উপকৃত হবো। তাঁর সরেস বয়ান, প্রাসঙ্গিক গল্পগাছা, তির্যক শ্লেষ, রাজনীতির কাটাছেঁড়া সংবলিত কলাম পড়ার জন্য আমরা প্রতীক্ষায় উন্মুখ হয়ে থাকতাম। তাঁর লেখা এত উপভোগ্য, ক্ষুরধার ও স্বাদু ছিল যে, কখনোই তা একঘেয়ে বা ক্লান্তিকর বলে মনে হতো না পাঠকের কাছে। এখানেই তাঁর স্টাইলের নিজস্বতা এবং অননুকরণীয়, অনন্য বৈশিষ্ট্য।”
এবার জহুর হোসেন চৌধুরীর নিজের লেখা থেকে উদ্ধৃতি। পাকিস্তান অবজার্ভারের সম্পাদক আরেক দিকপাল সাংবাদিক আবদুস সালামের সঙ্গে তার উচ্চমার্গীয় কথোপকথনের ভিত্তিতে লেখা হয়েছিল ওই কলামটি।
‘আমি আবার অনুনয় করলাম, অ সালাম ভাই, দেন না আঁরে এককানা ডেমোক্র্যাসির অর্থ বুঝাই।’ ‘আইচ্চা হুনেন তা অইলে, ডেমোক্র্যাসির মানি অইল- অ এড়াবৎহসবহঃ ড়ভ ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব, নু ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব, ভড়ৎ ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব.’ ‘আঁরে (আমাকে) এত বকলম মনে করেন কিল্লাই? এই কথাটা আঁই আইএ ফার্স্ট ইয়ারের সিভিক্স ক্লাসে প্রফেসর শামসুল হক সাহেবের কাছে হুনছি। স্যার কথায় বার্তায়, ফোশাকে আশাকে, উচ্চারণে এককেরে ইংরেজের মত আছিলেন। ফড়াইতেনও বালা। এককেরে ফানির মত করি সব বুঝাই দিতেন। ডেমোক্র্যাসির মানিও হেই রকম বুঝাই দিছিলেন। আমনে ডেমোক্র্যাসির যে ইংরাজি ব্যাখ্যা দিলেন হেই কতাআন কইছিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট মরহুম আব্রাহাম লিঙ্কন সাব। দুনিয়ায় যে দুই চারজন রাজনৈতিক নেতারে অন্তরেরতন বক্তি করি, আব্রাহাম লিঙ্কন তাঁর একজন।’
“বাজে কতা কওয়ার অভ্যাস আমনের হারা (সারা) জীবনেও গেল না। গেটিসবার্গে যাওয়ার সময়ে এক টুকরা কাগজের সিøপের ওপর লিঙ্কন ঐ কতাগুলি খালি পয়েন্ট হিসাবে লেখি লই ‘বীঃবসঢ়ড়ৎব ড়ৎধঃড়ৎু’র একটা ধষষ ঃরসব পষধংংরপ সৃষ্টি করেন।” ‘বাজে কতা আঁই (আমি) কই, না? আঁই কই কি আর আঁর (আমার) তানফুরায় কয় কি? আঁই আমনের কাছে গণতন্ত্র বুইঝতাম ছাইলাম, আর আমনে আঁরে হেই বেডা লিঙ্কনে ক্যামনে গেটিসবার্গের বক্তৃতা দিছিল হেইটা বুঝাইতে শুরু কইচ্ছেন। আঁই যদি কই লিঙ্কনের বক্তৃতার ফরের একশ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা অইতে ইয়াই বুঝা গেছে যে, গণতন্ত্রের মানি এড়াবৎহসবহঃ নু ঃযব বহবসরবং ড়ভ ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব, ড়ভ ঃযব বহবসরবং ড়ভ ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব, ভড়ৎ ঃযব বহবসরবং ড়ভ ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব ত আমনে কি কইবেন? এরিস্টটলে ডেমোক্র্যাসি সম্বন্ধে কি কইছে জানেন নি? ‘না’। ‘এরিস্টটলে কইছে উবসড়পৎধপু রং ঃযব ড়িৎংঃ ভড়ৎস ড়ভ এড়াবৎহসবহঃ’। ‘কি রকম?’ ‘ঐব সবধহঃ ধ মড়াবৎহসবহঃ নু ঃযব রমহড়ৎধহঃ, ড়ভ ঃযব রমহড়ৎধহঃ, ভড়ৎ ঃযব রমহড়ৎধহঃ.’ ‘এরিস্টটলের বাড়ি কোন জেলায়?’ ‘আরে মিয়া আমনেত হাঁচাই দেইয়ের একটা অচল মলট গাবুর। এরিস্টটলের মত এত্তড়া (এত বড়) গ্রিক দার্শনিকের নাম হুনেন ন। ডেমোক্র্যাসি শব্দটা যে গ্রীক ডেমস অইতে আইছে এই কতাও জানেন ন, কি কচুর সম্পাদকী কইরছেন বিশ না বাইশ বছর।’ ‘আইচ্ছা, এরিস্টটল অমুকের হুতরে (পুত্রকে) নয় চিনলাম আমনের দৌলতে, কিন্তু হেই বেডার (ওর) মতলবটা কি আছিল কন ত? হেতে কি ধরনের গরমেন্ট গ্রীসের শহরডা রাষ্ট্র অগলে (ঈরঃু ংঃধঃবং) কইরত চাইছিল?’ ঐব যধফ রহ সরহফ ধ এড়াবৎহসবহঃ ড়ভ ধৎরংঃড়পৎধপু ধহফ সবৎরঃড়পৎধপু? আঃ শব্দটা কি সোন্দর হুইনতে। এই ধরনের গরমেন্ট যদি আঙ্গো বাংলাদেশে অয় ত আমনে ত তার ফ্রদান মন্ত্রী নিচ্চই অইবেন। হেই বিষয়ে কোন সড়ঃযবৎ’ং ংড়হ-এর আফত্তি থাকা ত উচিত নয়। কিন্তু সালাম ভাই এই রকম গরমেন্ট ত অইতে ফারে ন। ‘কেন?’ ‘আমনেই ত কইলেন আমনের ইনটেলেকট এপ্রিসিয়েট করার মত লোক কম বলিই ও দেশের এই দুরবস্থা।’ ‘আরে মিয়া বুইঝলেন না, আঁই গরমেন্ট ফর্ম কইরলে দেশের লোকে এপ্রেসিয়েট কইরল কি না কইরল তাতে আঁর কি কেলাটা আইব-যাইব।’ ‘ও সালাম ভাই, আমনে দেইয়ের জাতে মাতাল তালে ঠিক।’ সালাম ভাই একগাল হেসে বললেন, ‘আপনার যেমন সব দুনিয়া ছাড়া ফ্রশ্ন, আমারও তেমন জবাব।’
‘এরিস্টটলের নিদান দেয়া গরমেন্ট সবৎরঃড়পৎধপু-র ফ্রশ্ন বাদ দিলেও ত অইত ফারে ন।’ ‘কেন?’ ‘এদেশে শক্ত হাড্ডিওয়ালা এরিস্টক্র্যাটের সংখ্যা ত এক ডজনও অইব না। ধানমন্ডি, গুলশান এ ধরনের এলাকার বাসিন্দাদের গায়েত এখনো মাটির গন্ধ যায় ন। বর্তমানে বোন চায়নার ফ্লেট এস্তেমাল কইরলেও হ্যাতাগো অধিকাংশই দশ-বিশ বছর আগে এনামেলের বাসনেই ভাত খাইত, লাঞ্চ-ডিনারের ঘন্টি হ্যাতাগো বাড়িতে তখন বাইজত ন। সুতরাং শরিফদের সরকার এদেশে অইব ক্যামনে?’ ‘তাও ত কতা। না হোক। আমনের এই সব ব্যাফারে আৎকা (হঠাৎ) এত কুরকুরি (চুলকানি) উইটল কিল্লাই কন ত। খবঃ ধৎরংঃড়পৎধপু ধহফ সবৎরঃড়পৎধপু মড় ঃড় নষধৎবং এখন আমনে টেলিফোনটা ছাইড়বেন?’ ‘ও সালাম ভাই আমনে ডেমোক্র্যাসিতে বিশ্বাস করেন?’ ‘যিধঃ ঃযব নষড়ড়ফু যবষষ ফড় ুড়ঁ সবধহ? ও যধাব নববহ ধহ ধৎফবহঃ নবষরবাবৎ রহ ফবসড়পৎধপু ধষষ সু ষরভব. ও যধাব মড়হব ঃযৎড়ঁময যবষষ ভড়ৎ নবষরবারহম রহ ফবসড়পৎধপু ধহফ ড়ঢ়ঢ়ড়ংরহম ধঁঃযড়ৎরঃধৎরধহরংস. ঐড়ি ফধৎব ুড়ঁ ধংশ সব ংঁপয ধ ংঃঁঢ়রফ য়ঁবংঃরড়হ.’ ‘সালাম ভাই, বুকে হাত রাই (রেখে) কন গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ কি? পার্লামেন্টারি গণতন্ত্র ত আঙ্গো দেশে ইংরাজের আমদানি। ১৯১৯ সালের মন্টেগো চেমসফোর্ড রিফর্মসের ফর দফায় দফায় গণতন্ত্র চালু করি ১৯৪৭ সালের ফরের থাকি ত আমরা ফূর্ণ গণতন্ত্র বেশ কবার ফরীক্ষা-নিরীক্ষা কইরলাম। এমনই আঙ্গো কফাল যে, ফ্রত্যেকবার গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ফর একটা না একটা উল্টা কিছু হয়। আমনের মত বুজুর্গ লোকের কাছে এইবার কিছু একটা দিশা চাইয়ের।’ বেশ কিছুক্ষণ ইংরেজিতে যাকে বলে ঢ়ৎবমহধহঃ ংরষবহপব-এর পর সালাম ভাই আশাহত কণ্ঠে জবাব দিলেন ‘ঞযব ষরনবৎধষ ফবসড়পৎধপু ড়ভ ঃযব হরহবঃববহঃয পবহঃঁৎু রহ যিরপয ও নবষরবাবফ রিঃয ধষষ সু যবধৎঃ ংববসং ঁহংঁরঃধনষব ঃড় যঁসধহ হধঃঁৎব. ঞযব যিড়ষব নষড়ড়ফু ড়িৎষফ ংববসং ঃড় যধাব মড়হব সধফ, ৎধারহম সধফ, তধযঁৎ’ সালাম ভাই টেলিফোন রেখে দিলেন।
…… ……. …… ….
বিশেষ দ্রষ্টব্য : আমি সালাম ভাইকে জানিয়ে দিয়েছি, আমাদের এ কথোপকথন দরবারে ছেপে দেব। তিনি বলেছেন, ‘ওভ ুড়ঁ ফড় রঃ, ও রিষষ ংঁব ুড়ঁ ভড়ৎ ংষধহফবৎ’। সালাম ভাই সাধারণত চোস্ত ইংরেজিতেই বাক্যবাণ ছুড়ে থাকেন। জবাব দিয়েছি ‘সম্পাদকী করার শাস্তি হিসাবে বেশ কয়েকবারই মানহানির মোকদ্দমায় আসামী অইতে অইছে। এখন আর সম্পাদক নই। আল্লায় বাঁচাইছেন। ত যদি আমনের কারণে আসামি অইতে অয় অমু। তবে আমনেরতনও এক বুজুর্গ লোকে কইছে মানহানির মোকদ্দমা যে বেকুবে করে, তার আছে মানটুকুও চলি যায়।
১০ সেপ্টেম্বর ১৯৭৬

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়