মুম্বাইয়ে ভবনধসে নিহত ১৯

আগের সংবাদ

বানভাসিদের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই

পরের সংবাদ

সাভারে শিক্ষক হত্যা : প্রতিবাদে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানববন্ধন

প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. আজিম উদ্দিন, সাভার (ঢাকা) থেকে : সাভারে শিক্ষক উৎপল হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি বখাটে জিতুুকে গ্রেপ্তারসহ ছয় দফা দাবিতে সাভার-আশুলিয়ার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা গতকাল বুধবার সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে মানববন্ধন রচনা করেন।
উল্লেখ্য, গত শনিবার দুপুরে আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল এন্ড কলেজের মাঠে ওই শিক্ষককে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ক্রিকেটের স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে একই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির ছাত্র জিতু। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোরে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার মারা যান। রবিবার আশুলিয়া থানায় নিহত শিক্ষকের ভাই অসীম কুমার বাদী হয়ে জিতুসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
এছাড়া ওই কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী কলেজ প্রভাষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত বলে অভিযোগ তুলেছেন। ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে বাইরে থেকে ক্রিকেট স্ট্যাম্প সংগ্রহ করে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে ওই শিক্ষার্থী মারধর করে বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। ওই কলেজের অধ?্যক্ষ সাইফুল হাসানও একই দাবি করেন। এলাকাবাসী জানান, একজন শিক্ষককে এভাবে হত্যার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তারা বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষার্থী জিতুর বাবা উজ্জ্বল হোসেনের ব্যবসায়িক পার্টনার মাজেদ নামে এক ব্যক্তি। তাদের মূলত হোটেল ব্যবসা আছে। সেই মাজেদের শ্যালিকা এই কলেজে প্রথমবর্ষে পড়ে। তার সঙ্গে অভিযুক্ত জিতুর অনেক আগে থেকেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিছু দিন আগেও স্কুলের একটি কক্ষে জিতু ও ওই মেয়েকে অপ্রীতিকর অবস্থায় পাওয়া যায়। তখন শিক্ষক উৎপল তাদের শাসিয়ে দেন। এমনকি ওই শিক্ষক মেয়ের পরিবারের কাছে ফোন করে সব জানিয়ে সতর্ক করেও দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে মেয়েটা জিতুকে এসব বিষয় জানালে সে ক্ষুব্ধ হয়েই ওই শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
তারা আরো বলেন, খেলার দিন আগে থেকেই কলেজের বাইরে স্টাম্প নিয়ে ঘুরছিল জিতু। তার সঙ্গে আরো তিনজন যুবক ছিল। ঘটনার পরপর তারা চারজন একসঙ্গে হেঁটে চলে যায়।
ওই কলেজে প্রথমবর্ষে অধ্যয়নরত এক শিক্ষার্থী জানায়, জিতুর সঙ্গে তাদেরই কলেজের এক মেয়েকে স্কুলকক্ষে একসঙ্গে পাওয়ার পর স্যার মেয়ের পরিবারকে জানান। স্যার মেয়ের বাসায় ফোন করে শক্তভাবে বলেছিলেন যাতে মেয়েটা জিতুর সঙ্গে না মেশে। এটার ক্ষোভ থেকেই জিতু স্যারকে খেলার দিন পিটিয়েছে।

ওই শিক্ষকের ওপর হামলা চালানোর বিষয় আগে থেকে ঠিক করে রেখেছিল শিক্ষার্থী জিতু। তার প্রমাণ মেলে কলেজের সিসিটিভি ফুটেজ খুঁজতে গিয়ে। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই দিনের ঘটনার আগে থেকে সিসিটিভি ফুটেজে কিছুই রেকর্ড হয়নি বিদ্যুৎ না থাকার কারণে। তবে পরিকল্পনা মাফিক অভিযুক্ত শিক্ষার্থী জিতু কৌশলে কলেজের বিদ্যুতের মেইন সুইচ কোনো এক সময় নামিয়ে দিয়েছিল। যার ফলে ওই সময় সিসিটিভি বন্ধ ছিল।

এদিকে চিত্রশাইল এলাকার হাজী ইউনুস আলী স্কুল এন্ড কলেজ পরিদর্শন করেছে আশুলিয়া থানার একাধিক পুলিশ। এ সময় আশুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারে তাদের তিন থেকে চারটি টিম আলাদাভাবে কাজ করছে। শিগগির তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। ঘটনার তিন দিন পর শিক্ষককে পেটানোর স্টাম্পটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। এছাড়া শিক্ষককে হত্যার ঘটনায় সাভার-আশুলিয়া উত্তাল হয়েছে। প্রতিবাদে হাজী ইউনুস আলী স্কুল এন্ড কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলছে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়