শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি : শ্রীপুরে আরবেলা ফ্যাশন লিমিটেড পোশাক কারখানার অর্ধশত নারী শ্রমিক হঠাৎ ঢলে পড়েছেন। তাদের শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর ২টার দিকে বরমী ইউনিয়নের গাড়ারন গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অসুস্থ শ্রমিক সাথী আক্তার (২৪) জানান, তিনি সুইং শাখায় কাজ করেন। তার পাশের সহকর্মী নাসরিন আক্তার (২৫) মেশিনে কাজ করার সময় হঠাৎ করে ঢলে পড়ে যান। ঢলে পড়ার দৃশ্য দেখে তিনি নিজেও ঢলে পড়েন। পরে নিজেকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখতে পান।
সুইং শাখার কর্মী রিমি আক্তার (২২) বলেন, হঠাৎ করে সহকর্মীদের ঢলে পড়ার দৃশ্য তিনি নিজেও দেখেছেন। অনেকে ঢলে পড়ে যাওয়া নারীদের টেনে তুলে মাথায় পানি দিয়েছেন। একের পর এক কমপক্ষে অর্ধশত নারী শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর তিনি নিজেকেও শক্তিহীন ভাবতে ভাবতে জ্ঞান হারিয়ে ঢলে পড়েন। চেতন ফিরলে দেখতে পান তাকে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
কারখানা এলাকার বাসিন্দা মকবুল হোসেন বলেন, দুপুরে আকাশ কিছুটা মেঘলা ছিল। এ সময় কারখানা ও আশপাশের আবহাওয়াটা ছিল প্রচণ্ড গরম। ঠিক এ সময়েই নারী শ্রমিকদের হঠাৎ অসুস্থের খবর পাওয়া গেছে। কোনো কোনো নারী শ্রমিক বলেছেন, কারখানার বাথরুমে গিয়ে তারা ভয় পেয়েছেন।
অসুস্থদের মধ্যে ঝর্ণা রানী (২৪), নাসরিন (৩২), হালিমা (২৪), শিল্পী (২২), স্বপ্না আক্তার (২৪) আলেয়া খাতুন (২০), মাজেদা খাতুন (২২), রুনা আক্তার (২৮), লিপি (৩২), সিনথিয়া (২৬) এবং তাদের সহকর্মীরা রয়েছেন।
আরবেলা ফ্যাশন কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা আহমদ সাগর বলেন, কী কারণে শ্রমিকরা অসুস্থ হয়েছেন তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে অতিরিক্ত গরমের কারণে অসুস্থ হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অসুস্থদের মধ্যে সবাই নারী শ্রমিক। তাদের শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ওষুধের দোকান, প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তাদের কারখানায় সাড়ে ৩০০-এ বেশি শ্রমিক রয়েছেন।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মরিয়ম আক্তার বলেন, ওই হাসপাতালে ১৫ জন নারী ভর্তি হয়েছেন। তাদের স্যালাইন পুশ করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে কী কারণে তারা অসুস্থ হয়েছেন তা তাৎক্ষণিকভাবে বলা যাচ্ছে না। কোনো কোনো অসুস্থ নারী বলেছেন টয়লেট থেকে তারা ভয় পেয়েছেন।
শ্রীপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, শ্রমিকদের অসুস্থতার খবরে কারখানায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অসুস্থদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে পাঠানো হয়েছে। হঠাৎ অসুস্থ হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে।