টিপু হত্যা মামলা : মুসার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

আগের সংবাদ

ভিটাহীন সংসার, আকাশ মাথায় : বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো পানির নিচে, সিলেট-সুনামগঞ্জে নতুন করে বাড়ছে পানি

পরের সংবাদ

মাদক মামলায় ২ জনের কারাদণ্ড : ল²ীপুরে বন্ধুকে হত্যার দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, ল²ীপুর : ল²ীপুরে টাকা ছিনতাইয়ের জন্য বন্ধুকে হত্যার দায়ে মো. বাহার নামে এক যুবকের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ১ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে ৭০০ পিস ইয়াবা রাখার দায়ে রহমত উল্যা নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে ১৫ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। একই মামলায় আসামি ফয়সাল পাঠানকে বেকসুর খালাসের আদেশ দেন আদালত। এছাড়া ৮৭ পিস ইয়াবা রাখার দায়ে মাহবুব আলমকে ৭ বছর কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। সোমবার বিকালে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম পৃথক ৩ মামলায় এ রায় দেন।
ল²ীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এডভোকেট জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বাহার ও মাদক মামলার আসামি রহমত উল্যা পলাতক রয়েছে। মাদক মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত মাহবুব আলম রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিল।
হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বাহার সদর উপজেলার হাজিরপাড়া ইউনিয়নের বড় বল্লভপুর গ্রামের জয়নাল আবেদিন খন্দকারের ছেলে। মাদক মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত মাহবুব সদর উপজেলার দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নের গোপীনাথপুর গ্রামের মৃত আবদুল মান্নানের ছেলে ও রহমত উল্যা রামগঞ্জ উপজেলার সোনাপুর গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে।
আদালত সূত্র জানায়, হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বাহার মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। বাহার ও ভিকটিম আবদুর রব রাসেল বন্ধু ছিল। রাসেলের বিদেশ যাওয়ার কথা ছিল। এতে ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি রাতে নিজ বাড়ি থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে পার্শ্ববর্তী চর মোহাম্মদপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে হেঁটেই রওয়ানা দেয়। পথিমধ্যে বসুদৌহিতা গ্রামে পৌঁছলে বাহার পেছন থেকে লোহার চার্জার লাইট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। এতে রাসেল অচেতন হয়ে পড়ে। তাকে মৃত ভেবে টাকা নিয়ে বাহার পালিয়ে যায়। পরদিন সকালে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ও পরে ঢাকায় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রায় ২ মাস সেখানে চিকিৎসাধীন থাকার পর অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে ২৫ মার্চ ঢাকা মেডিকেল কলেজ নেয়ার পথে বাহার মারা যান।
এ ঘটনায় ৩০ জানুয়ারি চন্দ্রগঞ্জ বাহারের মা আমেনা বেগমের লিখিত অভিযোগটি পরবর্তী সময়ে হত্যা মামলায় রুজু হয়। তদন্ত শেষে ওই মামলায় বাহারের বিরুদ্ধে তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ উপপরিদর্শক পুষ্পবরণ চাকমা ২০১৬ সালের ২২ আগস্ট আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত বাহারের অনুপস্থিতিতে রায় দেন।
এদিকে ২০১৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বিকালে র‌্যাব-১১ এর টহল টিম সদর উপজেলার পালেরহাট এলাকা থেকে মাদক ব্যবসায়ী মাহবুবকে ৮৭ পিস ইয়াবাসহ আটক করে।
একই দিন র‌্যাব-১১ ল²ীপুর ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার (ডিএডি) মো. মিরাজ উদ্দিন বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় তার বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেন। ৩০ সেপ্টেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল আলীম আদালতে মাহবুবের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত তাকে ৭ বছর কারাদণ্ড দেন।
অন্যদিকে ২০১৮ সালের ২৩ জুন রামগঞ্জ থানার এসআই পঙ্কজ কুমার সাহা ফোর্স নিয়ে সিএনজি অটোরিকশাযোগে টহল দিচ্ছিলেন। এ সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার উত্তর শ্রীরামপুর গ্রাম থেকে ৭০০ পিস ইয়াবাসহ রহমত উল্যাকে আটক করা হয়। একই দিন এসআই পঙ্কজ কুমার সাহা বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরদিন তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
একই বছর ১৪ আগস্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মুহাম্মদ কাওসারুজ্জামান তার বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত তাকে ১৫ বছর কারাদণ্ড দেন। একই মামলায় আসামি ফয়সাল পাঠানকে বেকসুর খালাসের আদেশ দেন আদালত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়