বন্যায় উদ্ধার ও ত্রাণ : সরকারের উদাসীনতার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ বাম জোটের

আগের সংবাদ

ত্রাণ পৌঁছেনি প্রত্যন্ত জনপদে : এখনো পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ, সিলেট বিভাগে বন্যায় ২২ জনের মৃত্যু

পরের সংবাদ

উড ম্যাকেনজির পূর্বাভাস : আগামী বছরও ঊর্ধ্বমুখী থাকবে জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক বাজার

প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : আগামী বছর পেট্রল পাম্পগুলোয় জ্বালানির দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকবে বলে ধরে নিতে পারেন ব্যবহারকারীরা। কারণ রাশিয়ান জ্বালানি তেল সরবরাহ ব্যাপক বাধার মধ্যে রয়েছে। এছাড়া জ্বালানি তেল পরিশোধন কেন্দ্রগুলো মহামারি-উত্তর চাহিদা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে। জ্বালানি ও ধাতবপণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান উড ম্যাকেনজি সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এসব কথা জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী বছরের দ্বিতীয়ার্ধে বাজারে বিদ্যমান চাপ কিছুটা শিথিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ এ সময় মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন অঞ্চলে নতুন এবং বড় পরিশোধন কেন্দ্র চালু হতে পারে।
উড ম্যাকেনজির বিশ্লেষক অ্যালেন গেল্ডার বলেন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য দেশে গ্যাসোলিন ও ডিজেলের দাম আকাশচুম্বী। এ কারণে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা প্রায় দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেল করে কমেছে, যা বৈশ্বিক মোট চাহিদার প্রায় ১ শতাংশ। নতুন বেশ কয়েকটি পরিশোধন কেন্দ্র তৈরি না হলে বা সক্ষমতা না বাড়লে সরবরাহ চেইন আরো সংকুচিত হবে। উডম্যাক বলছে, পরিশোধন কেন্দ্রগুলো বর্তমানে বড় অঙ্কের মুনাফায় আছে। অপরিশোধিত জ্বালানি তেল পাতনের মাধ্যমে গ্যাসোলিন, ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানি পণ্যে রূপান্তর করে এসব কেন্দ্র। বর্তমানে এক্ষেত্রে ব্যারেলপ্রতি লাভ হচ্ছে ৩০ ডলার করে।
তথ্য বলছে, চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দামামা বেজে উঠলে জ্বালানি পণ্যের বাজারে অস্থিরতা চরম আকার ধারণ করে। পশ্চিমা দেশগুলোর একের পর এক নিষেধাজ্ঞার পরই কমতে শুরু করে জ্বালানি তেল খাতের নেতৃস্থানীয় দেশ রাশিয়ার উত্তোলন। তলানিতে নেমে আসে পরিশোধন কার্যক্রম। বিশ্বজুড়ে দেশটির তেলপ্রবাহ ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে অব্যাহত বাড়ছে জ্বালানি তেলের দাম। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটি মনে করছে, আগামী বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের গড় দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারের উপরে অবস্থান করবে। চলতি বছর গড় দাম থাকবে ১১০ ডলারে। বর্তমানে জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম প্রায় ১২০ ডলারে অবস্থান করছে। গেল্ডার বলেন, আগামী বছর বৈশ্বিক পরিশোধন মার্জিনের গড় পাঁচ বছরের গড়ের তুলনায় সর্বোচ্চে অবস্থান করবে।
তিনি আরো বলেন, পরিশোধন খাত যতটুকু সম্ভব সর্বোচ্চ মাত্রায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে ডিজেলকে। তবে চাহিদার অনুপাতে সরবরাহ এখনো অপর্যাপ্ত। কারণ বিশ্ব অর্থনীতিগুলোয় করোনা মহামারি-উত্তর সময়ে খুব দ্রুত প্রসার ঘটছে। উডম্যাকের হিসাব অনুযায়ী, সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা অনুভূত হয়েছে গ্যাসোলিন ও ডিজেল খাতে।
এসব পণ্যের সরবরাহে দৈনিক ৮ লাখ ব্যারেলেরও বেশি ঘাটতি রয়েছে। জ্বালানির আকাশচুম্বী দামের কারণে গৃহস্থালিগুলো দৈনন্দিন ব্যয়ের বাজেট কমাতে বাধ্য হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ভ্রমণ ব্যয়ও আকাশচুম্বী।
উডম্যাকের প্রত্যাশা, চলতি বছরের আগামী তিন প্রান্তিকে দৈনিক প্রায় ২৫ লাখ ব্যারেল নতুন পরিশোধন সক্ষমতা তৈরি হবে। এর মধ্যে রয়েছে সৌদি আরবের জিজান পরিশোধন কেন্দ্র। এটির পরিশোধন সক্ষমতা দৈনিক চার লাখ ব্যারেল। নাইজেরিয়ার ড্যানগোট পরিশোধন কেন্দ্র, যার সক্ষমতা দৈনিক সাড়ে ছয় লাখ ব্যারেল। দৈনিক ৬ লাখ ১৫ হাজার ব্যারেলের সক্ষমতা নিয়ে তৈরি হবে কুয়েতের আল জৌর পরিশোধন কেন্দ্র। এছাড়া নতুন বেশ কয়েকটি পরিশোধন কেন্দ্র চালু করবে চীন।
এদিকে গত মে মাসেও জ্বালানি তেল উত্তোলন বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে রপ্তানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক। ওই মাসে জোটভুক্ত দেশগুলো দৈনিক ২৬ লাখ ৯৫ হাজার ব্যারেল জ্বালানি তেল উত্তোলন করে।
বিনিয়োগস্বল্পতা, উত্তোলন সক্ষমতার অভাবসহ নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে জোটটির সদস্য দেশগুলো নির্ধারিত কোটা অনুযায়ী উত্তোলন করতে পারছে না। তার ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর রাশিয়ার ওপর অব্যাহত নিষেধাজ্ঞা পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়