আরো ৩১ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি

আগের সংবাদ

জলে ভাসা সিলেট এক বিচ্ছিন্ন জনপদ : ১২২ বছরের ইতিহাসে ভয়াবহ বন্যা > আশ্রয়ের খোঁজে অসহায় মানুষ > বন্যার্তদের উদ্ধারে নৌবাহিনী, যুক্ত হচ্ছে হেলিকপ্টার-ক্রুজ

পরের সংবাদ

নওগাঁর সুস্বাদু আম যাচ্ছে বিশ্ববাজারে

প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. আবু বকর সিদ্দিক, নওগাঁ থেকে : নওগাঁয় প্রতি বছর গড়ে ২ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আম বাগান গড়ে তুলছেন আম চাষিরা। আর মাটির বৈশিষ্ট্যগত কারণে নওগাঁর আম সুস্বাদু হওয়ায় দেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রতি বছরই লন্ডন ও মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। তবে আমের ভরা মৌসুমে আম সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় আম চাষিরা সঠিক মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়া উন্নত করা, প্রক্রিয়াজাত করার জন্য বিশেষ করে নওগাঁয় শিল্প-কারখানা গড়ে তোলা এবং আম সংরক্ষণাগার স্থাপনের দাবি এই জেলার আম চাষিদের।
জানা গেছে, ঠাঁঠাঁ বরেন্দ্র এলাকা হিসেবে নওগাঁর সাপাহার, পোরশা, নিয়ামতপুর, পতœীতলা, ধামইরহাট উপজেলার কিছু অংশ পরিচিত। পানি স্বল্পতার কারণে ধান, গমসহ অন্যান্য ফসল চাষ করা তেমন সম্ভব হতো না। এমন জমিতে ধান-গম চাষ কমিয়ে আম চাষ ঝুঁকছেন চাষিরা।
এ ব্যাপারে নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক এ কে এম মনজুরে মাওলা ভোরের কাগজকে জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ২৯ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে ৩ হাজার ৬২৫ হেক্টর বেশি। জেলায় প্রায় ৭৬ ভাগ আ¤্রপালী আমের চাষ হয়ে থাকে। এছাড়াও বারি-৪, গৌড়মতি, গোপালভোগ, হিমসাগর, ব্যানানা ম্যাংগো, কাটিমন, ল্যাংড়া, হিমসাগর, ফজলি, সূর্যডিমসহ দেশি-বিদেশি উন্নত বিভিন্ন জাতের আম চাষ হচ্ছে। ফলে আমের উৎপাদনও বিঘা প্রতি বেশি হচ্ছে।
প্রতি বছর গড়ে ২ হাজার হেক্টর জমিতে আম বাগান গড়ে তুলছেন আম চাষিরা। এই অঞ্চলের মাটি কিছুটা এঁটেল ও দোঁআশ হওয়ায় আমগুলো অন্যোন্য জেলার চেয়ে মিষ্টি ও সুস্বাদু। চলতি মৌসুমে জেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪৩৫ টন। সাপাহার সদরের আম বাগানের মালিক গোলাপ খন্দকার জানান, জেলায় সর্ববৃহৎ আমের বাজার বসে সাপাহারে। এছাড়াও পোরশা, নিয়ামতপুর-পতœীতলায় ছোট পরিসরে আম কেনাবেচা হয়ে থাকে। আম নির্দিষ্ট একই সময়ে দ্রুত পেকে যাওয়া ও পচনশীল হওয়ায় কৃষকরা আম একসঙ্গে বিক্রি শুরু করেন। ফলে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভের বড় অংশ হাতিয়ে নেন।
একই এলাকার প্রদীপ সাহা জানান, আম সংরক্ষণের জন্য হিমাগার থাকত তাহলে এলাকার হাজার হাজার কৃষক আম সংরক্ষণ করে কয়েক মাস পরে বিক্রি করে লাভবান হতেন। সফল আমচাষি সাখাওয়াত হাবিব জানান, আমের উৎপাদন ভালো হলেও দাম কমে যায়।
চাষিরা যেন সহজেই পর্যাপ্ত আম বিদেশে পাঠাতে পারেন একই সঙ্গে আম সংরক্ষণে হিমাগার ও প্রক্রিয়াজাত করার জন্য বিশেষ করে নওগাঁয় শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার দাবি জানান। নওগাঁ চেম্বার অব কর্মাস ইন্ডাস্ট্রি লিমিটিডের সভাপতি ইকবাল শাহরিয়ার রাসেল ভোরের কাগজকে জানান, বর্তমানে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের চেয়েও মনে হয় নওগাঁয় বেশি আম উৎপাদন হচ্ছে। একসসঙ্গে আম পেকে যাওয়ায় চাষিরা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কাঁচা-পাকা আম বাজারে কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হন। আমের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকারি ও বেসরকারিভাবে হিমাগারসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানান।
নওগাঁ জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান ভোরের কাগজকে জানান, চাষিদের উৎপাদিত আম সংরক্ষণের জন্য আম সংরক্ষণাগার নির্মাণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে। অপরদিকে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি বলেন, সাপাহার এলাকায় ইকোনমিক জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এতে করে দেশি ও বিদেশি শিল্পোদ্যোক্তারা এলাকায় শিল্পকলকারখানা নির্মাণের জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। তিনি আরো বলেন আম হিমাগারে রেখে বেশি দিন সংরক্ষণ করা যাবে না এ কারণে আম প্রক্রিয়াজাত করে জুস আকারে হিমাগারে সংরক্ষণ করতে হবে। তাহলে বিদেশে আমের তৈরি জুস রপ্তানি করে বৈদেশিক অর্থ উপার্জন সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়