মির্জা ফখরুল : খালেদার কিছু হলে দায় নিতে হবে সরকারকেই

আগের সংবাদ

কুমিল্লায় ইসির ‘এসিড টেস্ট’

পরের সংবাদ

পতনের বাজারে চাঙা দুর্বল কোম্পানির শেয়ার

প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : নতুন অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রস্তাবিত বাজেটের পর পুঁজিবাজারে টানা দরপতন দেখা দিয়েছে। আগের কার্যদিবসের মতো গতকাল সোমবার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। এর মাধ্যমে প্রস্তাবিত বাজেটের পর লেনদেন হওয়া দুই কার্যদিবসেই দরপতন হলো।
প্রস্তাবিত বাজেটের পর দরপতন দেখা দিলেও বাজেটকে পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক বলছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেয়াসহ আরো কয়েকটি দাবি পুনর্বিবেচনার দাবি তুলেছেন তারা।
গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন অর্থবছরের বাজেটে করপোরেট করে বড় ছাড় দেয়া হলেও পুঁজিবাজারে বিনাপ্রশ্নে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এরপর গত ১১ জুন সংবাদ সম্মেলন করে বিনাপ্রশ্নে পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ার দাবি জানায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)।
এ বিষয়ে সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য ১০ শতাংশ কর পরিশোধ করে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুবিধা রহিত করা হয়েছে। এই সুবিধা আগামী বছর পর্যন্ত বহাল রাখার জন্য আমরা বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। এতে বাজার যেমন শক্তিশালী হবে, তেমনি সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে, পাশাপাশি অর্থ পাচারও কমবে। প্রস্তাবিত বাজাটের পর প্রথম কার্যদিবস গত রবিবার বড় দরপতন হয়। এ পরিস্থিতিতে গতকাল বাজেট নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ডিএসই। ডিএসই কার্যালয়ে যখন সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়, ততক্ষণে সূচকের বড় পতন প্রবণতা দেখা যায়।
একদিনে করপোরেট কর হারে ছাড় দেয়া, অন্যদিকে বিনাপ্রশ্নে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ বন্ধ করা এবং প্রস্তাবিত বাজাটের পর শেয়ারবাজারে দরপতন হওয়া নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারেক আমিন ভূঁইয়া বলেন, বিভিন্ন কারণে পুঁজিবাজারে দরপতন হতে পারে। যে দরপতন হচ্ছে, তা বাজেটের জন্য এটা এখনই বলা যাবে না। যদি দুই-তিন মাস বাজার পতনের মধ্যে থাকে তখন আমরা বলতে পারবে এটা বাজেটের জন্য হচ্ছে।
গতকাল বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, লেনদেন শুরু হতেই বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমতে দেখা যায়। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে এ প্রবণতা। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৮৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৫৩টির এবং ৪২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৯ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৯১ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৩১৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৯৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমলেও বাজারটিতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৯৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬৩৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে আইপিডিসি ফাইন্যান্সের শেয়ার। কোম্পানিটির ৭৬ কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা শাহিনপুকুর সিরামিকের ২৮ কোটি ১০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এসিআই ফরমুলেশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, বেক্সিমকো, বিডিকম অনলাইন, স্যালভো কেমিক্যাল, কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজ এবং নাহি অ্যালুমেনিয়াম।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১০১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৩ কোটি ৪২ টাকা। লেনদেন অংশ নেয়া ২৯১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯০টির এবং ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়