ওমর সানীকে গুলি করার হুমকি জায়েদ খানের

আগের সংবাদ

সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ : পাচার হওয়া অর্থ দেশে আনার প্রস্তাবে সমর্থন

পরের সংবাদ

ভয়াবহ পাহাড়ধসের ৫ বছর পার : এখনো পাহাড়ের গায়ে বসবাস করছেন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষরা

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, রাঙ্গামাটি : রাঙ্গামাটির ভয়াবহ পাহাড়ধসের মর্মান্তিক ঘটনার ৫ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ। ২০১৭ সালের ১৩ জুন রাতে টানা তিন দিনের ভারি বৃষ্টি আর বজ্রপাতে রাঙ্গামাটিতে ঘটে যায় স্মরণকালের পাহাড়ধসের ঘটনা। বছর ঘুরে দিনটি ফিরে এলে রাঙ্গামাটিবাসীর মনে দেখা দেয় আতঙ্কের সেই ভয়াল স্মৃতি। পাহাড়ধসে মাটিচাপা পড়ে একদিনেই প্রাণ হারিয়ে ছিলেন সেনাসদস্য, নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ১২০ জন। এর মধ্যে শহরের মানিকছড়িতে একটি সেনা ক্যাম্পের নিচে রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কের উপর ধসে পড়া মাটি অপসারণ করতে গিয়ে পুনরায় পাহাড়ধসে মাটিচাপা পড়ে নিহত হন ওই ক্যাম্পের দুই কর্মকর্তাসহ ৫ সেনাসদস্য।
নিহত সেনাসদস্যরা হলেন- মেজর মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, ক্যাপ্টেন মো. তানভীর সালাম শান্ত, করপোরাল মোহাম্মদ আজিজুল হক, সৈনিক মো. শাহিন আলম ও সৈনিক মো. আজিজুর রহমান।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্য যে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে ২০১৭ সালের ১৩ জুনের পাহাড়ধসের ঘটনা সে রকম ছিল না। ব্যাপক প্রাণহানির সঙ্গে রাঙ্গামাটির ব্যাপক ভৌত অবকাঠামো ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাহাড়ে ঘরবাড়ি আছে এমন পাহাড়ও যেমন ভেঙেছে, তেমনি ঘরবাড়ি ছিল না এমন অসংখ্য পাহাড়ও ভেঙে পড়ে। আবার ঝোপ-জঙ্গল গাছপালায় ভরপুর এমন পাহাড়ও ভেঙে পড়ে। এক কথায় সব রকম পাহাড়েই মাটি ধসে পড়ে। এটার ব্যাপ্তি, বিস্তৃতিও গভীরতা অনেক বেশি ছিল।
টানা তিন দিনের প্রবল বর্ষণে পাহাড়ধসে রাঙ্গামাটির এত লোকের প্রাণহানি, ঘরবাড়ি, সড়ক যোগাযোগ, বিদ্যুতের এত বড় ক্ষতি হবে সে দিন কেউ ভাবতে পারেননি। সে দিন মুহূর্তেই সব দিক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল পর্যটন শহর রাঙ্গামাটি।
রাঙ্গামাটির ভয়াল পাহাড়ধসের ঘটনার ৫ বছর পার হলেও এখনো অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এত মৃত্যুর মিছিল ও বিপুল সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির পরও লোকজন আজও পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছেন। গত পাঁচ বছরে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের সংখ্যাও বেড়ে গেছে।
আর প্রতি বছরের ন্যায় বর্ষার শুরুতেই এবারো জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরে ও উপজেলগুলোতে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে বৃষ্টির সময় নিরাপদে সরে যেতে ও আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য ব্যাপক প্রচারণা ও সচেতনতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
শহরের বেশ কিছু স্থানে পাহাড়ের পাদদেশে আবারো অসংখ্য বাড়িঘর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তবে পাহাড়ের নিচে বসবাসকারীরা এখনো কেউই সরে যাওয়ার সেই প্রস্তুতি নেননি। বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার অনীহা প্রকাশ করছেন বারবার।
দিনটির কথা স্মরণ করে এ বছরও রাঙ্গামাটি জেলায় প্রাণহানি এড়াতে আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন জেলা প্রশাসক। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে। শহরের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেছেন রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। এ সময় তিনি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় যারা পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করছেন তাদের বৃষ্টির সময় নিরাপদে সরে যেতে ও আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন।
এ সময় রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় রাঙ্গামাটি জেলায় পাহাড়ধসের ঘটনায় যাতে প্রাণহানি না ঘটে তার জন্য আগাম সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। আর এসব ব্যাপারে প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্যোগ প্রস্তুতি সভাও করা হয়েছে। সেখানে সবাইকে সম্মিলিতভাবে দুর্যোগ মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে এবং প্রতিটি এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়