রাজধানীর বছিলায় জুতার কারখানায় আগুন

আগের সংবাদ

সংসদে প্রধানমন্ত্রী : দেড় বিলিয়ন ডলার সহায়তা সংগ্রহের চেষ্টা চলছে

পরের সংবাদ

বিপিজিএমইএর সেমিনারে বক্তারা : পোশাক খাতের মতো অন্য শিল্পেও নজর দিতে হবে

প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : এ বছর করপোরেট ট্যাক্স কমবে। হয়তো গার্মেন্টসের মতো সমান হবে না, তবে আস্তে আস্তে কমবে। একবার এ সুবিধা দিলে পরে আর কমানো যায় না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। সচিব বলেন, আমাদের দেশে ১ কোটি লোকের আয়কর দেয়ার ক্ষমতা আছে, কিন্তু আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছে ২৬ লাখ। কর দিয়েছে আরো কম। যদি সবাই কর না দেয়, তাহলে উন্নয়ন হবে কী দিয়ে? টাকা আসবে কোত্থেকে। তিনি বলেন, দেশে মার্কেট বিস্তৃত হলেও পণ্য ডাইভারসিটি হচ্ছে না। ৪৫ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভের মধ্যে ৩৮ মিলিয়ন এসেছে পোশাকশিল্প থেকে। আর মাত্র ৭ বিলিয়ন অন্য খাত থেকে। পোশাকশিল্পের মতো এমন আরো কয়েকটি খাত থেকে সমপরিমাণ রিজার্ভ আসলে আমরা আরো স্বয়ংসম্পূর্ণ হতাম।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে প্লাস্টিক টয় ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশ আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফেকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ) সভাপতি সামিম আহমেদের স্বাগত বক্তব্যে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর দনদন চেন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবসের প্রকল্প পরিচালক মো. মনছুরুল আলম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিল্ড-এর সিইও ফেরদৌস আরা বেগম।
সেমিনারে তপন কান্তি ঘোষ বলেন, (স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণে) ২০২৬ সাল পর্যন্ত ৫ বছর আমাদের প্রস্তুতির সময় দেয়া হয়েছে। আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা ইউরোপ থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাই। এই সুবিধা তিনগুণ বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে এ সুবিধা পেলে আমাদের জন্য ভালো হতো। গার্মেন্টস ছাড়া অন্য শিল্পগুলোর দিকেও জোর দিতে হবে। সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ২০২৬ সালের এলডিসি গ্রাজুয়েশন (স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের সুপারিশ) আমাদের জন্য গর্বের, একই সঙ্গে চ্যালেঞ্জেরও। ২০৩১ সালের মধ্যম আয় এবং ২০৪১ সালের উন্নত আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার টার্গেট পূরণে প্লাস্টিক শিল্পকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। আমাদের বিশাল লোকাল মার্কেটের পাশাপাশি বিদেশেও পণ্য রপ্তানি হচ্ছে।
চায়না ভালো করছে ক্লাস্টারের জন্য এবং একই জায়গায় সবকিছু পাচ্ছে বলে। আমাদের খেলনা শিল্পে প্রচুর দক্ষ লোক দরকার। একই সঙ্গে পুরান ঢাকার লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর ইত্যাদি এলাকায় থাকা বেশির ভাগ খেলনা শিল্পকারখানার রিলোকেশন দরকার। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফেকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ) সভাপতি সামিম আহমেদ বলেন, ২৪ বছর আগে ১৯৯৮ সালে মাত্র ৭টি খেলনা পণ্যের পেটেন্ট রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু হয়। ২০২২ সালে এখন পর্যন্ত ৭১টিসহ মোট ২৫৫৮টি খেলনা পণ্যের পেটেন্ট রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। খেলনা ও ক্রোকারিজ পণ্যের রেজিস্ট্রেশন বাবদ সরকারি কোষাগারে ২ কোটি ২৭ লাখ ০৪ হাজার ৩২৮ টাকা রাজস্ব হিসেবে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের ১৩৭টি খেলনা শিল্পকারখানা আছে, এর মধ্যে ১০টি অনেক বড়। একসময় শতভাগ প্লাস্টিক খেলনা দেশের বাইরে থেকে আমদানি করা লাগত। এখন আমাদের দেশেই ৯০ ভাগ খেলনা তৈরি হয়, আমদানি করা লাগে মাত্র ১০ ভাগ। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে আমাদের মানসম্পন্ন পণ্য তৈরি করতে হবে। নইলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। মূল প্রবন্ধের সারসংক্ষেপে বিল্ড-এর সিইও ফেরদৌস আরা বেগম বলেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশগুলোতে আমাদের খেলনা পণ্য খুব বেশি রপ্তানি হচ্ছে, বিশেষ করে স্পেনে। আমাদের পণ্য শতভাগ রিসাইকেল করা হচ্ছে, যা পরিবেশবান্ধব। আমাদের খেলনা এখন দেশেই বেশির ভাগ তৈরি হলেও মেশিন আনতে হয় বিদেশ থেকে। সেই বিষয়টি ভাবা দরকার।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে এখন ৫০৩০টি প্লাস্টিক শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার মধ্যে ৯৮ শতাংশ এসএমই প্রতিষ্ঠান। প্রায় ১.৫ মিলিয়ন লোক এ খাতের সঙ্গে যুক্ত। ২০২০-২১ সালে প্লাস্টিক খাতের রপ্তানি ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ শিল্পে রপ্তানির পরিমাণ এখন ১ বিলিয়ন ডলার।
তিনি আরো বলেন, ২০২১-২২ সালে (জুলাই-এপ্রিল) মোট প্লাস্টিক রপ্তানি ১২৮ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন ডলার এবং খেলনা রপ্তানি হয়েছে ৩৭.১০ মিলিয়ন ডলার যা মোট প্লাস্টিক রপ্তানির ২৯ শতাংশ। ২০২১-২২ সালে গড় বৃদ্ধির হার ২২ শতাংশ। তাই প্লাস্টিক খেলনা শিল্প নন-ট্রাডিশনাল রপ্তানি খাত হিসেবে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়