প্রকাশিত: জুন ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
চট্টগ্রাম অফিস : বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, চট্টগ্রাম অর্থনীতির লাইফ লাইন, গেটওয়ে। চট্টগ্রামের ওপর আমাদের নির্ভর করতে হয়। এজন্য চট্টগ্রামকে আরো গুরুত্ব দেয়া দরকার। আমদানি-রপ্তানি প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চট্টগ্রাম বন্দরের আরো সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন করতে হবে। আগামী দুই বছরের মধ্যে ৮০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জনে চট্টগ্রামসহ ব্যবসায়ীরা প্রশস্ততার পথ দেখাবে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে চট্টগ্রাম চেম্বারের উদ্যোগে মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা-সিআইটিএফ উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে মেলায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য এম এ লতিফ, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন চেম্বারের সহসভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর।
টিপু মুনশি বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রীর পদের প্রতি আমার লোভ নেই। তেলের দাম বাড়ার পর বাম দল আমার পদত্যাগ দাবি করেছিল। প্রধানমন্ত্রী আমাকে বললেন, যারা পদত্যাগ চেয়েছে তারা তেলের দাম কমাতে পারবে কিনা? ব্রাজিল আর্জেন্টিনা, মালয়েশিয়া-ইন্দোনেমিয়ায় তেলের দাম না কমালে এটি সম্ভব? প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এক কোটি পরিবারকে তেল-চিনি-ছোলা দিয়েছি সাশ্রয়ী মূল্যে। ৫ কোটি মানুষ উপকৃত হচ্ছে। যতদিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় ততদিন এটি চলবে। ভর্তুকি দিতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অবস্থান বদলে গেছে। চার বছর আগে মন্ত্রী ছিলাম না, দিল্লি গেছি। একজন পাকিস্তানি জানতে চাইল, তোমাদের প্রধানমন্ত্রীর হাতে জাদু আছে? আমাদের অর্থনীতি তাদের কাছে বিস্ময়। দেশকে এগিয়ে নিতে সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের অবদান আছে। সরকার ব্যবসা করবে না, ব্যবসায় সহায়তা করবে।
মাহবুবুল আলম বলেন, চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক রাজধানী। চট্টগ্রাম দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। এ মেলার উদ্দেশ্য স্থানীয় উদ্যোক্তাদের পণ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরা। দুঃখের বিষয়, চট্টগ্রামে বাণিজ্যমেলার স্থায়ী জায়গা চাই।
তিনি বলেন, ১০০ বিলিয়ন রপ্তানির লক্ষ্য পূরণে বে-টার্মিনালের বিকল্প নেই। ফার্স্ট ট্রেকে নিয়ে ২০২৫ সালের মধ্যে এ টার্মিনালের কাজ শেষ করতে হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক আট লেনে উন্নীত করা সময়ের দাবি। বিএসটিআই, কোয়ারেন্টাইনসহ সরকারি দপ্তরের যে অফিস চট্টগ্রামে আছে তাদের ক্ষমতা দিতে হবে। মহাসড়কে ১৩ টনের বিধিনিষেধ দেশের সব মহাসড়কের জন্য আরোপ করতে হবে। নয়তো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওজন স্কেলের কার্যক্রম শিথিল করতে হবে।
সিআইটিএফ চেয়ারম্যান ও চেম্বার পরিচালক এ কে এম আকতার হোসেন বাণিজ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, দেশের ৯০ শতাংশ আমদানি-রপ্তানি হয় চট্টগ্রাম দিয়ে। দেশে খাদ্য ও তেল আমদানিতে সব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে। পণ্য খালাসে বাধা কোথায়, শুল্ক কত, মূল্য কত খতিয়ে দেখতে হবে। তিনি প্রশ্ন করেন, কেন চট্টগ্রামের ব্যবসাবাণিজ্য ধ্বংস করা হচ্ছে? কেন চট্টগ্রাম থেকে পণ্যবাহী গাড়ি ভাড়া বেশি নেয়া হবে?
চট্টগ্রাম চেম্বার জানিয়েছে, মেলায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য প্রদর্শন করবেন। একই সঙ্গে দেশের বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যের স¤প্রসারণে বিভিন্ন প্যাভিলিয়নে নিজেদের পণ্যের সমাহার দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত রাখবে। এবারের মেলার ব্যাপ্তি হবে প্রায় চার লাখ বর্গফুট। এতে ৭টি প্রিমিয়ার প্যাভেলিয়ন, ৩৩টি প্রিমিয়ার স্টল, ৯৯টি গোল্ড স্টল, ৪৮টি মেগা স্টল, ১৪টি ফুড স্টল, ২টি আলাদা জোন নিয়ে ৩১০টির বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। ওপেন প্লাজা থাকবে ১২ হাজার ৩২০ বর্গফুট। শিশু বিনোদন কেন্দ্র থাকবে ৩ হাজার বর্গফুটের। মেলায় থাকবে বঙ্গবন্ধু প্যাভেলিয়ন। এতে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বিভিন্ন বই ও প্রকাশনা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে। এবারও টিকেটের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ টাকা- তবে প্লে থেকে ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ পাবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে এই মেলা।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।