অনলাইন প্রতারণা : পার্সেলে ছেঁড়া কাপড় পাঠিয়ে মাসে আয় ৩৫ লাখ টাকা

আগের সংবাদ

কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ৭ জনের প্রাণহানি : স্পিডবোট ডুবিতে নিখোঁজ তিন, বাড়িঘর-ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

পরের সংবাদ

বিড়ালের মন খারাপ

প্রকাশিত: এপ্রিল ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঠিক বাঘের মতো দেখতে! গায়ে ডোরা কাঁটা দাগ! বিড়াল ছানাটাকে দেখেই ‘ব্রাউনি’ নাম দিয়েছে জৈয়িতা। সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে কোচিং সেরে সে শান্তিনগর বাসায় ফিরছিল। এ সময় ছানাটিকে মমতায় বুকে জড়িয়ে ধরে হাঁটা পথে জৈয়িতাকে থামালো সাবিহা।
– বিড়াল ছানাটিকে নিয়ে অনেকের কাছে গেছি। কেউ রাখে না। তুমি নাও না? তোমগো বাসায় ত একটা বিড়াল আছে! ও না হয় তার বন্ধু হবে?
জৈয়িতা খানিকটা ভাবনায় পড়ে গেল। তারপর বলল- আচ্ছা দিন আপু!
এক মাসের বিড়াল ছানাটিকে বাসায় নিয়ে এলো জৈয়িতা। ওর মামণি তো পুচকে বিড়াল পেয়ে ভাই শিবমের মতো বেজায় খুশি! মনে মনে ভাবলেন কোকোর মৃত্যুর পর থেকে সুকু বন্ধুহীন। সুকুর একাকিত্ব তা হলে ঘুচল! তিনি জীবাণুনাশক ওষুধ কুসুম গরম জলে মিশিয়ে, ইংলিশ শ্যাম্পু দিয়ে ভালোমতো ¯œান করিয়ে দিলেন ছানাটিকে! তারপর বারান্দায় শীত দুপুরের রোদে ওকে একটি পাত্রে নিরাপদে রাখলেন।
শিবমের হাতে সুকু। বিড়াল আতঙ্কে দিদার চেঁচামেচিতে শিবম সুকুকে নিয়ে বের হয়ে এলো ঘর থেকে। পাঁচ মাস বয়সি বিড়াল সুকু। কীভাবে যেন ছানাটির শরীরের গন্ধ পেল। বারান্দায় গিয়ে ওকে দেখে ফোঁস ফোঁস শব্দ করতে লাগল। সাদা ধবধবে সুকু। বাদামি রংয়ের ছানাটির দিকে চোখ বড় বড় করে তাকাল সে। সুকুর ভাব দেখে মনে হলো- ওর একার খাবারে ভাগ বসাবে ছানাটি!
৩ দিন পর সুকু আর রাগ করে না ব্রাউনির ওপর। গলায় গলায় ভাব ওদের। মা হারা ব্রাউনি সুকুকে মা ভেবে ওর দুধ চুষে প্রায় সময়ই ঘুমিয়ে পড়ে। সুকু জিহবা দিয়ে ওর শরীর চেটে দেয়। বিশাল বাড়ি। ঘোরাঘুরি, রাত জাগা, পোকামাকড় ধরা, বারান্দায় পাখি তাড়ানো আর ছোট ছোট জিনিস নিয়ে খেলায় দু’জনের সময় কাটে। এমন দৃশ্য দেখে ছানাটির জন্যও মায়া পড়ে যায় সবার! দিদাও দূর থেকে ডাকেন ‘আয় আয় আয় ব্রাউনি।’ আর বাবা জৈয়িতা, শিবম ও গিন্নির ওপর ফুঁসতে থাকেন। রেগে বলেন ‘তোমরা বাড়িটাকে বিড়াল বাসস্থান বানিয়ে ফেললে?’ সন্তানদের বলেন, ‘ভ্যাকসিন না দেয়া অবধি ওকে ধরা যাবে না’। বাবা আগে দুটি পুরুষ বিড়ালকেই পশু হাসপাতাল থেকে টিকা দিয়ে আনেন। কোকো বারান্দা থেকে একদিন সকালে বের হয়ে যায়! দেয়ালের কার্নিশে পা পিছলে একবারে নিচে! কুড়ি তলা থেকে পড়ে মাথা থেতলে মৃত্যু। তারপর থেকে বাবা বিড়ালের ওপর আর রাগ করেন না। আদর করেন। ওদের জন্য মাছ, দুধ ও মাংস কিনে আনেন।
একদিন সুকু খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিল। ৩ দিন সে খায় না! মাথা নিচু করে শুধু শুয়ে থাকে! শীতের অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় সুকু কাবু হয়ে গেল! পশু চিকিৎসক শফিকুল আহাদ জানালেন, সারাদেশে ভ্যাকসিনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে ব্যবসায়িরা। ফ্লু ভ্যাকসিন না দিতে পারায় পশু পাখিদের ঠাণ্ডা থেকে বাঁচানো যাচ্ছে না। সুকুকে অনেক চেষ্টা করেও বাঁচানো গেল না।
সুকু ছাড়া ব্রাউনি একা! হয়তো বন্ধু সুকুর কথা ভাবে সে। খাবার সে খায় না। জানালার পাশে টেবিলে বসে গালে হাত দিয়ে আলো ভরা আকাশও দেখে। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকায়। জৈয়িতা কারণ জানতেই শিবম বলে ওঠে
– বারে, ওর বুঝি অভিমান থাকতে নেই?
– কার জন্যরে ভাই?
– সুকুর জন্য ব্রাউনির মন খারাপ!

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়