খতিয়ে দেখতে শিগগিরই তদন্ত কমিটি : ঢাকা-টিটি কলেজ ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়নি

আগের সংবাদ

সড়কে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল : সড়ক পরিবহন আইন পুরোপুরি বাস্তবায়নের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের

পরের সংবাদ

‘আমার জীবনের প্রথম উপহার ছিল বই’

প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বই মানুষের চিন্তার জগৎকে প্রসারিত করে। বই পড়ার নানা দিক নিয়ে কথা হয় অভিনেত্রী ও মডেল ঊর্মিলা শ্রাবন্তী করের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার : রেজা শাহীন
ছেলেবেলার পাঠ
আমার জীবনের প্রথম উপহার ছিল বই। আমার আর আমার ভাইয়ের বয়স প্রায় সমান। পুরস্কার কিংবা উপহার হিসেবে আমার বাবা সব সময় আমাদের একটা জিনিসই দিতেন সেটি হচ্ছে বই। আমি যখন ক্লাস ওয়ানে পড়ি তখন বাবা আমাকে দুইটা বই গিফট করেন। একটা হচ্ছে ‘গোপাল ভাঁড় সমগ্র’ অন্যটা ‘এ্যারাবিয়ান নাইটস’। এরপর থেকে নিয়মিত পাঠ্য বইয়ের বাইরের বই পড়তে থাকি। যখন বড় হচ্ছি তখন ‘প্রফেসর শঙ্কু’, ‘তিন গোয়েন্দা সিরিজ’ এগুলো পড়া হয়। এরপর শাহরিয়ার কবির, জাফর ইকবালের বই পড়ি। যখন ক্লাস ফাইভ কিংবা সিক্স এ উঠি তখন হুমায়ূন আহমেদের বই পড়া শুরু করি। ক্লাস সেভেন এইটের দিকে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের ‘দূরবীন’, সমরেশ মজুমদারের ‘সাতকাহন’ পড়েছি। আরো পরে তসলিমা নাসরিন, হুমায়ুন আজাদের বই পড়া হয়েছে। এরপর লম্বা একটা সময় ধরে হুমায়ূন আহমেদের বই পড়ি।

সাম্প্রতিক পাঠ
এই বইমেলায় প্রকাশিত অনেকগুলো বই পড়া হয়েছে স¤প্রতি। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটি এখন আবার পড়ছি। নাসিম আখতার হোসাইন এবং পারভীন জলি সম্পাদিত ‘বাংলার সমাজ এবং সংস্কৃতিতে নারী’ বইটি পড়া শেষ করলাম। এখন পড়ছি বুদ্ধদেব গুহর উপন্যাস ‘মাধুকরী’। আমার পড়া বুদ্ধদেব গুহর প্রথম উপন্যাস এটি।

যে ধরনের বই বেশি পড়া হয়
সব ধরনের লেখাই পড়তে ভালো লাগে। তবে এখন উপন্যাস পড়ার আগ্রহ কম। কারণ উপন্যাস পড়তে গেলে অনেক সময়ের দরকার হয়। তাছাড়া মনোযোগ ধরে রাখাটা কঠিন হয়ে যায়।

প্রিয় লেখক
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার, হুমায়ূন আহমেদ, শাহরিয়ার কবির, জাফর ইকবাল প্রিয় লেখকের তালিকায় আছেন। আমার সবচেয়ে প্রিয় উপন্যাস জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’ আহমদ ছফার ‘অর্ধেক নারী অর্ধেক ইশ্বরী’।

কেন বই পড়ব
আমাদের সমস্ত প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। একজন মানুষ যত বেশি বই পড়বে সে তত বেশি জানবে। বই মানুষের ভেতরটা প্রসারিত করে।
লেখালেখি:
অবসরে টুকটাক লেখার অভ্যাস আছে। গল্প উপন্যাস লেখার আমার কোনো ইচ্ছে নাই। যদি কখনো বই লিখি তাহলে আমি আমার বাবাকে নিয়ে লিখবো এবং আমার নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখব।

বইমেলার স্মৃতি
বইমেলার একটা স্মৃতি মনে পড়ে। ২০১৩ কিংবা ২০১৪ সালের ঘটনা এটি। তখন আমি একটা ধারাবাহিকে কাজ করছি। নাটকটির নাম ‘সোনালী মেঘের ভেলা’। ওই নাটকে আমার সহকর্মী ছিলেন হাসি আপা। আমি, হাসি আপা ও তার মেয়ে আমরা এই তিনজন বই মেলার উদ্দেশ্য বাসা থেকে রওনা হই। মেলার গেটের কিছুটা দূরে আমাদের গাড়ি থেকে নেমে যেতে হয়। কারণ গাড়িসহ গেটের ওদিকে যাওয়া নিষেধ ছিল। আমরা রিকশায় উঠি। দুজনই শাড়ি পরেছিলাম সেদিন। আমরা রিক্সায় গল্প করতে করতে চাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে আমার শাড়ির আঁচলটা রিকশার চাকার সঙ্গে পেঁচিয়ে যায় আর শাড়ির পাড়ের অংশটুকু পেঁচায় আমার গলায়। মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল তখন। এমন সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীরা ভ্যান থেকে ছুড়ি নিয়ে শাড়ির আঁচলটা কেটে ফেলে। টিএসসিতে প্রাথমিক ট্রিটমেট নেই। তবুও মেলায় যাওয়ার আগ্রহ ফুরিয়ে যায়নি। কিছু সময় রেস্ট নেয়ার পর আজিজ মার্কেটের দেশাল থেকে একটা শাড়ি কিনি। তারপর মেলায় যাই। হাসি আপার মেয়ে অনেক ছোট ছিল। বইমেলায় যাওয়ার পর হাসি আপার মেয়েটা ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে যায়। ওর কাছে একটা বাটন ফোন ছিল। ওর ফোনে বারবার কল দিতে থাকি। ও ফোন রিসিভ করে ঠিকই চারপাশের অনেক সাউন্ড থাকায় ওর কথা পরিষ্কার বুঝতে পারছিলাম না। অনেকক্ষণ পর ওকে রাজু ভাস্কর্যের ওখানে গিয়ে খুঁজে পাই। এটা ছিল একটা দুঃখের স্মৃতি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়