লাইসেন্স ছাড়াই ৭ বছর ট্রাক চালায় জসিম

আগের সংবাদ

ফাইভ-জিতে অনাগ্রহ কেন : তরঙ্গ নিলামের শর্ত ও নীতিমালা চূড়ান্ত হয়নি > ‘বুঝে-শুনে আগে বাড়তে চায় বেসরকারি অপারেটররা

পরের সংবাদ

চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণ : উদ্বেগজনক, স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামেও করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। দিন দিন চট্টগ্রামে আক্রান্তের হার বেড়েই চলছে। চট্টগ্রামে নতুন বছরের প্রথম দিনে (১ জানুয়ারি) নয়জনের করোনা শনাক্ত হয়। আর গতকাল শুক্রবারের প্রতিবেদনে চট্টগ্রামে করোনা শনাক্ত হয় ১ হাজার ১৬৭ জনের। সংক্রমণের হার প্রায় ৩২ শতাংশ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের উদাসীনতা ও অবহেলায় সংক্রমণ বাড়ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না অনেকেই। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে চট্টগ্রামের পর্যটন স্পটগুলোতে এখনো ভিড় করতে দেখা যাচ্ছে। গণপরিবহন, শপিংমল, পর্যটন স্পট কোথাও পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে না।
করোনার ভয়াবহ এ সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের পক্ষ থেকে ১১টি বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও চট্টগ্রামের মার্কেট থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, দোকানপাট ও ফুটপাতের অধিকাংশ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতা লক্ষ্য করা গেছে। হোটেল-রেস্তোরাঁ, বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, মার্কেট ও গণপরিবহনসহ সর্বত্র মানুষ চলাফেরা করছে মাস্কবিহীন অবস্থায়। কারও মুখে আবার মাস্ক থাকলেও নেই তার সঠিক ব্যবহার। দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে আসা পর্যটকদের বেশির ভাগেরই মুখে মাস্ক নেই। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার তথ্য জানার পরও সচেতন নয় বেশিরভাগ মানুষ। ফলে সরকারের আরোপ করা বিভিন্ন বিধিনিষেধ কার্যকরের ক্ষেত্রে এসব শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। জনসচেতনতা প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. সুশান্ত বড়–য়া বলেন, সচেতন থাকা ও স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই। সচেতন না হলে, সরকারসহ সব স্বাস্থ্যকর্মীর সব ধরনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের উপপরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, আমরা স্বাস্থ্যবিধি মানছি না। ওমিক্রন বা নতুন যে ভ্যারিয়েন্ট আসছে বা যেগুলো সামনে আসবে সেগুলো একজনের হলে সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির সবার হয়ে যাবে। মানে যেটা হচ্ছে খুবই সংক্রামক। তবে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। মানুষজন ভ্যাক্সিন দিবে, সার্বক্ষণিক মাস্ক ব্যবহার করবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে। সেই সঙ্গে জনসমাগম কমাতে হবে। পাশাপাশি যে নীতিমালাগুলো দেয়া হয়েছে সেসব মানতে হবে। না হলে সংক্রমণ হু হু করে বাড়বে।
গতকাল শুক্রবার সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪টি ল্যাবে ৩ হাজার ৬৫০টি নমুনা পরীক্ষা করে ১ হাজার ১৬৭ জনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণের হার ৩১ দশমিক ৯৭ শতাংশ। নতুন আক্রান্ত ৮৮৭ জন মহানগর এলাকার ও ২৮০ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। এই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন চারজন। তাদের তিনজন উপজেলার ও একজন মহানগরের বাসিন্দা। এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ১৭ হাজার ২০৩ জন। এর মধ্যে মহানগর এলাকায় ৮৫ হাজার ৫২৪ জন এবং উপজেলায় ৩১ হাজার ৬৭৯ জন। এছাড়া সরকারি হিসাব অনুযায়ী চট্টগ্রামে করোনায় মোট মারা গেছেন ১ হাজার ৩৫৪ জন। এর মধ্যে ৭৩০ জন মহানগর এবং ৬২৪ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। গত ১৩ জানুয়ারি থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ১৬ দিনে জেলায় ১৩ হাজার ৫৫৪ জনের মধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে করোনার সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। বিধিনিষেধের মধ্যেও মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধির ক্ষেত্রে মানুষ উদাসীন। অথচ ১১ দফা নির্দেশনার মূলই হচ্ছে- মাস্কের ব্যবহার। এছাড়া রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ, আবাসিক হোটেলে থাকতে করোনা টিকার সনদ প্রদর্শনের নির্দেশনা থাকলেও সে রকম কিছুই মানা হচ্ছে না।
চট্টগ্রাম জেলার সাবেক সিভিল সার্জন মুক্তিযোদ্ধা ডা. সরফরাজ খান বাবুল বলেন, দৈনিক শনাক্তের হার বাড়ছে। এ অবস্থায় সবাইকে নতুন করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দিতে হবে। মাস্ক পড়ার পাশাপাশি আমাদের ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। ওমিক্রন খুব বেশি সংক্রামক। তাই অবশ্যই এই ভ্যারিয়েন্ট থেকে রক্ষা পেতে চট্টগ্রামবাসীকে স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশপাশি সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো এখন পরিহার করা উচিত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়