কাগজ ডেস্ক : রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বিবেচনা করবেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইউক্রেনের সীমান্তের কাছে প্রচুর সৈন্য এনে জড়ো করছে রাশিয়া, এর প্রতিক্রিয়ায় ন্যাটো সামরিক জোট পূর্ব ইউরোপে আরও জাহাজ ও জঙ্গি বিমান মোতায়েন করে নিজেদের শক্তি বাড়িয়েছে এবং তাদের বাহিনীগুলোকে সতর্ক অবস্থায় রেখেছে। এই পরিস্থিতিতেই গত মঙ্গলবার বিরল এ নিষেধাজ্ঞার হুমকি এলো বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রাশিয়া কোনো ধরনের আক্রমণের পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করে উল্টো অভিযোগ করে বলেছে, ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পদক্ষেপেই এ সংকট শুরু হয়েছে। ইউক্রেনকে কখনোই ন্যাটো জোটে নেয়া হবে না, এমন দাবিসহ পশ্চিমের কাছে নিরাপত্তা বিষয়ক বেশ কিছু নিশ্চয়তা চেয়েছে রাশিয়া। মস্কো সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র ইউক্রেনকে ন্যাটো ও রাশিয়ার মধ্যে একটি ‘বাফার জোন’ হিসেবে বিবেচনা করে। ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একাধিকবার আলোচনা হলেও তাতে সৃষ্ট উত্তেজনা কমেনি। এতদিন বাইডেন মস্কোর বিরুদ্ধে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়ে এলেও এবার তিনি বলেছেন, পুতিন ব্যক্তিগতভাবে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারেন। ইউক্রেন সীমান্তের কাছে রাশিয়া এক লাখ সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে বলে বিভিন্ন হিসাবে বলা হচ্ছে। রুশ সৈন্যরা প্রতিবেশী দেশটিতে অভিযান শুরু করলে সেটি ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় আক্রমণ’ হবে আর তা ‘বিশ্বকে পরিবর্তন করে দেবে’ বলে মন্তব্য করেছেন বাইডেন।

রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে সরাসরি পুতিনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন কিনা, গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নের উত্তরে বাইডেন বলেন, হ্যাঁ, আমি তেমনটিই দেখছি। বিদেশি নেতাদের ওপর সরাসরি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বিরল হলেও নজিরবিহীন নয়। যারা এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছেন তাদের মধ্যে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ও লিবিয়ার প্রয়াত সাবেক নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি উল্লেখযোগ্য। গত মঙ্গলবার একটি মার্কিন বিমান সামরিক সরঞ্জাম ও যুদ্ধ উপকরণ নিয়ে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে নামে। এটি ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা জোরদার করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া ২০ কোটি ডলারের সামরিক প্যাকেজের তৃতীয় চালান। এর পাশাপাশি ইউরোপে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার মার্কিন সেনাকে সতর্ক অবস্থায় রেখেছে পেন্টাগন আর প্রয়োজন দেখা দিলে নেটোর পূর্বাংশের বাহিনীকে মোতায়েন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। অন্যদিকে, রাশিয়া বলেছে তারা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে এসব লক্ষ্য করছে। ইউক্রেনকে ঘিরে উত্তেজনা উসকে দেয়ার জন্য ওয়াশিংটনকে অভিযুক্ত করে তারা।