চট্টগ্রামে রিকশা-বাসের সংঘর্ষে যাত্রী নিহত

আগের সংবাদ

ইসি গঠন বিল ‘তড়িঘড়ি’ পাস : বিএনপি ও জাপার তীব্র বিরোধিতা > সার্চ কমিটিতে থাকবেন একজন নারী সদস্য

পরের সংবাদ

পাল্লাপাল্লিতে মগবাজারে কিশোর নিহত : দুই বাসচালক গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সামনের স্টপেজে কে আগে পৌঁছাবে তা নিয়ে আজমেরী গেøারী পরিবহনের দুই চালক বেপরোয়া প্রতিযোগিতায় নেমেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় নিয়মের তোয়াক্কা না করে চালক ইমরান হোসেনের (৩৪) বাসটিকে টপকে অপর বাসের চালক মনির হোসেন সামনে যাওয়ার সময়ই রাজধানীর মগবাজারে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্রাণ হারায় সংসারের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন কিশোর মাস্ক বিক্রেতা রাকিবুল হাসান (১৪)। বিদেশ থেকে এসে মাত্র দেড়মাস আগেই বাসের হেল্পার হিসেবে কাজ শুরু করে মনির হোসেন। লাইসেন্স না থাকলেও ওইদিন মূল চালকের কাছ থেকে নিয়ে বাসটি চালাচ্ছিল সে। ইমরানও অনেক বছর ধরে গাড়ি চালালে সে লাইসেন্স নেয় মাত্র ৩ বছর আগে। ছিল মাদকাসক্ত।
মগবাজারে আজমেরী গেøারী পরিবহনের দুই বাসের চাপায় কিশোর মাস্ক বিক্রেতা নিহতের ঘটনায় দুই চালককে গ্রেপ্তারের বিষয়ে এসব কথা জানান র?্যাব মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র?্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র?্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক বলেন, গত ২০ জানুয়ারি মগবাজার মোড়ে বিকাল ৫টার দিকে আজমেরী গেøারী পরিবহনের দুইটি বাসের মাঝে চাপা পড়ে আহত হন রাকিবুল হাসান নামে এক কিশোর। ঘটনাস্থল থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনা পরবর্তীতে দুই ঘাতক চালক বাস দুটি রেখে পালিয়ে যায়। ভিকটিম ঘটনাস্থলে মাস্ক বিক্রি করছিল। তার মাস্ক বিক্রির আয়েই পরিবারটি চলছিল। দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবারের সদস্যরা সড়ক ও পরিবহন আইনে ওইদিনই রমনা মডেল থানায় একটি মামলা করে। র?্যাব জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় র?্যাব-৩ এর একটি দল গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর পল্টন এলাকা ও মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর এলাকা থেকে আজমেরী গেøারী পরিবহনের দুইটি ঘাতক বাসের চালক মনির হোসেন ও ইমরানকে গ্রেপ্তার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুজনই ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য দেয়। জিজ্ঞাসাবাদে মনির হোসেন জানায় যে, গত ৫ বছর মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত ছিল সে। তিন মাস আগে দেশে তার নিজ গ্রামের বাড়ি ভোলাতে আসে মনির। প্রায় দেড় মাস আগে ঢাকাতে কর্মসংস্থানের জন্য আসে। এক মাস আগেই আজমেরী গেøারী গাড়ির চালকের সঙ্গে দৈনিক ৪০০-৫০০ টাকা মজুরিতে হেলপারের কাজ শুরু করে। মাঝেমধ্যে বাসটি নিজেও চালাত সে। গত ২০ জানুয়ারি বিকাল ৪টার দিকে আজমেরী গেøারী পরিবহনের একটি গাড়ি সদরঘাট থেকে গাজীপুর চন্দ্রার উদ্দেশে গাড়ির মূল চালক চালিয়ে নিয়ে আসে। পথিমধ্যে চালক সুমন গুলিস্তানে এসে গাড়িটি হেলপার মনির হোসেনের দায়িত্বে দিয়ে যায়। মনির গাড়িটি চালিয়ে মগবাজার মোড়ে নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাকৃতরা আরো জানায়, মগবাজার মোড়ের সিগন্যাল ছেড়ে দিলে দ্রুত গাড়ি দুটি এগিয়ে যাচ্ছিল, তাদের উদ্দেশ্য ছিল পরবর্তী স্টপেজে যে আগে পৌঁছাতে পারবে সে অপেক্ষারত বেশি সংখ্যক যাত্রীকে তার বাসে নিতে পারবে। এমতাবস্থায় অসুস্থ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে ওভারটেক করার সময় দুই গাড়ির মাঝখানে চাপা পড়ে ওই কিশোর। র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, গ্রেপ্তার ইমরান হোসেন ১০-১২ বছর ধরে আজমেরী গেøারী নামক কোম্পানির বাস চালিয়ে আসছে। ঘাতক বাসটি (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৬০-৫৬) আনুমানিক দু’বছর ধরে চালাচ্ছে সে। যদিও এক সময় এ ব্যক্তিও হেলপার ছিল। বিগত ৩ বছর ধরে ড্রাইভিং লাইসেন্স পায় সে। মালিকের কাছ থেকে দৈনিক ৩ হাজার ৫০০ টাকা হারে বাসটি ভাড়ায় চালানো শুরু করে। গত ২০ জানুয়ারি ৪টার দিকে যথারীতি বাসটি নিয়ে সদরঘাট থেকে গাজীপুর চন্দ্রার উদ্দেশে রওনা হয়। মগবাজারে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটায়। গ্রেপ্তার ইমরান মাদকাসক্ত। তার বিরুদ্ধে মাদকাসক্তির কারণে গত বছর কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাও হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়