নৌপুলিশের অভিযান : ৩৫ লাখ মিটার জাল জব্দ

আগের সংবাদ

পঞ্চম দফায়ও সারাদেশে ব্যাপক সহিংসতা > ভোটে ঝরল আরো ১১ প্রাণ : পুলিশের গাড়িতে আগুন, আহত শতাধিক, আটক অর্ধশত

পরের সংবাদ

মূলহোতা ছগির গ্রেপ্তার : হোটেলবয় থেকে জালটাকা তৈরির কারিগর

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বরগুনা থেকে ১৯৮৭ সালে ঢাকায় এসে প্রথমে একটি হোটেলে বয়ের কাজ নেয় ছগির হোসেন। পরবর্তী সময় ভ্যানে ফেরি করে গার্মেন্টসপণ্য বিক্রয় শুরু করে। পণ্য বিক্রয়ের সময়েই ছগিরের সঙ্গে ইদ্রিস নামের এক জালটাকা কারবারির পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে সুসম্পর্ক। আর হোটেলবয় থেকে জালটাকা কারবারি হয়ে যায় ছগির।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিরপুর এলাকার পল্লবীর একটি বাসা থেকে জালটাকা তৈরি চক্রের তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার জালনোট উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- জালনোট চক্রের অন্যতম হোতা ছগির হোসেন (৪৭) ও তার সহযোগী মোছা. সেলিনা আক্তার পাখি (২০) ও রুহুল আমিন (৩৩)।
গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, শীতকালীন বিভিন্ন মেলা, জনসমাগম অনুষ্ঠান ও বিশেষ করে পূর্বাচলে আয়োজিত বাণিজ্যমেলাকে ঘিরে সক্রিয় হয়ে ওঠে জালটাকা তৈরির চক্রটি। তবে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত সোমবার রাতেই তাদের র‌্যাব-৪ এর একটি দল গ্রেপ্তার করে। এ চক্রের মূলহোতা ছগির হোসেন। সে প্রথমে জাল নোট তৈরি ও পরবর্তী সময় তা বিক্রির বিষয়টি রপ্ত করে নেয়।
কমান্ডার খন্দকাল আল মঈন বলেন, ২০১৭ সালে জালনোটসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয় ইদ্রিস ও ছগির। বছরখানেক জেল খেটে আবার গত ২০১৮ সাল থেকে জালনোট তৈরি শুরু করে ছগির। তৈরি করা জালনোটগুলো তার সহযোগীরা গ্রেপ্তার রুহুল আমিন, সেলিনা ও অন্যান্য ৭-৮ জনের মাধ্যমে বিক্রয় করে আসছিলেন। ছগির নিজেই পুরান ঢাকা থেকে জালটাকার উপকরণ কিনে তা দিয়ে নোট তৈরি করত।
তিনি আরো বলেন, প্রতি ১ লাখ টাকার জালনোট তৈরিতে ছগিরের খরচ হতো ৫-৬ হাজার টাকা। আর ৩ লাখ টাকার জালনোট বিক্রি করতেন ১০-১৫ হাজার টাকায়। তার সহযোগীরা মাঠপর্যায়ে সরবরাহ ও বিক্রি করত। টার্গেট বা চাহিদা অনুযায়ী, ছগির প্রতি মাসে তার সহযোগীদের বোনাসও দিত। ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১০ কোটি টাকা মূল্যমানের জালটাকা তৈরি করেছে ছগির। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে সে জালনোট প্রিন্টিংয়ের সময় কাগজের অব্যবহৃত ও নষ্ট অংশগুলো পুড়িয়ে ফেলত। তাছাড়া সে ধরা পড়ার ভয়ে ঘন ঘন বাসা পরিবর্তন করত।
র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, গ্রেপ্তার সেলিনা আক্তারের স্বামীও জালনোট তৈরি চক্রের একজন সক্রিয় সদস্য। তার স্বামী এখন জেলে রয়েছে। সেলিনা ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে একটি বিউটি পার্লারে কাজ করে। স্বামীর মাধ্যমে ছগিরের সঙ্গে তার প্রথম পরিচয় হয়।
এরপর সে নিজেও এ চক্রে জড়িয়ে পড়ে। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যে আরো বেশ কয়েকজন এই চক্রের সদস্যের নাম জানা গেছে, তাদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান র‌্যাব কর্মকর্তা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়