ওয়ারী থেকে উদ্ধার : মারা গেল সেই নবজাতকটি

আগের সংবাদ

বিদ্রোহের ভারেই নৌকাডুবি

পরের সংবাদ

সিলেটে জীবনের কিছু শ্রেষ্ঠ সময়

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

হঠাৎ জানতে পারলাম, এবার সিলেট হৃদবন্ধন সাহিত্য পর্ষদের সম্মাননা পাচ্ছেন যে ছয়জন তার মধ্যে আমি রয়েছি। আমার ‘জীবন যেখানে যেমন’ বইটির জন্য এই সম্মাননা প্রদান করা হবে।
কথা বললো হৃদবন্ধন সাহিত্য পর্ষদের দুই কর্মকর্তা অধ্যাপক হিমাংশু রায় হিমেল ও অধ্যাপক মিহির মোহন। তাদের দাবি, দাদা যে করে হোক বৌদিকে নিয়ে আপনাকে আসতেই হবে।
সিলেট লেখক গাইড প্রকাশনা উৎসব এবং গুণীজন সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে ১৯ নভেম্বর বিকেলে সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে। সস্ত্রীক আমি সিলেট রওনা হয়ে যাই আগের দিন রাতে।
১৯ নভেম্বর বেলা ১১টায় নগরীর ঐতিহাসিক ব্রাহ্ম মন্দির প্রাঙ্গণে ছিল সিলেট জেলা ভোরের কাগজ পাঠক ফোরামের সভাপতি লেখিকা অমিতা বর্ধনের লেখা বই ‘ত্রয়ী’র প্রকাশনা অনুষ্ঠান। এই মন্দিরে একসময় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আগমন ঘটেছিল। এজন্য এই মন্দির নিয়ে অনেকেরই আগ্রহ রয়েছে। অনুষ্ঠানে অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
দুপুর ২টায় প্রকাশনা অনুষ্ঠান শেষে আমরা চলে যাই অস্থায়ী আবাসস্থল হোটেল গোল্ডেন সিটিতে। ঘণ্টাখানেক বিশ্রাম নিয়ে ফিরে আসি সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে। বিকেল ৮টায় সেখানে মোড়ক উন্মোচিত হয় সিলেট লেখক গাইডের। মোড়ক উন্মোচনের প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকায় বসবাসকারী সিলেটের কৃতী সন্তান অধ্যাপক ডা. অরুপ রতন চৌধুরী। সিলেট লেখক গাইড সম্পাদনা করেছেন হিমাংশু রায় হিমেল। সহযোগিতায় ছিলেন মিহির মোহন, তপন চন্দ্র পাল, দেবাংশু মিত্র, মাহবুবা সুলতানা ও নবনিতা দাশ পুরকায়স্থ।
সিলেট লেখক গাইডে ঢাকার বাইরের ১০ জন অতিথি লেখকের নাম সংযোজিত হয়েছে, যার মধ্যে আমিও আছি। এই গাইডে সিলেটের অনেক গুণীজনের নাম-ঠিকানা সংযোজিত হয়েছে, যা ভিন্নধর্মী একটি সুন্দর উদ্যোগ। এমন উদ্যোগ আমাদের দেশের প্রতিটি এলাকার গুণীজনদের নিয়েই হওয়া উচিত।
সিলেট লেখক গাইডের মোড়ক উন্মোচন শেষে শুরু হয় গুণীজন সম্মাননা। সিলেটের পাঁচ কৃতী মানুষের পাশে আমাকেও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। গুণীজন হিসাবে যাদের সম্মাননা প্রদান করা হয় তারা হলেন- সাহিত্যে প্রফেসর নৃপেন্দ্রলাল দাশ ও ভোলানাথ পোদ্দার, শিক্ষায় প্রফেসর মুহা. হায়াতুল ইসলাম আকঞ্জি, জনসেবায় মো. মখলিছুর রহমান কামরান, নাটকে অরিন্দম দত্ত চন্দন এবং মানবাধিকারে রোটারিয়ান আবু সালেহ ইয়াহিয়া। সম্মাননা প্রাপ্তদের পাঁচজন সিলেটের এবং আমি একাই সিলেটের বাইরের মানুষ। আমি সম্মাননা গ্রহণ করি ডা. অরুপ রতন চৌধুরীর হাত থেকে। মুগ্ধ হয়ে শুনি পুণ্যভূমি সিলেটের গুণীজনদের বক্তব্য। মনে হলো, এমন একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে না পারলে জীবনের হিসাব-নিকাশ থেকে অনেক কিছুই বাদ পড়ে যেতো।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনের দায়িত্বে ছিলেন দরাজ গলার মানুষ সিলেট জেলা পাঠক ফোরামের সাবেক সভাপতি বিনয় ভূষণ তালুকদার এবং মাহবুবা সুলতানা। অনুষ্ঠান শেষ হলেও আনন্দ কখনো শেষ হয় না, তার প্রমাণ- শুরু হওয়া সিলেট অঞ্চলের বিখ্যাত ধামাইল গান। অন্যান্য গুণী শিল্পীর পাশাপাশি সুললিত কণ্ঠে গাইলেন সিলেট পাঠক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মিহির মোহনের স্ত্রী ইমা সাহা। মুগ্ধ হয়ে শুনি গান। এরপর শুরু হয় ধামাইল গানের তালে তালে নাচ। নাচে অংশ নেন ভোরের কাগজ পাঠক ফোরাম সিলেটের বর্তমান সভাপতি অমিতা বর্ধন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মিহির মোহন, তার স্ত্রী ইমা সাহা, মেয়ে নিধি, অধ্যাপক হিমাংশু রায় হিমেল, বোন নবনীতা দাশ পুরকায়স্থ, আমার স্ত্রী চপলা রানী পোদ্দারসহ অনেকে। হাল্কা আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে শেষ হয় সিলেট অঞ্চলের গুণীজনদের মিলন মেলা।
এতো সুন্দর অনুষ্ঠান উপভোগ করার মাঝেও ভুলিনি আমাদের সঞ্জীব চৌধুরী, আরিফ জেবতিক, মারুফ আহমেদ, সালাম ফারুক এবং ইখতিয়ার ভাইয়ের কথা। কারণ তাদের আমন্ত্রণে বিভিন্ন সময় সিলেট গিয়েছি আমি, ভোরের কাগজ পাঠক ফোরাম ঢাকার সাবেক সভাপতি মরিযাদ হারুন, সামস সাগর, বর্তমান সভাপতি দন্ত্যস সফিক, সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন ও সহ-সভাপতি সরফরাজ উদ্দিন পারভেজ। একসময় সিলেট বাস করতো বোন কাজল, তাদের বাসায়ও আমরা গিয়েছি। সব মিলিয়ে সিলেট আমার অনেক প্রিয় জায়গা। পুণ্যভূমি সিলেটের কথা কখনো ভুলবার নয়, ভুলবোও না।
:: প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ঢাকা পরিবার

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়