এ মাসের ১৫ দিনে ডেঙ্গু রোগী ছাড়ালো ৩ হাজার

আগের সংবাদ

ভস্মীভূত হিন্দুপল্লীজুড়ে আতঙ্ক : মূল হোতাসহ ৪৬ জন গ্রেপ্তার, থানায় দুই মামলার প্রস্তুতি, প্রতিবাদে রংপুরে বিক্ষোভ > সাম্প্রদায়িক হামলা

পরের সংবাদ

কুমিল্লার ঘটনায় নির্মূল কমিটির গণকমিশন > দেশকে ‘হিন্দুশূন্য’ করার সুপরিকল্পিত অপপ্রয়াস : আগামী ৩০ নভেম্বর শ্বেতপত্র প্রকাশ হবে

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : কুমিল্লার ঘটনা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর বাংলাদেশকে পরিকল্পিতভাবে ‘হিন্দুশূন্য’ করার প্রয়াস এই ঘটনা। এজন্য দায়ী অপশক্তিকে দ্রুত বিচারের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা করে প্রকৃত ঘটনা জনসম্মুখে প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গতকাল রবিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সার্কিট হাউসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লার সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী সন্ত্রাস সম্পর্কে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এবং জাতীয় সংসদের আদিবাসী ও সংখ্যালঘুবিষয়ক ককাসের যৌথ উদ্যোগে গঠিত ‘বাংলাদেশে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশন’-এর তদন্ত ও গণশুনানিতে এই দাবি করা হয়েছে। কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সুনামগঞ্জ, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর ও সাতক্ষীরাসহ সারাদেশের গত পাঁচ বছরের মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক হামলার বিষয়ে ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য গণতদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন ও সুপারিশসহ শ্বেতপত্রে অন্তর্ভুক্ত হবে যা আগামী ৩০ নভেম্বর প্রকাশিত হবে।
বাংলাদেশে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের নেতৃত্বে গণশুনানিতে অংশ নেন করেন ককাসের আহ্বায়ক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, সাবেক আইজিপি নিরাপত্তা বিশ্লেষক মোহাম্মদ নুরুল আনোয়ার, বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি হাফেজ মাওলানা জিয়াউল হাসান, ব্যারিস্টার ড. তুরিন আফরোজ, মানবাধিকার কর্মী কাজী মুকুল, মওলানা হাসান রফিক, সমাজকর্মী এস এম শহীদুল্লাহ, সমাজকর্মী সাইফ উদ্দিন, সমাজকর্মী সাইফ রায়হান প্রমুখ। গত ১২ অক্টোবর রাতে কুমিল্লার নানুয়ার দীঘিরপাড়ের একটি দুর্গাপূজার মণ্ডপে কুরআন অবমাননার তথাকথিত অভিযোগে উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর হামলার বিষয়ে বক্তব্য রাখেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কুমিল্লার জেলার আহ্বায়ক সাংবাদিক দিলীপ মজুমদার, কুমিল্লা মহানগর পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অচিন্ত্য দাস টিটু।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গণকমিশনের গণশুনানিতে ৩০ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। তারা হলেন- আদিবাসী ও সংখ্যালঘুবিষয়ক সংসদীয় ককাসের সদস্য উবায়দুল মুকতাদির চৌধুরী এমপি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এডভোকেট কাজী মাসুদ আহমেদ, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাজিদুল ইসলাম, ২০১৬ সালের সাম্প্রদায়িক হামলার ভুক্তভোগী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের রসরাজ দাস, জেলা নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও আশুগঞ্জ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মো. শাহিন সিকদার, নির্মূল কমিটির আইন সহায়ক কমিটির সদস্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আইনজীবী এডভোকেট নাসির মিয়া, জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন তামি, সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক সাংবাদিক এডভোকেট আব্দুর নুর, জেলা আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক প্রভাষক মনির হোসেন, এডভোকেট সৈয়দ মো. জামাল, জেলা সদরের ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালীবাড়ি মন্দিরের প্রধান পুরোহিত মদন মোহন চক্রবর্তীর ছোট ছেলে জীবন কুমার চক্রবর্তী প্রমুখ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় উবায়দুল মুকতাদির চৌধুরী বলেন, গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যা থেকে হেফাজত তথা কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক মাদ্রাসার ছাত্ররা শহরে তাণ্ডব শুরু করে। সরকারি স্থাপনাগুলো ভেঙে গুঁড়িয়ে ফেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। তারা কোনো রকম বাধা ছাড়াই এ তাণ্ডব চালায়। ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে সেখান থেকে তারা জানায়, আমরা আগুন নেভাতে যেতে পারব না, উপরের নির্দেশ আছে। রেলস্টেশন, ভূমি অফিসসহ সরকারি যত স্থাপনা, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সংগীতাঙ্গণ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সব ভেঙে আগুন লাগিয়ে দেয়। এমনকি আমার বাড়িও এ তাণ্ডব থেকে রক্ষা পায়নি। আমি থানায় মামলা করলে তারা সে মামলা সিআইডিতে প্রেরণ করে এবং সিআইডি আমাকে জানায়- আইসিটি আইনি যে মামলা আমি করেছি তার কোনো প্রমাণ তারা পাননি। তাণ্ডবের পর যেসব হেফাজত নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তার হয়েছিল তাদের অনেকেই ইতোমধ্যে জামিনে বের হয়ে গেছে।
এদিকে ২০১৬ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার শিকার রসরাজ দাস বলেন, আমি ৫ বছর ধরে প্রতিমাসে আদালতে হাজিরা দিতে দিতে খুবই অসহায় হয়ে পড়েছি। প্রতিমাসে গ্রাম থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে গিয়ে হাজিরা দিতে যে টাকা খরচ হয় তা বহন করার অবস্থা আমার নেই। আমি রাষ্ট্রের কাছে এই মামলা থেকে বেকসুর খালাস চাই। এই মামলা থেকে রেহাই পেতে চাই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়