তথ্যমন্ত্রী : বিদেশি টিভির ক্লিন ফিড ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে

আগের সংবাদ

দখল চলছেই, উদ্ধার গতিহীন > বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল : বহুতল ভবনের বদলে ভাঙা হয়েছে ১০টি টিনের ঘর

পরের সংবাদ

ওটিটি ও দেশি কনটেন্টের হালচাল

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ইতোমধ্যে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে একটি বিপ্লব ঘটে গেছে। বাংলাদেশেও এর বৈপ্লবিক ঢেউ আছড়ে পড়ছে বারবার। অবশ্য এটি সময়ের চাহিদা বটে। ওটিটি প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশি কনটেন্ট কতটা জায়গা করে নিয়েছে? এ প্রশ্নের জবাব দিলেন তরুণ নির্মাতা মাবরুর রশীদ বান্নাহ বলেন, ‘বৈশ্বিক ওয়েব প্ল্যাটফর্মের যে বিস্ফোরণ ঘটেছে তাতে আমাদের কোনোরকম অবদান নেই। আমরা সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছি না। করোনাকালীন অ্যামাজন প্রাইম, নেটফ্লিক্সসহ অন্যান্য ওয়েব প্ল্যাটফর্মগুলো যেভাবে এগিয়ে গেছে সেখানে আমাদের কোনো বড় রকম অংশগ্রহণ নেই। এর একটি কারণ আমাদের সামগ্রিক ব্যবস্থা। তার জন্য প্রথমেই আমাদের সহজে সিনেমা, নাটক পাওয়ার যে ব্যবস্থা সেটি বন্ধ করতে হবে। সালমান খান, শাহরুখ খান বা অন্যদের মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলো আপনি চাইলেই ইউটিউব কিংবা বিনামূল্যের স্ট্রিমিং সাইটে পাবেন না। কিন্তু আমাদের এখানে ইউটিউবে আপনি নতুন নাটক থেকে সিনেমা সব-ই পাচ্ছেন। এ বিষয়টা বন্ধ করা প্রয়োজন। দর্শক ইউটিউবেও টাকা দিয়ে মেগাবাইট কিনে দেখে। ওয়েব প্ল্যাটফর্মে টাকা দিয়ে সাবস্ক্রিপশন করে দেখতে পারবে না? অন্যদিকে সিনেমা হলের ওপর নির্ভরতা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে আদৌ কোনো সফলতার মুখ দেখাতে পারবে কিনা তা নিয়ে বড় একটি প্রশ্ন থেকে যায়। যেমন ঢাকা শহরে স্টার সিনেপ্লেক্স বা ব্লকবাস্টার সিনেমা হলগুলো আছে। কিন্তু বাংলাদেশ মানেই তো ঢাকা নয়! দেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহরে মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হল নেই। তাহলে সেসব জায়গায় কবে মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হল হবে, কবে তার ওপর নির্ভর করে আমরা সিনেমা বানাবো? মূলত আমাদের সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। সিনেমা হল পাঁচ মাস বন্ধ, বিকল্প কিছু ভাবতে হবে।’
এদিকে বিষয়টি নিয়ে নির্মাতা তানিম রহমান অংশু বলেন, ‘ওটিটি প্ল্যাটফর্ম সিনেমা হলের বিকল্প হবে না ঠিক তবে সিনেমার ভবিষ্যৎ ওটিটি প্ল্যাটফর্মকেন্দ্রিক। কিন্তু আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ওটিটি কনসেপ্টটা এখনো ক্লিয়ার-ই না। দর্শক টাকা খরচ করে সাবস্ক্রিপশন নিয়ে সিনেমা দেখবে এমন বিষয় এডাপ্ট করতেই পারেনি এখনো। তাছাড়া হলের বিপরীতে আপনি দর্শকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে একটি সিনেমা দেখাবেন, তার গুণগত মান অবশ্যই ভালো হতে হবে। ফলে সব কিছুর বিবেচনায় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে চিন্তা আসলে বেশ সময়ের ব্যাপার।’ বাস্তবিক অর্থে ওটিটিতে সাবস্ক্রিপশন কিনে কনটেন্ট উপভোগ করছে কতজন? সম্প্রতি চরকি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ শিরোনামের একটি সিনেমা। যেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই যে পাইরেটেড হয়ে যাওয়া- এটি আটকানো যাচ্ছে না কোনোভাবেই। কান চলচ্চিত্র উৎসব থেকে ঘুরে আসা ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সিনেমাটিও পাইরেটেড হয়ে ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন মাধ্যমে। অবশ্য পরে সিনেমা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। কিন্তু বিনামূল্যে যখন জনগণ কনটেন্ট পাচ্ছে তখন কেনো মূল্য চুকিয়ে দেখবে? শিল্প বরাবর-ই বিকশিত একটি মাধ্যম। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শিল্প পরিবর্তিত হয়। করোনা ভাইরাসের প্রকোপে সারা বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যখন মুষড়ে পড়েছে তখন সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতেও তার আঁচ লাগাটা স্বাভাবিক। কিন্তু সে আঁচকে সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে কাটিয়ে উঠতে বিশ্বের বড় বড় সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি সিনেমা হল কেন্দ্রিকতাকে কমিয়ে ডিজিটাল ব্যবস্থাকে বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করছে। ওটিটি প্ল্যাটফর্মে নতুন সিনেমা মুক্তি দিয়ে বৈশ্বিক দর্শকের কাছে সিনেমাকে পৌঁছে দিচ্ছে। সেখানে বাংলাদেশে সর্বোপরি পুরোনো ব্যবস্থাকে আঁকড়ে ধরে রয়েছে। যতটুকুও এগোচ্ছে তাতে বাধা দিচ্ছে পাইরেসি নামক ভাইরাস। সুতরাং ভিন্নপথে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ দর্শকের কাছে পৌঁছানোর বিরুদ্ধে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। তা না হলে সিনেমা হল হোক বা ওটিটি বাংলা চলচ্চিত্র- কখনোই আলোর মুখ দেখবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়