প্রকাশিত: আগস্ট ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
কাগজ প্রতিবেদক : ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই-সিএসই) ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেট এক যুগ পরে বাতিল হচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। তবে মার্কেট সেনসিটিভিটি থাকার কারণে কোম্পানিগুলোর নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র বলছে, কোম্পানিগুলোকে স্মল ক্যাপিটাল প্ল্যাটফর্ম (এসএমই) ও অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে (এটিবি) স্থানান্তর করা হবে। এজন্য একটি খসড়া তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। মূলত কোম্পানিগুলোর আর্থিক সক্ষমতা ও সম্ভাবনা যাচাই করে এ স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এছাড়া যেসব কোম্পানি শেয়ারবাজারে থাকতে চায় না, সেগুলোকে ওটিসি মার্কেট থেকে তালিকাচ্যুত করা হবে। ডিএসই ও সিএসইর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। শিগগিরই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
২০০৯ সালের উভয় শেয়ারবাজারে ওটিসি মার্কেট চালু করা হয়। বিশেষ করে উৎপাদনে না থাকা, নিয়মিত বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) না করা, কাগুজে শেয়ার ডিমেট না করা, নিয়ম অনুযায়ী আর্থিক প্রতিবেদন জমা না দেয়া, লভ্যাংশ প্রদান না করা এবং সিকিউরিটিজ আইন যথাযথভাবে পরিপালন না করা কোম্পানিগুলোকে মূল মার্কেট থেকে ওটিসিতে শাস্তিস্বরূপ স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে কোম্পানিটি বা উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শাস্তি দেয়ার উদ্দেশ্যে ওটিসি মার্কেটে পাঠানো হলেও কার্যত শাস্তি পাচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বর্তমানে ডিএসইর ওটিসি মার্কেটে ৬১টি ও সিএসইর ওটিসি মার্কেটে ৪৭টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। ওইসব কোম্পানির মধ্যে প্রাথমিকভাবে স্মল ক্যাপিটাল প্ল্যাটফর্মে (এসএমই) ১০টি, অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে ৩২টিকে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এছাড়া এক্সিট প্ল্যান বা তালিকাচ্যুত আওতায় রয়েছে ১৯টি কোম্পানি। এ বিষয়ে শিগগিরই প্রজ্ঞাপন জারি করবে বিএসইসি।
তবে স্মলক্যাপ প্ল্যাটফর্ম ও অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে স্থানান্তরযোগ্য কোম্পানিগুলোর যে খসড়া তালিকা করা হয়েছে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ওই তালিকায় আরো কোম্পানির নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ওটিসির যেসব কোম্পানি বর্তমানে উৎপাদনে রয়েছে, সেগুলো এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে।
এছাড়া ওটিসিতে কিছু সম্ভাবনাময়ী কোম্পানি রয়েছে, যাদের শেয়ার কিনতে আগ্রহী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। তাই সেসব কোম্পানিকে সেই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সে হিসেবে স্মলক্যাপ প্ল্যাটফর্মে ১৫টি বা এর অধিক কোম্পানি এবং অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে ৩৫টির অধিক কোম্পানি স্থানান্তর করার চিন্তাভাবনা করছে বিএসইসি। আর কিছু কোম্পানি ওটিসি থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন করেছে। তাদেরকে বের হয়ে যাওয়ার পথ করে দেয়া হবে।
এছাড়া এসএমই ও এটিবি বোর্ডে যেসব কোম্পানি থাকবে, সেগুলো প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে না। কোম্পানিগুলো প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের থেকে প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে। পরবর্তীতে কোম্পানিগুলোর যদি আর্থিক অবস্থা ভালো হয়, তখন আইপিওর মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করার সুযোগ দেয়া হবে।
এ বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে আমরা অনেক দিন ধরে চিন্তাভাবনা ও কাজ করছি। ওটিসিতে থাকা কোম্পানিগুলোকে বছরের পর বছর বসিয়ে রাখা যাবে না। তাই কোম্পানিগুলোর আর্থিক সক্ষমতা অনুযায়ী স্মলক্যাপ প্ল্যাটফর্ম ও অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে স্থানান্তর করা হবে। পাশাপাশি যেসব কোম্পানি শেয়ারবাজার থাকতে অনিচ্ছুক, তাদেরকে বের হয়ে যাওয়ার পথ করে দেয়া হবে। তাই এ বিষয়টি নিয়ে আমরা আরো বেশি চিন্তাভাবনা করছি।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরেই ধারাবাহিক আর্থিক অবস্থার অবনতির কারণে পুঁজিবাজারের মূল মার্কেট থেকে ওটিসিতে সর্বশেষ স্থানান্তর হয়েছে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ বিডি। আর আর্থিক সক্ষমতা ফেরায় ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে সর্বশেষ ফিরেছে তমিজুদ্দিন টেক্সটাইল, বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার, পেপার প্রসেসিং ও মুন্নু ফেব্রিক্স।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।