প্রণোদনা ঋণের জন্য ঘুষ লাগে ২৯ শতাংশ ব্যবসায়ীর

আগের সংবাদ

অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়ছে : করোনার প্রকোপ কমার পর ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও বিষণ্নতার বড় আঘাত আসছে

পরের সংবাদ

উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী : কক্সবাজারে নির্মাণ হচ্ছে দেশের দীর্ঘতম রানওয়ে

প্রকাশিত: আগস্ট ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিমানবন্দরের রানওয়েতে যখন উড্ডয়ন বা অবতরণ করবে তখন বিমানের দুপাশে থাকবে বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশি, দৃষ্টিনন্দন এমন স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ রানওয়েটি নির্মাণ করা হচ্ছে সাগরকন্যাখ্যাত পর্যটন নগরী কক্সবাজার বিমানবন্দরে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল রবিবার এই সম্প্রসারণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
১০ হাজার ৭০০ ফুট দীর্ঘ এই রানওয়ের ১ হাজার ৩০০ ফুটই থাকবে বঙ্গোপসাগরের মধ্যে। সোনাদিয়া দ্বীপের বুকচিরে মহেশখালী চ্যানেলের কিয়দংশ ভরাটের মাধ্যমে যখন বিমানবন্দরটির রানওয়ের পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে তখন দেখা যাবে সৌন্দর্যের আরেক জগৎ। সম্প্রসারিত অংশ সমুদ্রের যেটুকু জুড়ে হবে, সেখানে পানিতে ব্লক, জিওটিউব ইত্যাদি ব্যবহার করে শুরুতেই একটি বাঁধের মতো তৈরি করা হবে। পরে বাঁধের ভেতরকার পানি সেচ করে ফেলা হবে এবং গভীর সমুদ্র থেকে ড্রেজিং করে ভেতরে এনে ফেলা হবে বালি। বালি দিয়ে সমুদ্রের ওই অংশটি ভরাট হলে সেখানে ‘স্যান্ড পাইলিং’-এর মাধ্যমে রানওয়ের ভিত তৈরি করা হবে। সর্বশেষে পাথরের স্তর বসিয়ে পুরো রানওয়ে সিল করে দেয়া হবে। তার ওপর হবে পিচ ঢালাইয়ের কাজ। এরপর হবে রানওয়ের শোভাবর্ধন ও নির্দেশক বাতি স্থাপনের বাকি কাজ। সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা এমনটাই জানিয়েছেন। তাদের মতে, দেশে এই প্রথমবারের মতো এই প্রক্রিয়ায় কোনো বিমানবন্দরের রানওয়ে তৈরি করা হচ্ছে।
রানওয়ে সম্প্রসারণ হলে বিশ্বের সবচেয়ে সুপরিসর উড়োজাহাজ বোয়িং-৭৭৭ ও বোয়িং-৭৪৭ এর মডেলের যাত্রীবোঝাই বিমানও এখান থেকে উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে পারবে। এছাড়া এখানে রিফুয়েলিংয়েরও ব্যবস্থা থাকবে। এতে কক্সবাজারে দেশি-বিদেশি পর্যটকের আনাগোনা আরো বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে বিমানবন্দরের বিদ্যমান রানওয়ে ও অবকাঠামো সব ধরনের বিমান চলাচলের জন্য উপযোগী না হওয়ায় সরকারের তরফ থেকে রানওয়ে বৃদ্ধি ও আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণ কাজে হাত দেয়া হয়। সম্প্রসারণের কাজ দুটি চীনা প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়। গত ৯ ফেব্রুয়ারি তাদের সঙ্গে সরকারের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। সব মিলে রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজ শেষ হতে তিন বছরের কিছু কম সময় লাগবে বলে জানান বিমানবন্দর প্রকল্পের প্রকৌশলী এনামুল হক। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের পর কক্সবাজারকে দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিণত করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই সরকার এই মহাযজ্ঞ শুরু করেছে। এটি হতে যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় রানওয়ে। বর্তমানে সবচেয়ে বড় রানওয়েটি হচ্ছে রাজধানী ঢাকার হজরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। যার দৈর্ঘ্য ১০ হাজার ৫০০ ফুট। এই মহাযজ্ঞে বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণের পাশাপাশি আরো কয়েকটি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে। এগুলো হলো- নতুন টার্মিনাল ভবন, গ্রাউন্ড লাইটিং সিস্টেম, সেন্ট্রাল লাইন লাইট, সমুদ্র বুকের ৯০০ মিটার পর্যন্ত প্রিসিশন অ্যাপ্রোচ লাইটিং, ইন্সট্রæমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম, নিরাপত্তা প্রাচীর নির্মাণ ও বাঁকখালী নদীর উপর সংযোগ সেতু। সব মিলিয়ে প্রায় পৌনে চার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প। তবে শুধু রানওয়ে সম্প্রসারণের জন্য ব্যয় করা হবে দেড় হাজার কোটি টাকারও বেশি বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক ইউসুফ ভূঁইয়া।
শুরুতে পরিকল্পনা করা হয়েছিল শহরের দিকে বিমানবন্দর সম্প্রসারণ করা যায় কিনা। কিন্তু দেখা যায়, এতে শহরের একটি বড় অংশ বিমানবন্দরের দখলে চলে যাবে। যার মধ্যে বিলাসবহুল কয়েকটি হোটেল, আবাসিক ভবন, লাবণী বিচ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও স্থাপনা বিদ্যমান। এ কারণে বিমানবন্দরের উল্টো পাশে মহেশখালী চ্যানেলের দিকে সমুদ্রের উপরেই এই রানওয়ে নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়