ওবায়দুল কাদের : ২১ আগস্ট মামলার আপিল শুনানি শুরু শিগগিরই

আগের সংবাদ

মহামারিতে মেগা প্রকল্পে স্থবিরতা

পরের সংবাদ

এশীয় মিত্রদের জন্য কোন বার্তা কমলার? > আফগানিস্তান বিপর্যয়

প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : তালেবানের হাতে কাবুল পতনের ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ঝটিকা সফর শুরু করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। আফগান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগাকুল এই অঞ্চলকে ভরসা দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের ‘সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’ দেয়।
কিন্তু তার কথায় কি ভরসা রাখবে দক্ষিণ এশিয়া? চীন যেভাবে আফগান পরিস্থিতিকে বিরল একটি সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করছে, তা কি আটকাতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র?
সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং গত সোমবার সতর্ক করে দিয়ে বলেন, আফগানিস্তানে যা ঘটছে তার পরিপ্রেক্ষিতে আমেরিকার পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে আঞ্চলিক অনেক দেশ নজর রাখছে। এই অঞ্চলে আমেরিকার সবচেয়ে বড় দুই মিত্র দেশ দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান। এ দুটি দেশে এখনো হাজার হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে।
গত সপ্তাহে এবিসি টিভিতে এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট বাইডেন জোর দিয়ে বলেন, আফগানিস্তানের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়া-জাপান-তাইওয়ানের তুলনা চলে না। এই দেশগুলোতে শক্ত সরকার রয়েছে। সামরিক দিক থেকেও তারা শক্তিধর। তাদের সঙ্গে মার্কিন মূল্যবোধেরও মিল রয়েছে। তারা অনেক দিন ধরেই আমেরিকার শক্ত সামরিক এবং বাণিজ্যিক সহযোগী। কিন্তু আফগানিস্তানের পরিস্থিতির জেরে একটি অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। আমেরিকাকে ঘায়েল করতে প্রচারণা বাড়িয়ে দিয়েছে চীন।
গত মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরে তার ভাষণে কমলা হ্যারিস বলেন, এই অঞ্চলে আমেরিকার যে দীর্ঘস্থায়ী স্বার্থ এবং প্রতিশ্রæতি রয়েছে, সে ব্যাপারে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। এই অঞ্চলের নিরাপত্তা রক্ষাও সেই প্রতিশ্রæতিরই একটি অংশ। এই ভরসা দিতে মিজ হ্যারিস ছাড়াও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অনেক সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তা এশিয়া সফর করেছেন।
একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র কী করে তার দিকে এ অঞ্চলের মানুষজন এখন আরো বেশি নজর দেবে। কারণ আফগানিস্তানের কারণে অনেকের মনেই সন্দেহ ঢুকেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ভরসা করা আসলেই কতটা ঠিক হবে।
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই গত সপ্তাহে বলেন, মার্কিন বাহিনীর আকস্মিক প্রত্যাহারে ‘নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া’ দেখা দিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান কাবুল পরিস্থিতিকে সায়গন পতনের সঙ্গে তুলনা করেন। যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ধ্বংসাত্মক’ হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, যখনই তারা কোনো দেশে পা রাখে, তখনই সেখানে আমরা অস্থিরতা, বিভেদ, ভাঙন আর মৃত্যুর মিছিল দেখতে পাই। দেশটিকে এ পরিস্থিতিতে ঠেলে দেয়ার পর সেখান থেকে কেটে পড়ে আমেরিকা।
তবে মিত্র দেশগুলোর বিপদে যুক্তরাষ্ট্র কতটা রক্ষকের ভূমিকা নেবে তা নিয়ে এই দেশগুলোরও সন্দেহ রয়েছে। এবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেছেন, কোনো যুদ্ধ শুরু হলে আমেরিকা তাদের রক্ষায় এগিয়ে আসবে বলে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যে আনুষ্ঠানিক চুক্তি রয়েছে, তাইওয়ানের সঙ্গে তেমন কোনো প্রতিরক্ষা চুক্তি নেই।
আফগানিস্তান থেকে আমেরিকা যেভাবে বেরিয়ে গেল, সেটি দেখিয়ে এশীয় দেশগুলোকে চীন বলছে, আমেরিকাকে বিশ্বাস করা যায় না। তবে অনেক বিশ্লেষক- যেমন : জার্মান মার্শাল ফান্ডের বিশেষজ্ঞ বনি গেøজার মনে করেন, আফগান পরিস্থিতি চীনের জন্য সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই ডেকে আনতে পারে। কেননা পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটলে তালেবানের জঙ্গিরূপ ভয়াবহভাবে আত্মপ্রকাশ করবে। ইতোমধ্যে তালেবানের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক স্থাপন করেছে চীন। চীনা মুখপাত্র হুয়া চুনইং বলেছেন, চীন আফগান জনগণের ইচ্ছার মর্যাদা দেয়। যদিও এ বক্তব্য নিয়ে যথেষ্ট সমালোচনা দেখো গেছে চীনের সোশ্যাল মিডিয়ায়। নারী অধিকার নিয়ে চীনারা আগের চেয়ে সোচ্চার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়