সালেহ এলাহী কুটি, মৌলভীবাজার থেকে : সিলেট বিভাগের প্রথম কমিউনিটি ট্যুরিজম গড়ে ওঠে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মণিপুরীপাড়ায়। পর্যটকদের নিরাপত্তা, খাবার, বাসস্থানসহ সার্বিক বিষয়ে আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে মণিপুরী কমিউনিটি ট্যুরিজম নতুন ধারার পর্যটন সেবা চালু হয় ২০১৮ সাল থেকে। তবে করোনার বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার পরও মণিপুরী কমিউনিটি ট্যুরিজম কেন্দ্রগুলো এখনো চালু হচ্ছে না।
জানা যায়, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুরে ভানুবিল মাঝেরগাঁওয়ে মণিপুরী কমিউনিটি ট্যুরিজম। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা, তাদের খাদ্য, বাসস্থানসহ সার্বিক বিষয়ে মণিপুরী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। করোনা ভাইরাসের মহামারিতে সরকারি বিধিনিষেধের জন্য এটি বন্ধ রাখা হয়। এতে মণিপুরী হস্তশিল্প, তাঁতের শাড়ি, গামছা, চাদর, ব্যাগ বিক্রিও বন্ধ হয়ে যায়। আর্থিক উন্নয়ন ও নিজস্ব সংস্কৃতির পরিচিতির ভেতরে এখানকার বিভিন্ন স্তরের মানুষ সংকটের মধ্যে রয়েছেন।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, কেন্দ্রগুলো তাদের পরিবারের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে কেন্দ্রগুলো বন্ধ রয়েছে। এতে অনেক মালামাল নষ্ট হচ্ছে।
কমিউনিটি ট্যুরিজমের সঙ্গে যুক্ত অনেকে বলেন, প্রায় দেড় বছর ধরে কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমরা দীর্ঘ সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আশা করি, অচিরেই বিশ্বসহ আমাদের দেশ ও জাতি করোনামুক্ত হবে। করোনামুক্ত পরিবেশে আবার কেন্দ্রগুলো আমরা চালু করতে চাই। করোনা পরিস্থিতিতে বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার পরও নিরাপত্তার কারণে কেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে তারা জানান।
শান্ত দেবী বলেন, হাজার বছর ধরে চলে আসা সামাজিক বৈচিত্র্যময় কালচারের সঙ্গে মিশে যাওয়ার এক অপূর্ব সুযোগ কমিউনিটি ট্যুরিজম। কমিউনিটি বাসিন্দাদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে আর্থিক উন্নয়ন ও নিজস্ব সংস্কৃতি পরিচিতির কাজ করি। করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে সরকারি বিধিনিষেধের কারণে এটি বন্ধ রয়েছে। করোনা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। আমরা এখনো করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্কে আছি। তাই কেন্দ্রগুলো খোলার সাহস পাচ্ছি না।
রনজিতা দেবী বলেন, করোনার কারণে দেশি-বিদেশী পর্যটকরা এখন আর আসেন না। তাই আমাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি নিয়ে সমস্যায় আছি। আর্থিক সমস্যার মধ্যে থাকলেও পরিবার ও কমিউনিটির স্বাস্থ্যবিধি বিবেচনায় কোনো পর্যটক গ্রহণ করছি না। ১৯ আগস্ট থেকে পর্যটন কেন্দ্রে বিধিনিষেধ শিথিল করা হলেও আমাদের কমিউনিটির সিদ্ধান্ত আমরা মেনে চলব।
কমিউনিটি টুরিজমের সভাপতি নিরঞ্জন সিংহ রাজু বলেন, কমিউনিটি ট্যুরিজম হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট এলাকার জীবন ধারণের সঙ্গে মিশে যাওয়া। আমরা আমাদের পরিবারের সঙ্গে আন্তরিক পরিবেশ পর্যটকদের সেবা দেই। পর্যটকরা পরিবারের খুব কাছাকাছি থাকায় আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যেও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা আছে। এ কারণে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে জেনেও আমরা কেন্দ্রগুলো খুলছি না। ৬০ শতাংশ টিকা না হওয়া পর্যন্ত মণিপুরী ট্যুরিজম কেন্দ্রগুলোতে কোনো পর্যটক নেয়া হবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।