একাই কোকোর কবর জিয়ারত করলেন রিজভী

আগের সংবাদ

বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিবেশ তৈরি করে পাকিস্তান ও আমেরিকা

পরের সংবাদ

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একই সুতোয় গাঁথা

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ এবং বাঙালি একে অন্যের সঙ্গে
ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ’৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির পরিচয়কে মুছে দেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করে। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় শোক দিবস নিয়ে
এ প্রজন্মের শিল্পীদের ভাবনা তুলে ধরে এ আয়োজন।
শ্রæতিলিখন : শাকিল মাহমুদ
পিতা হারানোর শোক
আজীবন থেকে যাবে
আরিফিন শুভ
আমাদের প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুকে জানার সুযোগ পেয়েছি বই পড়ে, বড়দের কাছে সে সময়ের ঘটনাগুলো শুনে। সেভাবে শুনে শুনে একটা মানুষের মহান কর্মের প্রতি সম্মান জন্মেছে, ভালোবাসা ধীরে ধীরে প্রখর হয়েছে। বর্তমান সরকার বিভিন্ন প্রয়াস নিয়েছে বঙ্গবন্ধুকে তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য। তার একটি অন্যতম প্রচেষ্টা মহান নেতার বায়োপিক নির্মাণ করা। এ সিনেমাতে আমার বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে। তখন বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জেনেছি। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পত্রিকায় তার সাক্ষাৎকার পড়ে বুঝতে পেরেছি তিনি কেন মহান নেতা হতে পেরেছিলেন। এই মহান নেতাকে ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে খুন করা হয়। যা জাতি হিসেবে আমাদের একটি কলঙ্কে নিমজ্জিত করে। তরুণদের কাছ থেকে এই মহান নেতাকে মুছে দিতেই মূলত এই হত্যাকাণ্ড। আজকে আমরা সে কলঙ্কিত অধ্যায় পেরিয়ে মহান নেতার স্বপ্নের পথে এটা যেমন সত্য তেমনই সেদিনে ক্ষত কোনোভাবে মুছে যাওয়ারও নয়। পিতা হারানোর শোক আজীবন থেকে যাবে।
শোককে শক্তিতে পরিণত
করে এগিয়ে যেতে হবে
নুসরাত ইমরোজ তিশা
মহান এই মানুষটাকে নিয়ে জানাশোনা-আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই ছিল। তার সম্পর্কে জানার জন্য আামাদের তাকিয়ে থাকতে হয় বইয়ের পাতায়। এছাড়াও ইতিহাসের একটি অধ্যায় সম্পর্কে জানার অন্য একটি মাধ্যম সিনেমা। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ইতিহাসের পাতা থেকে তাকে মুছে দিতে যে চেষ্টা করা হয়েছিল তাতে একটা দীর্ঘ সময় তাকে নিয়ে তেমন গবেষণা হয়নি, লেখালেখি হয়নি, সিনেমা নির্মাণ হয়নি। ফলে আমরা বঞ্চিত হয়েছি তার সম্পর্কে বিস্তর জানার প্রক্রিয়া থেকে। তবে এখন তার মেয়ের প্রয়াসে আমরা আবারো পিতার সম্পর্কে জানতে পারছি। বিভিন্নভাবে বঙ্গবন্ধুকে তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে। ’৭৫-এর সেই কালরাত্রি বাঙালির একটি বিভিষীকাময় অধ্যায়। পিতা হারানোর শোক নিয়ে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেছে, খুনিরা শাস্তি পেয়েছে ঠিক। কিন্তু পিতাকে যে সন্তান হারিয়েছে, বঞ্চিত হয়েছে যে সন্তান পিতার স্নেহ-মমতা থেকে, তা কোনো কিছুর বিনিময়ে ফিরিয়ে আনা যাবে না। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করে শোককে এগিয়ে চলার শক্তিতে পরিণত করতে হবে আমাদেরই।
বাঙালি জাতির হৃদয়ে
তিনি রয়েছেন
ইরফান সাজ্জাদ
যে সময়ে আমাদের জানার কথা ছিল সে সময়ে কোনো কারণে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে আমাদের জানা হয়নি। তবে আমরা এখন জানতে পারছি। বিভিন্ন বইয়ের মাধ্যমে জানছি। দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যমে তার বক্তব্য আমাদের হাতে পৌঁছাচ্ছে। শিকড় ছাড়া গাছ টিকে থাকতে পারে না। বঙ্গবন্ধু আমাদের শিকড়। তাকে ভুলে থাকা মানেই আমাদের নিজেদের পরিচয়কে ভুলে থাকা। এর জন্য একটি চক্র ব্যর্থ প্রচেষ্টাও চালিয়েছিল। যার দরুন কলঙ্কিত ১৫ আগস্ট সংঘটিত হয়। খুনিরা ভেবেছিল বঙ্গবন্ধুকে খুন করে তাকে চিরতরে মুছে ফেলতে পারবে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির পিতা, বাঙালি জাতির হৃদয়ে তিনি রয়েছেন। ফলে দীর্ঘ সময় তাকে আমাদের থেকে দূরে রাখা হলেও আমরা আবার তাকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে এনেছি।

তার স্বপ্নের সোনার বাংলা
গড়ে তুলতে হবে
ফাতেমাতুজ জোহরা ঐশি
বঙ্গবন্ধু একটা দেশ, একটা জাতির পরিচয়ের দলিল। সুতরাং তার সম্পর্কে না জানা মানেই নিজেকে না জানা। আজকে আমরা নানা মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে জানতে পারছি। কিন্তু এই পরিধি আরো বাড়ানো উচিত বলে আমার কাছে মনে হয়। গানের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা উচিত। যেগুলোর মাধ্যমে একটা ইতিহাসকে ছুঁয়ে যাওয়া যায়। আমরা জানি গান মানুষের চেতনা জাগ্রত করে। ফলে এই গানকে ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধুকে তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা উচিত। ’৭৫-এর ঘটনা একটি কালো অধ্যায়। পিতা হারানোর দিন। এদিন আমরা শোকাহত থাকলেও এ শোক শক্তিতে আমরা পরিণত করেছি। পিতার খুনিদের শাস্তি দিয়ে দায় শোধ করেছি ঠিক কিন্তু এ দেশকে তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার মাধ্যমে পিতাকে আমাদের মাঝে আজীবন বাঁচিয়ে রাখব।

তার সম্পর্কে জানার আগ্রহ জন্মগতভাবেই পেয়েছি
তানজিন তিশা
যে মানুষটা আমাদের একটা পরিচয় এনে দেয়ার জন্য নিজের কথা এতটুকু চিন্তা না করে জেল জীবন কাটিয়েছেন দীর্ঘ সময় তার সম্পর্কে জানার আগ্রহ জন্মগতভাবেই আমরা পেয়েছি। ফলে একটা সময়ে নিজ তাগিদে বই পড়ে হোক বা ভিন্ন কোনোভাবে- যতটুকু পেরেছি জেনেছি। এখনো সুযোগ পেলে তার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পড়ি। বইটা পড়ার সময় ভাবি, একটা মানুষ কতটা নির্মোহভাবে একটা জাতির জন্য লড়াই করে গেলেন! বঙ্গবন্ধু আমাদের বাঙালি জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবার সুযোগ করে দিয়েছেন। একজন পিতা হাত ধরে যেমন হাঁটা শেখান ঠিক সেভাবে তিনি আমাদের নিয়ে লড়াই করেছেন। সুতরাং তিনি তো আমাদের পিতা, বাঙালি জাতি পিতা। কিন্তু বাঙালি জাতির কিছু বিপথগামী সন্তানরা ’৭৫-এর ১৫ আগস্টে পিতাকে খুন করে নিজেদের স্বার্থের জন্য। আমাদের পিতৃহীন করে তারা চেয়েছিল আমাদের পরিচয়কে মুছে দিতে। সেটায় তারা সফলও হয়েছিল, কিন্তু সাময়িক সময়ের জন্য। আমাদের মাঝে পিতা হারানোর শোক আছে ঠিক কিন্তু সে শোক আজ শক্তিতে পরিণত হয়েছে। যে কারণে আজো আমরা টিকে আছি। বিশ্ব বাঙালি জাতিকে সম্মান করে এখনো।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়