খুলনায় মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর : সম্প্রীতি পরিষদ ও বিশিষ্ট নাগরিকদের প্রতিবাদ

আগের সংবাদ

হার্ড ইমিউনিটি কতটা সম্ভব : নতুন নতুন ধরন নিয়ে শঙ্কা >> টিকার সুফল কিছুটা হলেও মিলবে : আশা বিশেষজ্ঞদের

পরের সংবাদ

স্থানীয় বাজারে অযৌক্তিকভাবে বাড়বে না ইয়ার্নের দাম

প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পের বিদ্যমান প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার লক্ষ্যে দেশীয় বাজারে ইয়ার্নের অযৌক্তিক হারে দাম বাড়বে না বলে জানিয়েছে স্থানীয় ইয়ার্ন প্রস্তুতকারক সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ এসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন পোশাকশিল্পের মালিকদের আশ্বস্ত করে বলেন, বিটিএমইএর সদস্যভুক্ত মিলগুলো এলসি ওপেনসহ ও সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের জন্য ন্যূনতম ১৫ দিনের মেয়াদ উল্লেখ করে পিআই ইস্যু করবে, যা কিনা সাম্প্রতিক সময়ে খুব স্বল্প সময়ের মেয়াদ দিয়ে ইস্যু করা হচ্ছিল। পিআই হচ্ছে জাহাজীকরণের পূর্বে সরবরাহকারী কর্তৃক ক্রেতার কাছে পাঠানো আনুমানিক চালানপত্র।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ এসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সঙ্গে গত মঙ্গলবার রাতে পোশাক খাতের ৩টি সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ) ও বাংলাদেশ টেরিটাওয়েল ও লিনেন প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিটিটিএলএমইএ)-এর আলোচনা বৈঠক চলাকালে এসব বিষয়ে আশ্বস্ত করা হয়। আলোচনায় বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান, বিকেএমইএর সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান ও প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিটিটিএলএমইএর চেয়ারম্যান এম শাহাদাৎ হোসেন এবং বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন অংশ নেন। বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি কুতুবউদ্দিন আহমেদ, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ এবং বিটিএমএর সাবেক সভাপতি তপন চৌধুরী ও এ মতিন চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন। সভায় উপস্থিত নেতারা একমত হন যে ইয়ার্নের মূল্য কমানোর জন্য পরবর্তী সোমবার তারা আরো একটি বৈঠকে বসবেন।
সভায় বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান শিল্পকে রক্ষা করা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের বর্তমান এই ক্রান্তিকালে শিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখার জন্য ৩০এস ইয়ার্নের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারণের দাবি জানান।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, পিআইসংক্রান্ত ইস্যুসহ অন্যান্য ইস্যুগুলো সমাধান করার লক্ষ্যে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিটিএলএমইএ ও বিটিএমএ প্রতিনিধি সমন্বয়ে একটি আরবিট্রেশন সেল গঠন করা হবে এবং এই সেল পাক্ষিকভাবে (১৪ দিন পর পর) বৈঠকে বসবে।
এর আগে পোশাক রপ্তানিকারকরা স্থানীয় বাজারে ইয়ার্নের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধিতে তাদের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিল। ইয়ার্নের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি পোশাকশিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, যে শিল্পটি কিনা ইতোমধ্যেই পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বাড়ানো ও পণ্যের দরপতনের কারণে একটি কঠিন সময় অতিক্রম করছে। ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গণহারে টিকাদান কর্মসূচির কারণে ওইসব দেশে দোকানপাট খুলছে, সেইসঙ্গে দেশগুলোতে খুচরা বিক্রি দ্রুত হারে বাড়ছে। ফলশ্রæতিতে বাংলাদেশে প্রচুর অর্ডার আসছে। কিন্তু স্থানীয় বাজারে ইয়ার্নের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে রপ্তানিকারকরা সব অর্ডার নিতে পারছেন না। আর বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা যদি অর্ডারগুলো নিতে না পারেন, তাহলে সেগুলো নিশ্চিতভাবেই অন্যান্য প্রতিযোগী দেশগুলোতে চলে যাবে।
বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের প্রধান কাঁচামাল হচ্ছে তুলা- কারণ মোট রপ্তানিকৃত পোশাক পণ্যের ৭৫ শতাংশই তুলা দ্বারা প্রস্ততকৃত। বাংলাদেশ বিশ্বে তুলা আমদানিতে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। আর কোনো কারণে যদি এ শিল্পের কাঁচামাল অর্থাৎ তুলা/ইয়ার্নের সরবরাহ বা মূল্য প্রভাবিত হয়, তবে সেটি আমাদের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনে।
ফারুক হাসান বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে ইতোমধ্যে আমাদের অনেক কারখানা নজিরবিহীন ক্ষতির মুখে পড়েছে। অর্ডার বাতিল, মূল্য না পাওয়া, ডিসকাউন্ট, ফোর্স লোন ইত্যাদি কারণে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পারছে না। আবার ব্যবসা থেকে প্রস্থানও করতে পারছেন না। কিন্তু দায় দেনা প্রতিদিনই বাড়ছে। এ অবস্থায় থেকেই কারখানাগুলো আপ্রাণ চেষ্টা করছে ক্ষতি সামলে নিয়ে টিকে থাকতে। করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা পরিচালনায় খরচ বাড়ছে, যেখানে পণ্যের দরপতন হয়েছে ৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ। পরিবহন খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ।
মজুরি, বিদ্যুৎ, ব্যাংক চার্জ সব মিলিয়ে গত ৮ বছরে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে ৩০ দশমিক ১১ শতাংশ। এমতাবস্থায় পোশাকশিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখা ও শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য ইয়ার্নের মূল্য না বাড়ানোর সিদ্ধান্তটি পোশাকশিল্পের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক ও তাৎপর্যপূর্ণ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়