খুলনায় মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর : সম্প্রীতি পরিষদ ও বিশিষ্ট নাগরিকদের প্রতিবাদ

আগের সংবাদ

হার্ড ইমিউনিটি কতটা সম্ভব : নতুন নতুন ধরন নিয়ে শঙ্কা >> টিকার সুফল কিছুটা হলেও মিলবে : আশা বিশেষজ্ঞদের

পরের সংবাদ

বেড়েছে এসএমই ঋণ : ৫৬ হাজার উদ্যোক্তা পেলেন ছয় হাজার কোটি টাকা

প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১২, ২০২১ , ১:২৮ পূর্বাহ্ণ

মরিয়ম সেজুঁতি : চলমান করোনা মহামারিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দেশের কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতের উদ্যোক্তারা। অথচ জামানতের অভাবসহ বিভিন্ন অজুহাতে এ খাতে ব্যাংকগুলো ঋণ দিতে অনীহা দেখায়। এসব বিবেচনায় ব্যাংকগুলোকে ঋণ বিতরণে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন নীতিমালা শিথিল করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ খাতের উদ্যোক্তাদের ঋণখেলাপি করার সময়সীমা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি কমিয়ে দেয়া হয়েছে খেলাপি ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তার সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণের হার। আর তাই এতদিন বিমুখ আচরণ করলেও কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও ছোট উদ্যোক্তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসছে ব্যাংক ও ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে দিচ্ছে বিনা জামানতে ঋণ। চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিক শেষে সিএমএসএমই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ছয় হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ জামানত ছাড়া বিতরণ করা হয়েছে। যার সুবিধাভোগীর সংখ্যা ৫৬ হাজার ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছোট ব্যবসায়ীদের পুঁজি কম। নানা শর্ত আর জামানত দিয়ে সব সময় ঋণ নিতে পারেন না তারা। দেশের সার্বিক অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে ছোট উদ্যোক্তাদের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। তাদের সহজ শর্তে ঋণ দিতে হবে। কারণ, তারা দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও বিশেষ ভূমিকা রাখেন বলে মনে করে বিশেষজ্ঞরা। মূলত, সিএমএসএমই ঋণ বিতরণে খরচ বেশি, আয় কম। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ শেষে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সিএমএসএমই খাতে মোট ছয় হাজার ২৫৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ঋণ বিনা জামানতে দিয়েছে ব্যাংক। এ ঋণ পেয়েছেন ৫৬ হাজার ২৭১ ছোট উদ্যোক্তা। এর মধ্যে জামানত ছাড়া ঋণ বিতরণের পরিমাণ পাঁচ হাজার ৪০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। সুবিধাভোগীর সংখ্যা ৫০ হাজার ৩০৬ জন
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ শেষে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সিএমএসএমই খাতে মোট ছয় হাজার ২৫৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ঋণ বিনা জামানতে দিয়েছে। এ ঋণ পেয়েছেন ৫৬ হাজার ২৭১ ছোট উদ্যোক্তা। এর মধ্যে জামানত ছাড়া ঋণ বিতরণের পরিমাণ পাঁচ হাজার ৪০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। সুবিধাভোগীর সংখ্যা ৫০ হাজার ৩০৬ জন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিএমএসএমই খাতসংশ্লিষ্ট তথ্যে বলা হয়েছে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচটি ব্যাংক তিন হাজার ৭৩৭ ছোট উদ্যোক্তাকে ঋণ দিয়েছে ৯৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। বেসরকারি খাতের ৩০টি বাণিজ্যিক ব্যাংক চার হাজার ২৪৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করেছে ৩১ হাজার ৩১২ উদ্যোক্তার মাঝে।
ছোট উদ্যোক্তাদের জামানতবিহীন ঋণ দিতে হলে সরকারকে ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের আওতায় এসব ঋণের গ্যারান্টি দিতে হবে। তাহলেই কেবল সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের জামানতবিহীন ঋণ দেয়া সম্ভব হবে। তাই, সরকারের উচিত এ খাতের সার্বিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে কার্যকর কৌশল ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের তহবিল, পরিধি ও আওতা আরও বৃদ্ধি করা। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা নেয়া যেতে পারে।
শরিয়াহভিত্তিক আটটি ইসলামী ব্যাংক দুই হাজার ৯৪৮ ছোট উদ্যোক্তার মধ্যে ঋণ দিয়েছে ৩৯৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলো ২৮৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে ১১ হাজার ৮৫৫ ছোট উদ্যোক্তার মাঝে। এছাড়া ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো পাঁচ হাজার ৯৬৫ ছোট উদ্যোক্তাকে ঋণ দিয়েছে এক হাজার ২১৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
প্রসঙ্গত, কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে সিএমএসএমই খাত। বর্তমানে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) এ খাতের অবদান প্রায় ২৫ শতাংশ। এ কারণে সিএমএসএমই খাত স¤প্রসারণে সরকারের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে কয়েক বছর ধরে বড় ঋণ গুটিয়ে সিএমএসএমই খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট ঋণ স্থিতির মধ্যে সিএমএসএমই খাতে ঋণের পরিমাণ প্রতি বছর ১ শতাংশ হারে বাড়ানো অব্যাহত রাখতে হবে। এভাবে ২০২৪ সালের মধ্যে মোট ঋণের অন্তত ২৫ শতাংশ সিএমএসএমই খাতে উন্নীত করতে হবে। পাশাপাশি এ খাতে বিতরণ হওয়া ঋণের কমপক্ষে ৫০ শতাংশ কুটির, অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র (সিএমএসই) উদ্যোক্তাদের দিতে হবে।
এছাড়া একটি টেকসই সিএমএসএমই খাত গঠনের লক্ষ্যে ২০২৪ সালের মধ্যে এ খাতের উৎপাদনশীল অংশে ৪০ শতাংশ, সেবায় ২৫ শতাংশ এবং ব্যবসায় সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ ঋণ বিতরণ করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়