জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় : প্রক্টর ড. মোস্তফা কামালের মেয়াদ বাড়ল

আগের সংবাদ

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে প্রধানমন্ত্রী : কেউ গৃহহীন থাকবে না

পরের সংবাদ

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চিঠি:১৫ আগস্টের মধ্যে জানাতে হবে কোথায় গেল প্রণোদনার টাকা

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : করোনার থাবায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে গত বছর ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ছোট-বড় ব্যবসায়ীরা প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনার ঋণ নিয়েছেন, যার মোট সুদের অর্ধেক ভর্তুকি হিসেবে দিয়েছে সরকার। ঋণ দেয়ার প্রায় এক বছর পর বাংলাদেশ ব্যাংক এসব ঋণের ব্যবহার খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য কারা ঋণ নিয়েছে ও ঋণের ব্যবহার কোথায় হয়েছে, তার তথ্য চেয়ে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীর কাছে চিঠি গেছে। এমনকি প্রণোদনার টাকা ক্ষতিগ্রস্তরা না পেলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও ঋণগ্রহীতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় প্রদত্ত ঋণের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করারও নির্দেশ দেয়। ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, গ্রাহক ঋণ নিয়েছে এমন তথ্য দেখিয়ে ব্যাংকগুলো সুদ ভর্তুকির টাকা নিয়ে গেছে।
তাই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে সঠিক গ্রাহকের কাছে ঋণ গেছে কিনা। এরপর দেখা হবে ওই গ্রাহক ঋণের টাকার ব্যবহার কোথায় করেছেন। কারণ ঋণের ব্যবহার হওয়ার কথা শুধু চলতি মূলধন হিসেবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকগুলোর কাছে তথ্য চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। তথ্য পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে তা খতিয়ে দেখা হবে। ঋণের টাকা কারা পেল ও কী উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছে, তা গভীরভাবে খতিয়ে দেখবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা বলেন, আমরা বুঝতে পারছি, প্রণোদনার ঋণের টাকার যথাযথ ব্যবহার হয়নি। অনেকেই ঋণ নিয়ে সঠিক কাজে ব্যবহার করেছেন। সে কারণেই প্রকৃত তথ্য জানতে চিঠি দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া চিঠিতে ২০২০-২১ অর্থবছরের বিতরণ করা ঋণের বিস্তারিত তথ্য ১৫ আগস্টের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ২০২১-২২ অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণার সময়ও প্রণোদনা ঋণের যথাযথ ব্যবহারের বিষয়টি নিয়ে গভর্নর ফজলে কবির বলেন, আমি উল্লেখ করতে চাই যে, বর্তমানে করোনার দুর্যোগময় পরিস্থিতির কারণে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সরজমিন পরিদর্শন/নিরীক্ষা কার্যক্রম কিছুটা বাধাগ্রস্ত হলেও প্রযুক্তিনির্ভর অফসাইট নিরীক্ষা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। প্রণোদনা প্যাকেজগুলোর টাকা যে উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য দেয়া হয়েছে, তা যেন অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে না পারে, সে ব্যাপারে ব্যাংকগুলোকে নিজস্ব নজরদারি বাড়িয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইতোমধ্যেই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এছাড়া আর্থিক খাতে দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং বিদেশে অর্থপাচার রোধকল্পে বিএফআইইউয়ের মাধ্যমে আর্থিক গোয়েন্দা কার্যক্রম বাড়াতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানান ফজলে কবির।
প্রসঙ্গত, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতের ব্যবসায়ী এবং শিল্প উদ্যোক্তাদের সহায়তা করতে গত বছর সাড়ে ৪ শতাংশ সুদে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনার ঋণ বিতরণ করে ব্যাংকগুলো। আর ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের ব্যবসায়ীদের দেয়া হয় ৪ শতাংশ সুদে ১৫ হাজার কোটি টাকা। এসব ঋণের সুদহার ছিল ৯ শতাংশ।
বাকি সুদ ভর্তুকি হিসেবে দিয়েছে সরকার। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, প্রণোদনা তহবিল থেকে কম সুদে ঋণ নিয়ে অনেকেই ভিন্ন খাতে খরচ করেছেন। কেউ কেউ ক্ষতি পোষাতে সরকারি তহবিলের ঋণ নিয়ে অন্য ব্যাংকের ঋণ শোধ করেছেন। কেউ আবার পুঁজিবাজারেও বিনিয়োগ করেছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়