কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে যা বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৩:০৩ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী নাশকতা ও হামলার ঘটনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ও সম্পত্তিতে হামলার অর্থ রাষ্ট্রের ওপর হামলা।শুক্রবার (২৬ জুলাই) প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত ‘সন্ত্রাস নয়, শান্তি চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এই নাশকতায় জড়িতরা যাতে আইনের ফাঁকফোকর গলে বেরিয়ে যেতে না পারে, সেই বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। তবে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হয়রানি করা হবে না। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে সহিংসতা চালিয়েছে বিএনপি-জামায়াত ও জঙ্গি গোষ্ঠী। যার প্রমাণ সরকারের হাতে আছে। তাই শিক্ষার্থীদের কোনো সমস্যা হবে না।
সরকার শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়ার পরও কারা জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের সহিংসতার সুযোগ করে দিয়েছে, এমন প্রশ্নও তোলেন তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনকারীরা ধৈর্য ধরলে এত সহিংসতা হতো না। ছাত্রদের দিয়ে কেউ যেন আবারো এমন ঘটনা না ঘটায়, সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
আরো পড়ুন : লন্ডনে বসে ফোন করে প্রবাসীদের উসকে দেয়া হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৬ জুলাই (মঙ্গলবার) সারাদেশে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে তা আরো ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ বেশি হয় ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে। ১৬ থেকে ২০ জুলাই, মাত্র চারদিন। কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন রক্তক্ষয়ী সংঘাতে রূপ নেয় এই চারদিনেই। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন পুঁজি করে এই দেশজুড়ে তাণ্ডব আর নৈরাজ্য চালায় দুর্বৃত্তরা।
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সংঘাত সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনা ঘটে ১৯ জুলাই। এদিন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পুরো রাজধানীতে তাণ্ডব চালায় দুর্বৃত্তরা। যাত্রাবাড়ি উত্তরা বাড্ডা রামপুরা মহাখালী বনানী ও মিরপুর এলাকা ছিল কার্যত শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে মিশে যাওয়া দুর্বৃত্তদের দখলে।
রামপুরায় বিটিভি ভবনে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। বনানীর সেতু ভবনে হামলা, মহাখালীর দুর্যোগ ব্যবস্থা অধিদপ্তরে আগুন, মিরপুর ও কাজীপাড়ায় মেট্রোরেলের দুটি স্টেশনে হামলা, উত্তরায় বিআরটি ও এক্সপ্রেসওয়েতে হামলার ঘটনাগুলো ঘটে এদিনই। মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। একই দিনে পল্লবী ও ১১ নম্বর স্টেশনেও হামলা হয়। সেখানেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ক্ষতি হয়েছে।
এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সহিংসতায় ২০১ জন নিহতের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে তিনজন পুলিশ সদস্য এবং একজন আনসার সদস্য নিহত হয়েছেন। এসময় ১ হাজার ১১৭ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর আহত ১৩২ জন। তিনজন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রয়েছেন।