×

সারাদেশ

আন্তঃনগর ট্রেন এখন থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় থামবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২১, ০৩:৩০ পিএম

আন্তঃনগর ট্রেন এখন থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় থামবে

শনিবার দুপুর ১টা ২০ মিনিটে ঢাকা থেকে আসা সিলেটগামী জয়ন্তীকা এক্সপ্রেস থামার মধ্যে দিয়ে এই ষ্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের পুনরায় যাত্রাবিরতি শুরু হয়। ছবি: ভোরের কাগজ

দীর্ঘ ৮ মাস বন্ধ থাকার পর এখন থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেন থামবে। শনিবার (১৩ নভেম্বর) কমলাপুর রেলস্টেশনে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ নির্দশনা দেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। এ নির্দেশের ফলে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রেলযাত্রীদের। শনিবার দুপুর ১টা ২০ মিনিটে ঢাকা থেকে আসা সিলেটগামী জয়ন্তীকা এক্সপ্রেস ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় থামার মধ্য দিয়ে ফের আন্ত:নগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি শুরু হয়। গত ২৬ মার্চ দুস্কৃতিকারিদের তাণ্ডবের পর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্রাক্ষণবাড়িয়া স্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রা বিরতি বন্ধ ছিল।

কমলাপুর রেলস্টেশনে সিলেটগামী জয়ন্তীকা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীদের ফুল বিতরণ ও গার্ড ব্রেকে  ফ্ল্যাগ সিগনাল দিয়ে ট্রেনের যাত্রা শুরুর মাধ্যমে ব্রাক্ষনবাড়িয়া স্টেশনের ট্রেনের যাত্রা বিরতি পুনরায় চালু করেন তিনি।

এ সময়  মন্ত্রী বলেন, গত ২৬ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে স্টেশনমাস্টারের রুম, অপারেটিং রুম, ভিআইপি রুম, প্রধান বুকিং সহকারীর রুম, টিকেট কাউন্টার, প্যানেল বোর্ড, সিগনালিং যন্ত্রপাতি, পয়েন্টের সিগন্যাল বক্স, লেভেল ক্রসিং গেটসহ অন্যান্য স্থাপনা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় বাংলাদেশ রেলওয়ের আড়াই কোটি টাকার ক্ষতি হয়। ওইদিনের ঘটনার পরের দিন থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে সকল আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়। প্রায় আটমাস পরে এটি আবার চালু হলো।

তিনি বলেন, পূর্বে যেভাবে যাত্রাবিরতি ছিল আজ থেকে এক‌ইভাবে যাত্রাবিরতি করবে। স্টেশনে ১৪টি আন্তঃনগর, ৮টি মেইল এবং ৪টি কমিউটার ট্রেনের যাত্রা বিরতি রয়েছে।

মন্ত্রী এ সময় বলেন, যারা স্বাধীনতা বিরোধী, যারা বাংলাদেশ চায়না তারাই এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রক্রিয়া চলমান আছে।

এ সময় কমলপুর স্টেশনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে এ উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলষ্টেশনের ২ নম্বর পাল্টফরমে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সদর সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন জেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক আল মামুন সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি, সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা আল আমিন, শহর আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জেলা যুবলীগ সভাপতি শাহানুর ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত শোভন, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সায়েদুজ্জামান আরিফ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট আবৃত্তি শিল্পী মনির হোসেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধীতায় গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজত ইসলামের কর্মী-সমর্থকরা। আন্দোলনের প্রথম দিনে বিভিন্ন স্থাপনার পাশাপাশি রেলওয়ে স্টেশনটিতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। স্টেশনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিসহ সিগন্যালিং সিস্টেম পুরোপুরি ধ্বংস করে ফেলা হয়। পরদিন ২৭ মার্চ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে সকল ট্রেনের নির্ধারিত যাত্রাবিরতি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এতে সীমাহীন দূর্ভোগে পড়েন এখানকার রেলযাত্রীরা। এর আগে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-নোয়াখালী রুটে চলাচলকারী ৭টি আন্ত:নগর, ৭টি মেইল ও লোকাল ট্রেন যাত্রাবিরতি করতো স্টেশনটিতে। এসব ট্রেনে প্রতিদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে ২ হাজারের বেশী যাত্রী বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করতেন। মাসে সরকারের রাজস্ব আয় হতো অর্ধ কোটি টাকা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App