কাগজ প্রতিবেদক : চলতি বছরের চার দিনই সূচক বাড়ল। ২০২১ সালের শেষ কর্মদিবস ৩০ ডিসেম্বরেও বেড়েছিল সূচক। এই পাঁচ দিনে সূচকে যোগ হলো ১৯৮.৭৮ পয়েন্ট। এ নিয়ে গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৯ দিনের মধ্যে সূচক বেড়েছে ৩০০ পয়েন্ট। সূচক বাড়ল টানা পাঁচদিন। গত ৭ ডিসেম্বরের পর প্রথম। সূচকের অবস্থান গত ৯ ডিসেম্বরের পর সবচেয়ে বেশি। লেনদেন সবচেয়ে বেশি ২১ নভেম্বরের পর। এর মাঝে গেছে ৩২ কর্মদিবস। গত তিন মাসের হতাশা কাটিয়ে পুঁজিবাজার আবার উত্থানের দিকে যাত্রা শুরু করেছে কিনা, এই আলোচনার মধ্যে একদিনে এই তিনটি ঘটনা বিনিয়োগকারীদের আশাবাদী করবে। এ নিয়ে চলতি বছরের চার দিনই সূচক বাড়ল। ২০২১ সালের শেষ কর্মদিবস ৩০ ডিসেম্বরেও বেড়েছিল সূচক। এই পাঁচদিনে সূচকে যোগ হলো ১৯৮.৭৮ পয়েন্ট। এ নিয়ে গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৯ দিনের মধ্যে সূচক বেড়েছে ৩০০ পয়েন্ট। সূচকের এই অবস্থান গত ৯ ডিসেম্বরের পর সর্বোচ্চ। সেদিন সূচক ছিল ৬৯৮৪ পয়েন্ট। দিন শেষে বেড়েছে ২১৮টি কোম্পানির পর, কমেছে ১২১টির। অপরিবর্তিত ছিল ৩৯টির দর।
লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪১৪ কোটি ১৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। এর চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছিল গত ২১ নভেম্বর। সেদিন হাতবদল হয়েছিল ১ হাজার ৭৮৬ কোটি ২৭ লাখ ১৮ হাজার টাকা। গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে পুঁজিবাজারে যে দর সংশোধন শুরু হয়েছিল, সেটি অবসান হওয়ার আগেই দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যকার দ্ব›েদ্বর বিষয়টি সামনে আসে। আবার বছর শেষে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ তুলে নেয়ার জন্য তৈরি হওয়া বিক্রয় চাপ মিলে ক্রমেই সূচকের পতন হচ্ছিল। তবে বছর শেষে ২৬ ডিসেম্বর থেকে ধীরে ধীরে সূচক বাড়তে থাকে। লেনদেনেও ফিরতে থাকে গতি। বছর শেষে শেয়ার কেনা আরো আরো মন দেয় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। সেই সঙ্গে নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকা ব্যক্তি শ্রেণির বড় বিনিয়োগকারীরাও সক্রিয় হতে শুরু করে।
টানা তিনদিন বাড়ার পর মঙ্গলবার লেনদেনে তিন ঘণ্টা সূচক ওঠানামা করতে করতে শেষবেলায় সূচক ১০ পয়েন্ট বাড়ার পরেই বোঝা গিয়েছিল, পতনের বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছে পুঁজিবাজার। হয়েছেও তা। পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ মনে করেন, এখন শেয়ার দর যে অবস্থানে আছে, তা বিনিয়োগের জন্য খুবই আকর্ষণীয়। তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বর মাসে পুরো সময়টা ছিল মন্দার মধ্যে। এখনো যদি মন্দার মধ্যেই থাকত, তাহলে আস্থার জায়গাটি শূন্যের কোটায় নেমে আসত।
গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুই হয় ২০ পয়েন্ট সূচক বেড়ে। বেলা ১১টা ২৯ মিনিটে লেনদেন হতে থাকে সূচক ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে। লেনদেন শেষ হওয়ার ১০ মিনিট আগেও সূচক বেশি ছিল ৪৮ পয়েন্ট। তবে শেষ ১০ মিনিটের বিক্রয় চাপে কিছুটা কমে। শেষ পর্যন্ত সূচকে যোগ হয় ৩৬.৩৯ পয়েন্ট। এদিন সবচেয়ে বেশিসংখ্যক কোম্পানির দর বেড়েছে আর্থিক খাতে। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বস্ত্র খাত। বিবিধ, প্রকৌশল খাতেও গেছে ভালো দিন। আগের দিন চাঙা থাকা বিমা খাতের বেশির ভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। আর সবচেয়ে বেশি বাজার মূলধনের ব্যাংক খাতে বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির দর। দর বৃদ্ধির শীর্ষে কোনো একক খাতের আধিপত্য দেখা যায়নি। বেশ কয়েকটি খাতের কোম্পানির অবস্থান দেখা গেছে এই তালিকায়। গত তিন মাস দর অনেক খানি কমেছে, এমন কোম্পানির প্রাধান্য দেখা গেছে এই তালিকায়। পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ মনে করেন, এখন শেয়ারদর যে অবস্থানে আছে, তা বিনিয়োগের জন্য খুবই আকর্ষণীয়। ডিসেম্বর মাসে পুরো সময়টা ছিল মন্দার মধ্যে। এখনো যদি মন্দার মধ্যেই থাকত, তাহলে আস্থার জায়গাটি শূন্যের কোটায় নেমে আসত।
মন্দার সময় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আরো সক্রিয়তা আশা করছেন অর্থনীতির এই অধ্যাপক। তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগাকরীরা পুঁজিবাজারে যৌক্তিক আচরণ করবে এটা সবাই প্রত্যাশা করে। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় তারা সেভাবে সক্রিয় থাকে না। তবে পুঁজিবাজারে এখন যে অবস্থা তাতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের এখনই বিনিয়োগ করা উচিত।
সিএসইর লেনদেনের চিত্র : চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৭২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩০৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২১৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৪টির এবং ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।